প্রিয়, পাঠকগণ,
তার গলা শুনতে শুনতে ভাবল: 'নাস্তিক! বিদ্রোহী। এখানে এল কেন?'
ধীর শান্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে চলে রীবিন:
'পবিত্র স্থান কখনো শূন্য থাকে না। ভগবানের যেখানে আসন, সে জায়গাটা ক্ষতবিক্ষত। মানুষের হৃদয়ে ওটা ভারি ব্যথার জায়গা। ভগবানকে যদি বিলকুল বার করে দাও, তবে দগদগে ঘা হয়ে থাকবে ওখানটায়। কাজেই নতুন ধর্ম একটা বার করে নিতে হবে হে, পাভেল... ভগবানকে নতুন করে সৃষ্টি করতে হবে, সে ভগবান হবেন মানুষের বন্ধু।'
পাভেল বলে ওঠে, 'কেন আপনাদের তো যিশুই ছিলেন!'
'যিশুর আধ্যাত্মিক দৃঢ়তা ছিল না! এদিকে বললেন, আমার এই বাটিটাও চলে যাক-ওদিকে সীজারকে মেনে নিলেন। মানুষের ওপর মানুষের ক্ষমতা তো ভগবান মানতে পারেন না। তিনি নিজেই সর্বশক্তিমান। কাজেই এটা মানুষের আর একটা ভগবানের-তাঁর আত্মার এমন-ধারা ভাগাভাগি করবেন কী করে তিনি... কিন্তু যিশুখ্রিস্ট ব্যবসা, বিয়ে সবই স্বীকার করেছেন। ওদিকে ফল হয় না বলে ডুমুর গাছটাকে শাপ-মন্যি করলেন। আরে ফল হয় না, সে কি আর গাছটার দোষ? তেমনি মনও যদি ভালো না হয়, সে দোষ তার নয়। আমিই তো আর
আমার মনের মধ্যে মন্দের বীজ পুঁতে রাখতে যাইনি!'
ঘরে দুটি স্বরের অবিরত আওয়াজ। এই লড়াই করছে, পরের মুহূর্তেই আবার যেন মিলে যাচ্ছে কোনো উত্তেজিত খেলায়। পাভেল অস্থিরভাবে পায়চারি করতে থাকে। কাঠের মেঝেটা মচমচ করে ওঠে। ও যখন কথা বলে, চারদিকের আর কোনো কিছুর আওয়াজ শোনা যায় না। কিন্তু যেই শান্ত গভীর স্বর রীবিনের- পেন্ডুলামটার ক্ষীণ টিক টিক বাইরে পাঁচিলের গায়ে তুষারের মিহি চিড়বিড়ামি- টুকু অবধি শুনতে পায় মা।
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'দেখ,' রীবিন বলে, 'আমি আগুন-খোঁচানোর কাজ করি। আমি বলি: ভগবান হচ্ছেন জ্বলন্ত আগুন। এই কলজেটার মধ্যেই তাঁর আস্তানা। বলে না- শব্দ-ব্রহ্ম? আবার শব্দই আমাদের আত্মা...'
'না- আমাদের বিচারবুদ্ধি!' জোর দিয়ে বলে পাভেল।
'বেশ তো, ভায়া, তাই নাহয় হল। তাহলে ভগবান বুকেও আছেন, বিচার- বুদ্ধিতেও আছেন। কিন্তু গির্জায় নেই। গির্জা তো তাঁর মন্দির নয়-কবর...' মা ঘুমিয়ে পড়ে। রীবিন কখন যে গেল টের পায় না।
এরপর থেকে প্রায়ই আসে ও। পাভেলের বন্ধু-বান্ধবরা কেউ থাকলে এককোণে চুপ করে বসে থাকে। মাঝে মাঝে কথার পিঠে বলে, 'হ্যাঁ, ঠিক বলেছ!'
একদিন কোণে বসে বসে সকলের দিকে কালো দৃষ্টিতে চেয়ে গোমড়া-মুখে বলল:........
চলবে..........