মহা বিশ্বের ঠিক যেখানে আমরা বাস করি, এটি মূলত একটি স্থলভাগ। আর এই স্থল ভাগে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে আছে হাজারও রুপ সেীন্দর্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ। আর এই স্থল ভাগের বাহিরে আরও একটি বিশাল এলাকা রয়েছে পৃথিবীর জলভাগে। আর সেখানে মানুষ বসবাস না করলেও বাস করে এক বিচিত্র প্রানী ।
বিস্তারিত জানতে: http://bit.ly/2YdI2RM
সাগর তলে যে সকল জীব ও প্রানী বাস করে কোরাল তাদের মধ্যে অন্যতম। সমুদ্র্রের তলদেশে সেীন্দর্যের কথা আসলে, সবার আগে আসে কোরালের কথা। বর্নিল এই জীবগুলো সাগর রত্ন নামেই পরিচিত। কোরাল এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বর্ণিল এ প্রাণীগুলো সমাজবদ্ধ ভাবে বাস করে এবং আবার মরণেও তারা থাকে একসঙ্গে।
মৃত কোরালের দেহ স্তূপাকারে জমা হয়ে নানা আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। আর এদের মধ্যে অন্যতম হল কোরাল রিফ। কোরালরিফ মূলত, মৃত কোরালের একটি আকৃতি।
পাথুরে কোরাল দিয়ে কোরাল রিফ তৈরি হয়। কোরাল রিফ সাধারণত গঠিত হয় ট্রপিক্যাল সাগরে।
ট্রপিক্যাল সাগরের অ -গভীর অঞ্চলে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। ২২ থেকে ২৮ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা কোরাল রিফ গঠিত হয়।
এই কারণে এরা ১১ মিটার হতে ৪০ মিটার গভীর সাগর অঞ্চলে এদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে।
কোরাল ব্যাঙ্ক:
সাগরের গভীরে আরেক ধরনের কোরাল জন্মে। যেটিকে বলা হয় কোরাল ব্যাঙ্ক। সাগরের ৬০ মিটার হতে ২০০ মিটার গভীর অঞ্চলে এরা বাস করে। ৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এরা দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। এ ধরনের কোরালের মৃতদেহ রিফ গঠন না করে ব্যাঙ্ক গঠন করে। নরওয়ে থেকে কেপ ভার্দের কূল বরাবর অন্চলে এদের সবচেয়ে বেশী দেখা যায়।
এছাড়াও নাইজার নদীর বদ্বীপ অঞ্চল, মেক্সিকো উপসাগর ও নিউজিল্যান্ডের ক্যাম্পবেল মালভূমি এলাকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়।
বর্তমানে সাগরগুলোতে আরও এক ধরনের কোরাল জন্মে। এরা আরও গভীর আর শীতল পরিবেশের জন্য উপযোগী। এন্টার্কটিকা, পাতাগোনিয়া ও ফকল্যান্ড দ্বীপে এদের সবচেয়ে বেশী দেখা যায়।
যেখানের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সে. থেকে ৬ ডিগ্রি সে. এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে সে সব এলাকায় এদের বসবাস বেশী দেখতে পাওয়া যায়।
কোরালের প্রধান খাদ্য জুপ্লাঙ্কটন। পর্যাপ্ত পরিমাণ জুপ্লাঙ্কটন থাকে বলে গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠন সম্ভব হয়েছে। গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠনে সাগরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। কোরাল রিফ সাধারণত বেশি গভীরতায় গঠিত হয় না। এর কারন হল সাগরের গভীরতা বৃদ্ধি পেলে আলোর স্থায়িত্ব কমে যায়। সেজন্য কোরাল রিফ বেশী গভীরতায় তৈরি হয় না।
সাগরের সৌন্দর্যের জন্য কোরালের ভূমিকা অপরিসীম। আজকাল ধীরে ধীরে সাগরে কোরাল হ্রাস পাওয়ার কারণে সাগরের সৌন্দর্যও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। তাই যে কোনও উপায়ে সাগরের তলদেশের কোরালকে রক্ষা করতে হবে। নতুবা সাগরের তলদেশের অপূর্ব সৌন্দর্য একদিন হারিয়ে যাবে চিরতরে। আর সেটি হবে প্রকৃতির জন্য মারাত্মক এক ক্ষতি।
আরও জানতে