ভ্রমণপিপাসুরা পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনাটা মনেপ্রাণে নিয়েই এগোয় এবং তা কার্যকরও করে। তবে পৃথিবীর এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যেখানে যাওয়ায় অসম্ভব কিংবা বারণ! চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো সম্পর্কে।
বোহেমিয়ান গ্রোভ, যুক্তরাষ্ট্র
স্যান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত এগারো বর্গ কিলোমিটারের পুরো একটি এলাকা পুরুষদের নিজস্ব ক্লাব বা সমিতি। আর এই ক্লাব বা সমিতিটিই বোহেমিয়ান ক্লাব নামে পরিচিত। সেই ১৮৯৯ সাল থেকে প্রতি বছর জুলাই মাসে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের গণ্যমান্য লোকেরা জড়ো হয় সেখানে। ১৯২৩ সাল থেকে রিপাবলিকান পার্টি থেকে সকল রাষ্ট্রপ্রধান (এবং ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান), রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, শিল্পী ও বিজ্ঞানীরা এই ক্লাবের সদস্য হয়েছিলেন এবং এখনও হয়ে যাচ্ছেন। প্রায় একশত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ক্লাবের কার্যকলাপ গোপন রাখা হচ্ছে। নিষিদ্ধ জায়গা এবং গোপন কার্যকলাপের এই ক্লাবকে ঘিরে রয়েছে নানা গুঞ্জন এবং অনুমান। কারো কারো মতে, বোহেমিয়ান ক্লাব ছিলো নতুন বৈশ্বিক সরকার। আবার কারো কারো মতে এই জায়গাটি ছিলো শয়তানের আস্তানা! বোহেমিয়ান গ্রোভে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি নেই।
এইচএএআরপি, যুক্তরাষ্ট্র
১৯৯৭ সালে এই অ্যান্টেনা (বেতার) ক্ষেত্রটি স্থাপন করা হয়েছে আলাস্কার এক জনশূন্য উপত্যকায়। এই পুরো স্থাপনাটি ৩২ একর (১৩ হেক্টর) জায়গার উপর স্থাপিত। এইচএএআরপি (হাই ফ্রিকুয়েন্সি অ্যাক্টিভ অরোরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম) ছিলো ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদদের একটি লক্ষ্য। তাদের দাবি অনুযায়ী, এই লক্ষ্যবস্তুটি জলবায়ুতে বৈসাদৃশ্য আনার সম্ভাবনা রাখতে, উপগ্রহ বন্ধ করতে এবং মানুষের মনের উপর দখল আনতে পারে। তারা এই বিষয়েও একেবারে নিশ্চিত ছিলো যে, এই কার্যক্রমটি ভূমিকম্প, খরা, হারিকেন, বন্যা ও যেকোনো ধরনের মহামারী ঘটাতে সক্ষম।
মেযগোরিয়ে, রাশিয়া
এই শহরটি রাশিয়ার খুব কাছাকাছি শহরগুলোর মধ্যে একটি। সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী এই শহরটি রিপাবলিক অব ব্যাশকোরট্যাসটেনে স্থাপিত। এই শহরটি সম্পর্কে এমনও শোনা যায় যে, সেখানে মাটির নিচে একটি রাজধানী রয়েছে। রাশিয়ার অন্যান্য শহরের চাইতে এটি একেবারেই ভিন্ন। কারণ সেখানে নেই কোনো গবেষণা কেন্দ্র, সামরিক সুযোগ-সুবিধা, পারমাণবিক অস্ত্র, পারমাণবিক জ্বালানি শক্তি ইত্যাদি। এই বিষয়টি এখনো পর্যন্ত অজানা এবং অস্পষ্ট রয়েই গিয়েছে যে, মেযগোরিয়েতে মূলত কী করা হতো বা এর পেছনের উদ্দেশ্যটাই বা কী। রাশিয়ার সরকার দ্বারা এখানে যেকোনো জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ! অনেকেরই বিশ্বাস, সেখানে রয়েছে কর্তব্যরত কর্মী, যারা পারমাণবিক শক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কাজ করে থাকেন।
করোন্সটাড, রাশিয়া
সেন্ট পিটার্সবার্গ রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয় এই শহরটি। সেখানে থাকা পুরাতন দুর্গগুলোর (যেগুলো প্রতিরক্ষা নির্মাণ হিসেবে রয়েছে) কারণে প্রচুর পর্যটকের আনাগোনা দেখা যায়। প্রতিটি দুর্গেরই রয়েছে নিজস্ব বীরত্ব গাঁথা ইতিহাস এবং মহিমান্বিত নাম। যেমন- ক্রোনশলট, সিটাডেল, প্রিন্স মেনশিকভ এবং আরও অনেক। বর্তমানে এই বন্দরটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হলেও বেশিরভাগ দুর্গই বন্ধ অবস্থায় থাকে। কারণ সেগুলো নিরাপদ নয়।
মাউন্ট অ্যাথোস, গ্রিক মেসিডোনিয়া
মহিমান্বিত এই পর্বতটি ২০টি বিস্ময়কর ও অদ্ভুত আশ্রমের আশ্রয়স্থল। কিন্তু অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য দেখার অনুমতি সবার নেই! কোনো নারী, এমনকি স্ত্রী লিঙ্গের কোনো পশুরও সেখানে যাওয়া বারণ। আর কোনো নারী যদি এই আইন ভঙ্গ করে সেখানে যাওয়ার সাহসটি দেখিয়েই ফেলে, তবে অবশ্যই তার জন্য জেলে কয়েদি হিসেবে স্থান ধার্য।
যে ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারে রাখা হয়েছে কোকা-কোলার গোপন রেসিপি, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
শোনা যায়, শুধুমাত্র দু’জন ব্যক্তিই এই কিংবদন্তী পানীয়টির গোপন রেসিপি সম্পর্কে জানেন। আর তারা দুজনই সবসময়ই ভিন্ন ভিন্ন উড়োজাহাজে যাতায়াত করেন। রেসিপিটি রাখা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন সিন্দুকে।
দ্য ডানাকিল ডেজার্ট, ইথিওপিয়া
ইথিওপিয়ার সীমান্তে আঞ্চলিক যুদ্ধ যেন থামতেই চায় না! আর তাই জায়গাটি বেশ অনন্য হওয়া সত্ত্বেও পর্যটকেরা সেখানে যেতে চায় না। বিজ্ঞানীদের মতে, এই জায়গাটি হোমিনিডদের বংশগত আশ্রয়স্থল। এটাই সেই জায়গা যেখানে হোমিনিড প্রজাতির একমাত্র অবশিষ্ট স্ত্রীলোক অস্ত্রালোপিথেকাস আফারেনসিস (একেবারে প্রথমদিককার মানব প্রজাতি, যারা সর্বাধিক সময়ের জন্য বেঁচে ছিলো এবং সর্বাধিক পরিচিত ছিলো) লুসিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো।
মোটুয়া প্রদেশ, চীন, তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য এই জায়গাটি একটি পবিত্রভূমি। সবচাইতে অবাক করার মতো বিষয় হলো, সেখানে যাওয়ার জন্য কোনো সড়ক বা রাস্তাঘাট নেই। কেউ যদি সেখানে গিয়ে শতাব্দীর জ্ঞান অর্জন করতে চায়, তবে সেই বন্য পাহাড়-পর্বতের পাড় ধরে পায়ে হেঁটে যেতে হবে তাকে। সেখানে পাতালের ওপর ৬৫৫ ফুট লম্বা একটি নড়বড়ে, দুর্বল সেতু রয়েছে। ঠিক যেমনটি রয়েছে ইন্ডিয়ানা জোন্স সিনেমায়।
ওয়েমইয়াকোন, রাশিয়া
পৃথিবীর শীতলতম জায়গা এটি। এ জায়গার উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পুরোটাই সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। সাইবেরিয়ার উত্তর-পূর্ব দিকের ছোট্ট এই গ্রামটির গড় তাপমাত্রা থাকে -৫২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সেখানকার আবহাওয়া এতটাই শীতল যে, সেখানে ফুটন্ত গরম পানিও সেকেন্ডের মধ্যেই বরফ পানি হয়ে যায়। ‘ওয়েমইয়াকোন’ শব্দটির অর্থ হলো, যে পানি কখনোই বরফে রূপান্তরিত হয় না। আর আশ্চর্যের বিষয়, এই নামের জায়গাটির তাপমাত্রাই নেমে -৭১ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্তও দাঁড়ায়। জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৫০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। সেখানে রয়েছে ৫০০ জন মানুষের বসবাস। তারা মূলত হরিণ, ঘোড়ার মাংস এবং হরিণের দুধ খেয়ে বেঁচে থাকে। কারণ এই আবহাওয়ায় কৃষিজাত পণ্য চাষ সম্ভব নয়। তবে ভেবে অবাক লাগে, এই নিদারুণ আবহাওয়ায় সেখানকার মানুষ বসবাস করে কীভাবে!
জাভারি ট্রাইব রিজার্ভেশন, ব্রাজিল
ব্রাজিল ও পেরুর মধ্যবর্তী সীমান্তে অনুসন্ধানকারীরা এমন একটি উপজাতির সন্ধান পেয়েছে, যারা সেই সভ্যতা থেকে একেবারেই আলাদা। সেখানে থাকা ১৫০ জন ভারতীয়দেরকে দাসদের বংশধর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাইরের বিশ্বকে তারা এড়িয়ে চলে এবং প্রকৃতির সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখেই করে জীবনযাপন। এই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বেশ উদ্বিগ্ন থাকে। তাই সে জায়গাটিতে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
দ্য পিটক্যাইরন আইল্যান্ড, ব্রিটিশ উপকূল অঞ্চল
সেখানে বসবাসকারী ৫০ জন মানুষের সবাই পুরো পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিছিন্নভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের বেশিরভাগই বিশিষ্ট জাহাজ, এইচএমএস বাউন্টি বা এইচএম আর্মড ভেসেল বাউন্টি (বোটানিক্যাল মিশনের জন্য রাজকীয় নৌবাহিনীর কেনা বাণিজ্যিক জাহাজ) এর পরিচালনায় নিযুক্ত কর্মীবৃন্দের বংশধর। এর সদস্যরা জায়গাটি এতটাই পছন্দ করেছিলো যে, তারা সেখানেই থেকে যেতে চেয়েছে। আর তাই তারা জাহাজটি পুড়িয়ে ফেলে। পিটক্যাইরনে যাওয়ার সুনিশ্চিত কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই নিউজিল্যান্ড থেকেই শুধুমাত্র লক্ষ্যহীন জাহাজ সেখানে গিয়ে পৌঁছায়।
সিনসিনাটি সাবওয়ে, ওহায়ো, যুক্তরাষ্ট্র
সিনসিনাটি সাবওয়ে হলো যুক্তরাষ্ট্রের পরিত্যাক্ত সব সুড়ঙ্গপথ ও স্টেশনের বৃহত্তম সেট। বিংশ শতাব্দীতে এটি তৈরি করা হলেও বর্ধিত খরচের জন্য এটি স্থগিত রাখা হয়েছিলো। তাই শেষমেশ এটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় থেকে যায়। নির্মাণাধীন অবস্থায় সাবওয়েতে বেশ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে বহু সংখ্যক কর্মী মারাত্মকভাবে আহত হন এবং মৃত্যুবরণ করেন। সেখান থেকে তাদের লাশ সরিয়ে ফেলা হলেও বিশ্বাস করা হয় যে, তাদের আত্মা এখন অবধি ফাঁকা হলগুলোতে ঘোরাফেরা করে! সেখানে সাধারণত পর্যটকরা যেতে পারেন। তবে সবসময় না, শুধুমাত্র প্রতি বছরের মে মাসে।
এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী ?
yes good your post
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
maximum are in USA...ha ha ha
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ji ha
ami aktu deri kore felechi sorry
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
informative article
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Good information
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Everyone will get careful to read this post. this post is very informative and nice also.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাওয়ার প্রশ্নই আসেনা
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit