দেশে বন্যা ও দুর্যোগ বাড়ছে কেন?

in alokmoybengaldeshnews •  6 years ago 

bangladeshnews.png

বলা হয়ে থাকে, ২০১৭ সাল ছিল একটি ঐতিহাসিক দুর্যোগপূর্ণ বছর। কয়েক বছর থেকেই আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল ২০১৭ সালের দুর্যোগপূর্ণ ঘটনাবলি। এই ২০১৭ সালে বিশেষভাবে লক্ষণীয় ছিল বাংলাদেশের বন্যা। এই প্রতিবেদনে ২০১৭-১৮ সালে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের বন্যা ও অস্বাভাবিক শীতের কারণগুলো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাসহ জলবায়ুর পরিবর্তনের আলোকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রথমেই দিয়ে রাখা ভালো। ২০১৭-১৮ সাল ছিল একটি ‘লা নিনা’ (La Nina) বছর। যত রকম দুর্যোগ হয়েছে এই সময়ের মধ্যে তা অনেকটা ‘লা নিনা’র কারণে। ‘এল নিনো’ (El Nino) প্রতি ৩ থেকে ৭ বছরে একবার দেখা যায়। তা বিরাজমান থাকে প্রায় ১২ থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত। এ সময় সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রায় বিস্তর পার্থক্য হয় (প্রায় +০.৫ থেকে ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। তখন এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা এবং মাঝেমধ্যে পুরো পৃথিবীর আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। অন্যদিকে ‘লা নিনা’ হলো ‘এল নিনো’র সম্পূর্ণ বিপরীত এবং এখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা পার্থক্য হয় (প্রায় -০.৫ থেকে -৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া এই ‘এল নিনো’ ও ‘লা নিনা’র প্রতি খুবই সংবেদনশীল। এই ‘এল নিনো’র ফলে পৃথিবীর কোথাও কোথাও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম হয়, বৃষ্টি হয় কম, কখনো কখনো খরা হয়, ঝড়ের উৎপাত বেড়ে যায় (যেমন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে)। আবার পৃথিবীর কোথাও কোথাও এর উল্টোটাও হয়। অন্যদিকে, ‘লা নিনা’ হলে ঠিক ‘এল নিনোর’ উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় পৃথিবীজুড়ে | অর্থাৎ গরমের বদলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা, স্বল্প বৃষ্টির বদলে অতিবৃষ্টি ইত্যাদি দেখা দেয়। গত ৫০ বছরে ‘এল নিনো’ হয়েছিল ১৭ বার এবং ‘লা নিনা’ হয়েছিল ১২ বার। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে এ ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে বলে জলবায়ুবিজ্ঞানীরা বলছেন।

বাংলাদেশের বন্যার কারণ
প্রথমেই দেখা যাক ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বন্যার কারণ কী ছিল। যদিও বলা হয়, বাংলাদেশে এলাকাভেদে ২০১৭ সালের বন্যা ‘ভয়াবহ’ এবং ‘অতি ভয়াবহ’ পর্যায়ের ছিল। তবে আমার মতে, ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের তুলনায় ২০১৭ সালের বন্যাকে সারা দেশের জন্য ভয়াবহ বলা যাবে না। কারণ, গঙ্গার পানি নামতে নামতে বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্রের পানি মধ্যাঞ্চল পার করে নিচের দিকে ঠেলে দেয়; এ কারণে ১৯৮৮ বা ১৯৯৮-এর মতো বিস্তৃত-দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হয়নি। তবে পানিপ্রবাহ ও ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় বন্যাকে এলাকাভিত্তিক হিসাবে ভয়াবহ থেকে অতি ভয়াবহ বলা যায়। বিশেষ করে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ অতি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। এসব জেলায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও হয় অনেক। বন্যার পানির তোড়ে সড়ক, মহাসড়ক, বেড়িবাঁধ, রেললাইন বিধ্বস্ত হয়। একই মাত্রার বন্যা হয় এবার ভারত, নেপাল ও ভুটানে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.nhl.com/player/evgeny-kuznetsov-8475744