২০০৯-২০১৮ সন পর্যন্ত জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতায় সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের তথ্য চিত্র।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বাংলাদেশের নারীদের জন্যে নতুন যুগের সূচনা করে। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলার মায়েরা-মেয়েরা পত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কর্তৃক 'নারী পুর্ণবাসন বোর্ড গঠনের মাধ্যমে শুরু হয় মহিলাদের উন্নয়নের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী উন্নয়নে সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার রক্ষার্থে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মহিলাদের সার্বিক উন্নয়ন ও তাদের অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে একটি সাংগঠনিক কাঠামো তৈরী করার জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ প্রদান করেন। তথপ্রক্ষিতে একটি মহিলা সংস্থার রূপরেখা প্রণীত হয়, যা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা নামে ১৯৭৬ সালে ১৭ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৯১ সনের ৯নং আইন বলে জাতীয় মহিলা সংস্থা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলা ও ৫০টি উপজেলায় সংস্থার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া মানবাধিকার রক্ষার্থে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকে। নারীদের বিভিন্ন অধিকার রক্ষার্থে পারিবারিক, সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। নারীদের মানবাধিকার রক্ষায় তারা লিগ্যাল এইড প্রদান করে থাকে। তাছাড়া তদলের মাঝখানে তারা সমঝোতা আনয়নের জন্য মেডিটেশন করে থাকে। সমস্যাটির সমাধান না হলে তারা বিচার বিভাগের কাছে সবার সাথে প্রেরণ করে এবং নারী অধিকার রক্ষার্থে তারা। তাছাড়া নারীদের বিভিন্ন অ্যাডভোকেসি দিয়ে থাকে। সামাজিক নারী উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম কর্মসূচির বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কিছু কর্মসূচি বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকবে।
বাস্তবায়নধীন কর্মসূচিসমূহঃ
১। গার্মেন্টস কারখানায় নারী শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার কর্মসূচি (১৫টি সেন্টার):
কর্মসূচির মেয়াদ : জানুয়ারী ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২০।
প্রাক্কলিত ব্যয়: ৮৮৯.৪২ লক্ষ টাকা (জিওবি)।
বাস্তব লক্ষমাত্রা : ১৩৫০ জন শিশুকে দিবাকালীন সেবা প্রদান।
প্রকল্প এলাকা: ঢাকা-০২টি, গাজীপুর-০২টি, কালিগঞ্জ উপজেলা-০১টি, নারায়নগঞ্জ-০১টি, চট্টগ্রাম-০৩টি, সাভার উপজেলায়-০৩টি, মানিগঞ্জ-০১টি, কুমিল্লা-০১টি এবং রূপগঞ্জ-০১টি মোট ১৫টি সেন্টার।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য : গার্মেন্টস ও কারখানায় কর্মরত মহিলা শ্রমিকরা দুশ্চিন্তা ও অসুবিধা মুক্ত থেকে যাতে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারে সে জন্য তাদের কর্মস্থলের আশে পাশে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করে তাদের শিশুদের নিরাপদ পরিবেশে বিনামূল্যে সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে সকাল ৮.০০ রাত ৮.০০ পর্যন্ত নিরাপদ পরিবেশে সযত্নে সেবা প্রদান। এছাড়া শিশুদের মাঝে স্বদেশ প্রেম, নৈতিক শিক্ষা, শৃঙ্খলা, জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রাক শিক্ষা দানের মাধ্যমে বিদ্যালয়মুখী করণ করা হয়। কর্মসূচির ১ম পর্যায় (২০১৫-২০১৭) মোট ১০টি সেন্টারের মাধ্যমে ৬০০ জন
শিশুকে দিবাকালীন সেবা প্রদান করা হয়েছে। কর্মসূচির ২য় পর্যায়ে জানুয়ারী/২০১৮ থেকে ডিসেম্বর/২০২০ মেয়াদে ১৫টি সেন্টারে ৩ বছরে ১৩৫০ জন শিশুকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, অক্ষরজ্ঞান দান, অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা ও অন্যান্য বিনোদনমূলক কার্যক্রম গ্রহণসহ দিবাকালীন সেবা প্রদান করা হবে।
