আজ সকালে ফাহিম বাবু
করছে না সেই কান্ড,
যা করে সে বুঝেছে ড্যাড
প্রাণ হীনা পাষাণ্ড।
বয়স তখন কতই বা আর
দেড়-এ কিংবা দুইয়ে,
বাপ জেগেছে তাই দেখে সে
থাকত না আর শুইয়ে।
বাবার মতই করত সবি
খেয়ে নিতো নাস্তা,
তাহার প্রতি প্রতিদিনই
থাকত অগাধ আস্থা।
গায়ে দিলে জামা কাপড়
পরলে পায়ে জুতা,
অফিসেতে সঙ্গে নিতে
ধরবে না আর ছুতা।
বাবার জুতা খুঁজে এনে
পায়ের কাছে দিয়ে,
বলত এবার অফিস চলো
আমায় কোলে নিয়ে।
শান্ত রবো পাথর সম
উঠব না যে দুলে,
অফিস রুমের কোনো কিছু
ভাঙ্গব নাকো ভুলে।
এমন কান্ডে হাসত সবাই
দেখে নানান বায়না,
রোজই বাবা অফিস গেলেও
তাকে নিয়ে যায়না।
কে শোনে আর শিশুর কথা
আবেগ মিথ্যে না যে,
কাঁদত ফাহিম বুক ফুলিয়ে
বাবা যেতো কাজে।
আজকে ফাহিম অনেক বড়
বলছে বাবার কাছে,
আমার প্রতি তোমার কী ড্যাড
কোনো মায়া আছে?
তুমি যখন অফিস যেতে
কাঁদতাম আমি একা,
সারাদিনে তোমার কভু
পেতাম না আর দেখা।
মধ্য রাতে আসতে ফিরে
ঢুকতে ঘরে ধীরে,
দেখতে কী এই বাবুটাকে
একটু খানি ফিরে।
বাবার বুকে ঝড় বয়ে যায়
কচি মুখের কথায়,
পৃথিবী তার ভরতে থাকে
অজানা শোক ব্যাথায়।
বাবারা যে এমনি হয়
ওরে মানিক সোনা,
তোর মাথার যে প্রতিটা চুল
আমার আছে গোনা।
সব কথা কী যায়রে বলা
মা জাতিদের মতো,
অশ্রু বিনা ব্যথায় কথায়
পুরুষ থতমত।
তোর ছবিটা এই চোখে না
আঁকা হৃদয় মাঝে,
অনুভবে পাই যে তোকে
দূরের প্রতি কাজে।
বুকের কথা বুকেই চেপে
বলল বাবা হেসে,
তুমি যখন চাকরি করবে
দেখব আমি এসে।
কেমন করে নিজ ছেলেকে
নিয়ে যাবে সঙ্গে,
সব বাবারা করছে এমন
জন্ম ভূমি বঙ্গে।