আজ থেকে শুরু হয়েছে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যাকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্রগ্রামের জহির উদ্দিন স্টেডিয়ামে। প্রথম দিন শেষে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন আফগান শিবির। মাত্র ৫ উইকেটের বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন ২৭১ রান। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আফগান দলপতি রশিদ খান। শুরুতেই আফগান শিবিরে আঘাত আনেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ১৯ রান ও ব্যাক্তিগত ৯ রানেই তাইজুল ইসলামের শিকার হয় প্যাভিলিয়নে ফেরত যেতে হয় আফগান অপেনার ইহসানাউল্লাহ জান্নাতকে। এতেই রেকর্ডের খাতায় আবারও নাম লিখিয়ে নেন তাইজুল ইসলাম। তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ও দ্রুততম শততম টেস্ট উইকেট শিকারী এখন তিনিই। তারপর আফগান ব্যাটসম্যানদের বেশ শক্তপোক্তভাবেই চেপে ধরে বাংলাদেশ স্পিনাররা। প্রথম ইনিংসের ২৪ তম ওভারে আবারো আফগান শিবিরে আঘাত আনেন তাইজুল ইসলাম। ব্যাক্তিগত ২১ রানে ও দলীয় ৪৮ রানেই তাইজুল ইসলামের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের তালুবন্দি হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আরেক অপেনার ইব্রাহিম জর্ডান। চাপে পড়ে উইকেটের একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন রহমত শাহ ও হাসমাতুল্লাহ শাহিদি। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেন নি হাসমাতুল্লাহ শাহিদি। প্রথম সেশনের শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে বল তুলে দেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান এবং নিজের ৪র্থ বলেই বাজিমাত করেন মাহদুল্লাহ। ব্যাক্তিগত ১৪ রানেই সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হয়ে ফিরতে হয়েছিল শাহিদিকে।
প্রথম সেশনে বাংলাদেশ চোখ রাঙ্গালেও দ্বিতীয় সেশনে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশি স্পিনাররা। পুরো সেশনই দুই প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যান রহমত শাহ ও আসগর আফগান। দ্বিতীয় সেশনে আসগর আফগান ও রহমত শাহর সামনে দাড়াতেই পারেনি কোনো বোলার। একটিমাত্র ব্রেক থ্রু এর আশায় ৭ জন বোলারকে ব্যাবহার করেও সফল হতে পারেন নি সাকিব আল হাসান। নিজেও সুবিধা করতে পারেন নি। হয়তবা তিনিও প্রয়োজন অনুভব করছিলেন একজন জেনুইন পেস বোলারের। কিন্তু করার কিছুই ছিলনা, স্পিনবান্ধব উইকেট হওয়ার কারণে দুদলই নিয়েছেন চারজন করে স্পিন বোলার।
দ্বিতীয় সেশন শেষে তৃতীয় সেশনের৷ শুরুতেই বাজিমাত করেন অফ ব্রেক বোলার নাঈম হাসান। সদ্য সেঞ্চুরি হাকানো রহমত শাহকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। প্যাভিলিয়নে ফেরার পূর্বে রহমত শাহ এর স্কোর ছিল ১০২ রান। এটিই তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ও আফগানিস্তানের হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। একই ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নাবী কে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে তৃতীয় সেশনের শুরুটা বাংলাদেশের অনূকুলে নিয়ে আসেন নাঈম হাসান। এরপর অবশ্য বাংলাদেশ আর কোনো উইকেট তুলতে পারেনি। আসগর আফগান ও আসফার জাজাই বড় সংগ্রাহের ইঙ্গিত দিয়ে এখনো অপরাজিতই রয়ে গেলেন। আসগর আফগান ৮৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন ও ৩৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন জাজাই।
প্রথম দিন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন বাংলাদেশের তৃতীয় শততম উইকেট শিকারী তাইজুল হাসান। প্রথম দিনের পারফরম্যান্স আফগানিস্তানের হয়ে কথা বললেও তা মানতে নারাজ তাইজুল ইসলাম। তিনি মনে করেন বাংদেশই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। আফগান স্পিনারদের বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা মোকাবিলা খুব ভালভাবেই করতে পারবে বলে বিশ্বাস রাখেন তিনি। তিনি বলেন, "আজ উইকেটের যে আচরণ দেখলাম, ওদের স্পিনারদের খেলা কঠিন হবেনা। যদি টি-টোয়েন্টি হতো তাহলে ওরা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বলতাম। এটা টেস্ট, ওদের বোলারদের ধৈর্য্য কেমন থাকবে এটাও দেখার বিষয়। "