২। আমার ইনটারনেট আমার আয় কর্মসূচি:
কর্মসূচির মেয়াদ : জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০১৯।
প্রাক্কলিত ব্যয় : ৭২০:০০ কোটি টাকা। (জিওবি) প্রকল্প এলাকা : আটটি বিভাগের ৩০ টি জেলা।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য: সংস্থার আওতায় জেলা ভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষন প্রকল্প (৬৪ জেলা)-এর মাধ্যমে কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মোট ২৩০৪ জন নারীকে ৬মাস মেয়াদী ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং এর উপর প্রশিক্ষন প্রদানের মাধ্যমে আউটসোর্সার তৈরী করা।
কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ১০৮০ জন নারীকে প্রশক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
সমাপ্ত কর্মসূচি সমূহ :
১) বিশেষায়িত আধুনিক ট্রেড প্রশিক্ষণ কর্মসূচী (খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণ ও বিউটিফিকেশন এবং ক্যাটারিং)
কর্মসূচির মেয়াদ : নভেম্বর ২০১৩ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬। প্রাক্কলিত ব্যয় : ৮৪৩.৮৭ লক্ষ্য টাকা। (জিওবি)
প্রকল্প এলাকা : আটটি বিভাগের ৩০ টি জেলা।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য। শহরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের কর্মসূচির আওতায় ৪ মাস মেয়াদী দুটি ট্রেডে (খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণ ও বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ প্রদান। এই কর্মসূচির আওতায় সর্বমোট ২১২৩২ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
(২) মহিলাদের আইটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিঃ
কর্মসূচির মেয়াদ : ফেব্রুয়ারী ২০১১ থেকে জুন ২০১৩। প্রাক্কলিত ব্যয় : ৬২৮.৯৬ লক্ষ টাকা (জিওবি)।
প্রকল্প এলাকা : আটটি বিভাগের ৩৪ টি জেলা।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য শহরাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মহিলাদের কর্মসূচির আওতায় ৪ মাস মেয়াদী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান। কর্মসূচির মেয়াদে সর্বমোট ৬৭৬০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
(৩) বিশেষায়িত আধুনিক ট্রেড প্রশিক্ষণ (৫টি ট্রেড) কর্মসূচিঃ
কর্মসূচির মেয়াদ : ফেব্রুয়ারী ২০১১ থেকে জুন ২০১৩।
প্রাক্কলিত ব্যয় : ৬৫০.৬১ লক্ষ্য টাকা (জিওবি)। প্রকল্প এলাকা : আটটি বিভাগের ১৫ টি জেলা।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য: শহরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের কর্মসূচির আওতায় ৪ মাস মেয়াদী খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণ, বিউটিফিকেশন, হাউজ কিপিং ও ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, মোবাইল ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সার্ভিসিং এবং ইংরেজী ভাষা ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা। কর্মসূচির মেয়াদে সর্বমোট ৬৭৬০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
(৪) ক্যাটারিং (খাদ্য প্রস্তুতকরণ, সংরক্ষণ ও সার্ভিসিং) প্রশিক্ষণ, জেলা পর্যায় কর্মসূচিঃ
কর্মসূচির মেয়াদ : জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৭।
প্রাক্কলিত ব্যয় : ৬৬৯.৮৮ লক্ষ্য টাকা। (জিওবি) প্রকল্প এলাকা : আটটি বিভাগের ১৫ টি জেলা।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য : শহরাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মহিলাদের কর্মসূচির আওতায় ৪ মাস মেয়াদী খাদ্য প্রস্তুত করণ, সংরক্ষণ ও সার্ভিসিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
কর্মসূচির মেয়াদে সর্বমোট ১২২৪০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
Source: জাতীয় মহিলা সংস্থা