আমের উপকারিতা

in busy •  7 years ago 

image

মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্ক বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’ বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন ও ক্যালরি।”

তিনি আরও জানান, উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে সরাসরি ভিটামিন পাওয়া যায় না, বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ‘র কাজ করে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি তৈরি করে। আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।

image

ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে। কাঁচাআমে ৯০ মাইক্রোগ্রাম এবং পাকাআমে ৮,৩০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে।

আম কর্মশক্তি যোগায়। এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচাআম ৪৪ কিলোক্যালোরি ও পাকাআমে ১০ ক্যালরি শক্তি প্রদান করে।

আরও আছে আয়রন যা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। কাঁচাআমে ৫.৪ ও পাকাআমে ১.৩ মি.গ্রা আয়রন পাওয়া যায়।

ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে। কাঁচাআমে ১০ মি.গ্রা ও পাকাআমে ১৬ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচাআমে ৬৩ মি.গ্রা ও পাকাআমে ৪১ মি.গ্রা ভিটামিন সি পাওয়া যায় বলে জানান ফারাহ মাসুদা।

আমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। কাঁচাআমে ০.০৪ মি.গ্রা ও পাকাআমে ০.১ মি.গ্রা ভিটামিন বি-১ পাওয়া যায়। কাঁচাআমে ০.০১ মি.গ্রা ও পাকাআমে ০.০৭ মি.গ্রা বি-২ রয়েছে।

বিভিন্ন খনিজ উপাদানের উৎসও আম। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা ও পাকা আমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে।

আমে কিছু পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচাআমে ০.৭ গ্রাম প্রোটিন ও ০.২ গ্রাম ফ্যাট থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে।

আমে রয়েছে শ্বেতসার। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচাআমে ১০.১ গ্রাম শ্বেতসার ও প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ২০.০০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।

আমে বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্তস্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে। এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে।

এছাড়াও ক্যারোটিন, আইসো-কেরোটিন, এস্ট্রাগ্যালিন, ফিসেটিন, গ্যালিক এসিড ইত্যাদি এনজাইম ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
image
আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

আমের ভিটামিন সি ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, যা ব্রণের ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। তাছাড়া আম ত্বক উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে।

**“পাকাআম আঁশসহ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়”, বললেন ফারাহ মাসুদা। **

পাকাআম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ঘামের কারণে শরীর থেকে সোডিয়াম বের হয়ে যায়। কাঁচাআম খেয়ে শরীরের সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

কাঁচাআমের পেকটিন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের চিকিত্সায় অত্যন্ত উপকারী।
কাঁচাআমের ভিটামিন সি রক্তনালীসমূহের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং নতুন রক্ত কনিকা গঠনে সাহায্য করে। এতে করে যক্ষা, রক্তস্বল্পতা ও কলেরা রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

গরমের কারণে হওয়া স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাসে কাঁচাআম ও জিরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

আমের ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিন মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আম রূপ চর্চায় সহায়তা করে। রোদের পোড়াভাব কমাতে, ত্বকের দাগ দূর করতে ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে আম সাহায্য করে।

মাসুদা বলেন, “রসালো ফল আম দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন মিষ্টি। তাই এর প্রতি বরাবরই মানুষের আকর্ষণ বেশি। তবে ডায়াবেটিস রোগীর আম খাওয়ায় সতর্ক থাকা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তবে অতিরিক্ত আম খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর।”


Vote for vote

Please,
Give me Upvote and comments your post link.
I will also do the same too.

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক ভালো লাগলো

Congratulations @as-abir! You have completed the following achievement on the Steem blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

Award for the number of upvotes

Click on the badge to view your Board of Honor.
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

You can upvote this notification to help all Steemit users. Learn why here!