প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপরূপ লীলাভুমি সিলেটের বিছানাকান্দি ও রাতারগুল ঘুরে এলাম। ফেসবুকে সিলেটের রাতারগুল ও বিছানাকান্দির অনেক ছবি দেখি। মনে মনে ভাবি ছবিতে কতই সুন্দর লাগে, ঘুরে আসলে কতই না মজা হবে।
সব বন্ধুরাই চাকুরি বা যার যার কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সব সময়। যেহেতু ঈদের ছুটি চলছে তাই বন্ধুদের ফোন দিলাম এবং জানালাম এই মৌসুমেই ঘুরতে মজা হবে বিছানাকান্দি ও রাতারগুল।
এরই মধ্যে ২৮ বন্ধু রাজি হয়ে গেলাম। বন্ধুরা সবাই দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৯ ব্যাচের ছাত্র। আমাদের বন্ধুদের একটি সংগঠন আছে, নাম- “প্রতিভাস-৯৯”। সংগঠনের উদ্যোগেই দুটি টিআরেক্স গাড়ীতে করে রাত ১০টায় দেবিদ্বার থেকে যাত্রা করলাম।
সারারাত গাড়ীতে হৈ-হুল্লোড় করে কাটিয়েদিলাম। পরদিন সকাল ৫টায় পৌছালাম সিলেট শাহজালাল মাজারে। সেখানে ফজর নামাজ শেষে সকালে নাস্তাটা। নাস্তার পর রওয়ানা হলাম বিছানাকান্দির উদ্দেশ্যে। অপরিচিত এলাকা, রাস্তা ঘাটেরও অবস্থা ছিলনা ভালো, হাদারপাড় পৌছতেই সময় প্রায় দুপুর ঘনিয়ে এলো। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে বিছানাকান্দির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নৌকাতেও অনেক মজা করলাম বন্ধুরা।
দূর থেকে বিছানাকান্দি দেখলে মনে হয় আকাশ আর মেঘের সাথে পাহাড়ের দলগুলো মিশে আছে। যতোই কাছে যাই পাহাড়গুলোর ততোই আকাশ থেকে যেন দূরে যেতে থাকে। আর পাহাড়ের গায়ে বেপরোয়া সাদা মেঘের দলগুলো যেন আঠার মতো লেগে থাকে।
বিছানাকান্দির এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পাথর আর পাথর। মনে হল এই যেন পাথরের বিছানা। এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য, সারারাত না ঘুমিয়ে এই সৌন্দর্য দেখে নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানিতে পা ফেলে মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবশান্তি এখানে। শুনেছিলাম শুকনো মৌসুমে বিছানাকান্দির আসল সৌন্দর্য চোখে পড়েনা না। বর্ষাকালে পানির ঢল জায়গাটিকে মায়াময় বানিয়ে তোলে।
বিছনাকান্দিতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের মন অবশ্যই শান্তির পরশ দিবে। স্বচ্ছ শীতল পানির তলদেশে পাথরের পাশাপাশি নিজের শরীরের লোমও দেখা যাবে স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় জলপাথরের বিছানায় শুয়ে বসে ছবি তুলতে তুলতে আর গোসল করতে হয়তো সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলেছিলাম। বিছনাকান্দির সৌন্দর্য অসাধারণ।
বিকালের শুরুতেই রওয়ানা হলাম রাতারগুলের উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌছালাম সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই অবস্থায়। তারাহুাঁ করে নৌকা নিলাম, তখন প্রায় সন্ধ্যা! রাতারগুলে বনের ভিতর দিয়ে নৌকা করে আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো টাওয়ারের কাছে, এই টাওয়ারের উপর থেকে পুরো ফরেস্ট এলাকা দেখা যায়।
কিন্তু ততক্ষনে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় টাওয়ারে উঠতে পারলামনা। তবে রাতের অন্ধকারে বনের ভিতর দিয়ে আসা যাওয়ার সময় অনেক ভয় হয়েছে। পাখিসহ পোকা মাকড়ের ডাকা ডাকি এবং সামনে পিছনে নৌকার মাঝি ও ভ্রমণ পিপাসুদের চিৎকারে এক রোমাঞ্চকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ওই সময়টি জীবনে কোন দিন ভুলারমত নয়!
DONE target, @journalist-akter thanks for woriking with @saiduzzaman
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit