২০০৮ সালের কথা । হরলিক্স এর “টলার,স্টংগার, শার্পার” বিজ্ঞাপন চরম তুঙ্গে । একি হরলিক্স এর বিজ্ঞাপন প্রচার করছিল নেপালী এক চ্যানেল। নেপালী সেই চ্যানেল ব্রডকাস্ট হচ্ছিল লন্ডনের কিছু নেপালী পাড়ায়। লন্ডনের এক এডভোকেট তো সেই বিজ্ঞাপন দেখে আকাশ থেকে পড়লেন। কারন যুক্তরাজ্যে “Sleeping aid pill" হিসেবে খাওয়ানো হয় হরলিক্স মল্টেড দুধকে । সেটা কিভাবে টলার স্ট্রংগার শার্পার করে সেটা জানতে আইনী নোটিশ পাঠিয়ে দেন। মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রচার করায় হরলিক্সের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এএসএ।
তারা তখন মস্করা করেই বলেছিল- “দক্ষিন এশিয়ানরাই এই সব জিনিস খাবার হিসেবে খাবে”। তাই হচ্ছে আজকাল আমাদের দেশে ।
আমাদের দৈনিক খাবারের আইডিয়াল মেনু কে “RDA” বলে । আর ব্যালেন্সড ডায়েট হইতে যা যা লাগে তার খুব সামান্যই আছে এইসব খাবারে । আসল কথা হলো- হরলিক্স অথবা কমপ্লান এর মত খাবার US FDA এপ্রুভড না। তবুও সবাই খাচ্ছে মুড়ির মত। আর বিজ্ঞাপনের প্যাচে পড়ে – "সব পুষ্টি গুনের আশায় ভাত মাছ বাদ দিয়া হরলিক্স আর কমপ্লান নিয়া পইড়া থাকে মায়েরা"।
বিজ্ঞাপনের আন্টির ডায়লগটা শুনলেই মেজাজ গরম হয়- "যত বার দুধ, ততবার হরলিক্স".
“বর্নভিটা” নামক আরেক দুধ কোম্পানী দাবী করে – তাদের দুধে দৈনিক চাহিদার ৪০% ভাগ প্রোটিন চাহিদা পুরণ করে। অথচ তাদেরি ফাইন প্রিন্টে লেখা আছে বর্নভিটার দুধে খুব সামান্যই প্রোটিন আছে। নিজেরাই নিজেদের কথার বিরোধী।
হরলিক্স এবং কমপ্লান দুইটা কোম্পানীই দাবী করে তাদের দুধে সুষম পরিমানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। কিন্তু কমপ্লানে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে ১৮ গ্রাম, ৬২ গ্রাম, ১১ গ্রাম, ৮০০ মিগ্রা ও ৭৮০ মিগ্রা । আর সেখানে হরলিক্সে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে – ১১ গ্রাম, ১৪ গ্রাম, ২ গ্রাম , ৭৪১ মিগ্রা ও ২৮০ মিগ্রা । এদের তুলনায় বর্নভিটা ও বুস্টে এদের পরিমান অনেক কম থাকে। তাহলে এখন বলুন কোনটা আসলে সুষম। দামের হিসাবে কিন্তু সবাই একই সমান প্রায়।
সুতরাং আপনার শিশুর পুষ্টি চাহিদা ডায়েটিশিয়ানের কাছে গিয়ে করুন। বিজ্ঞাপনে মুগ্ধ হয়ে ভুল বুঝে না।
জুনিয়র হরলিক্সে কী পরিমাণ ডিএইচএ আছে, তা পরীক্ষা করে দেখেন BCSIR এর বিজ্ঞানীরা। প্রতিবেদনটি বলছে-" ইলিশের প্রতি ৪০ গ্রামে ১০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। যার মধ্যে ডিএইচএ ছিল ৫৭ মিলি গ্রাম।একই পরিমাণ ‘নিউ জুনিয়র হরলিক্স উইথ ডিএইচএ’ তে শূন্য দশমিক ৫৫ গ্রাম তেল পাওয়া গেলেও কোনো ডিএইচএ পাননি গবেষকরা"।
এখানে উল্লেখ্য - ডিএইচএ সমৃদ্ধ খাবার খেলে মস্তিষ্ক, ত্বক এবং চোখের রেটিনার গঠন সুদৃঢ় হয়।” DHA- DecosaHexanoic Acid.. ডিএইচএ একটি ওমেগা-৩ প্রাইমারি অ্যামিনো এসিড।
যাই হোক- জীবনের প্রথম ৬ মাস মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নাই। কিন্তু বছরের পর বছর যদি বাচ্চা কে সাপ্লিমেন্টারি ফুড না দিয়ে দুধের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেন , তাহলে “মিল্ক ইঞ্জুরি” নামক রোগের শিকার হতে পারে আপনার বাচ্চা। সেই বাচ্চা ফুলাফাপা থাকবে (edematous) প্রোটিনের অভাবে। কিন্তু ভিতর দিয়া সব ধরনের নিউট্রিশনাল ডেফিসিয়েন্সিতে ভুগবে। তখন কই যাইবো গিয়া "টলার স্ট্রংগার শার্পার"।
তখন বাচ্চাকে বলবে- "ফ্যাটার, উইকিয়ার, লুজার" (Fatter, Weaker, Looser).
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
good post
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
thank you represent our bangladesh and bangla post 👍
supported by @nmb82ig & you got 4 upVote free
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit