ভূতের গল্প - শেষ পর্ব। অশুভ আয়না।

in blog •  26 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভূতের গল্প শেয়ার করবো। আশা করি আপনারা সবাই এটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য জানাবেন।

1000001580.jpg

ছবির উৎস

তিনি আয়নায় নিজের পরিবর্তে সেই মেয়েটির মুখ দেখতেন। আতঙ্কিত হয়ে তিনি একবার আয়নাটি সরিয়ে ফেলতে চেষ্টা করেন, কিন্তু আয়না যেনো কোনো এক অদৃশ্য শক্তি দিয়ে সেখানে আটকিয়ে থাকে। সাবিত্রীর ভয় বাড়তে থাকে এবং তিনি বুঝতে পারলেন যে আয়নাটি সরানো সম্ভব নয়।

এরপর থেকে তার স্বপ্নেও অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করে। সাবিত্রী দেখলেন যে, তিনি সেই মেয়েটির সঙ্গে একটি পুরোনো, অন্ধকার ঘরে আটকে আছেন। মেয়েটি তাকে কিছু বলার চেষ্টা করছে, কিন্তু সাবিত্রী কিছুই বুঝতে পারছেন না। তিনি শুধু মেয়েটির চোখের গভীর বিষণ্ণতা অনুভব করতে পারছিলেন।

1000001581.jpg

ছবির উৎস

একদিন, সাবিত্রী একটি পুরোনো ডায়েরি পেলেন, যা তার দাদির ছিল। ডায়েরিটি খুলতেই একটি পাতায় লেখা ছিল, “আমাদের পরিবারে একটি অভিশাপ আছে, যা এই আয়নার মধ্যে আটকে আছে। এটি আমার দাদির দাদির অভিশাপ, যিনি এই আয়নার মাধ্যমে তার জীবনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট এবং হতাশা আটকে রেখেছেন। তিনি আয়নার মধ্যে নিজেকে বন্দী করেছেন, এবং এখন আমরা সবাই সেই অভিশাপের অংশ হয়ে গিয়েছি।"

সাবিত্রীর শরীর কাঁপতে লাগলো। ডায়েরি থেকে তিনি জানতে পারলেন যে তার দাদির দাদি একা এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। তার জীবনে প্রচুর কষ্ট ছিল, এবং সেই কষ্ট থেকেই তিনি আয়নার মধ্যে নিজেকে বন্দী করেছিলেন, যাতে তার কষ্ট অন্য কেউ অনুভব না করে। কিন্তু আয়নাটি তার কষ্টকে বন্দী করতে পারেনি, বরং সেই কষ্টের ছায়া সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।

এক রাতে, সাবিত্রী আবার আয়নার সামনে দাঁড়ালেন। এবার তিনি সেই মেয়েটির মুখোমুখি হলেন। মেয়েটি তার দিকে তাকিয়ে ছিল, এবং তার চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। সাবিত্রী বুঝতে পারলেন, এই আত্মা আসলে শান্তি চায়, মুক্তি চায়। সাবিত্রী দেবী চোখ বন্ধ করে প্রার্থনা করলেন এবং মেয়েটির আত্মার শান্তি কামনা করলেন। তখনই আয়নার মধ্যে থাকা মেয়েটির মুখটি ধীরে ধীরে মলিন হতে শুরু করল এবং একসময় সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল।

সেই রাতে, সাবিত্রী শান্তিতে ঘুমালেন। পরের দিন সকালে, তিনি দেখলেন আয়নাটি ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে। আয়নার টুকরোগুলোকে সরিয়ে রাখতে গিয়ে তিনি মনে করলেন, সেই মেয়েটির আত্মা হয়তো এখন মুক্তি পেয়েছে।

সাবিত্রী তার দাদির দাদির কষ্টের গল্পটি বুঝতে পারলেন এবং তার পরিবারকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করলেন। তবে, আয়নার স্মৃতি তার জীবনে চিরকাল রয়ে গেল, যা তাকে মনে করিয়ে দিত যে অতীতে লুকিয়ে থাকা কষ্টের ছায়া কখনও কখনও আমাদের জীবনে কিভাবে ফিরে আসতে পারে। (সমাপ্ত)

আজকে এই পর্যন্ত, পরের কোন পোস্টে দেখা হবে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সাবিত্রীর দাদির দাদি অবশেষে মুক্তি পেলো। ভালোই লাগলো গল্পটা পড়ে ভাইয়া।