যখন তোমার সাথে আমার
প্রথম দেখা হয়েছিলো,
সেদিন আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
তোমার কি বেশি ভালো লাগে?
সমুদ্র না পাহাড়?
তুমি বলেছিলে সমুদ্র, আমি বলেছিলাম পাহাড়।
তুমি ভালোবাসতে উশৃংখল, প্রাণবন্ত সমুদ্রকে
আমি উপভোগ করতাম পাহাড়ের নিস্তব্ধতাকে, স্নিগ্ধতাকে।
ছোটোবেলায় বাবার কোলে
ঘুমিয়ে থাকার সময়
আমি যেমন আনন্দ অনুভব করতাম,
পাহাড়কে বুকে জড়িয়ে ধরে আমি যেন সেইরূপ
উচ্ছ্বসিত হতাম।
পাহাড়ের গা বেয়ে উপরে উঠা,
পাহাড়ের গায়ে জলপ্রপাতের স্পর্শে
নিজেকে সিক্ত করা।
পাহাড়ে বৃষ্টির অপরূপ রূপ উপভোগ করা,
পাহাড়ি নদীর জলে স্নান করা,
পাহাড়ের গায়ে, জঙ্গলে সারাদিন ঘুরে বেড়ানো,
তারপর পথ হারিয়ে ফেলা।
পাহাড়ের বুকে এভাবেই নিজেকে
নতুনভাবে আবিষ্কার করতাম।
সেইসব অনুভূতি কি
ভাষায় প্রকাশ করা যায়?
পাহাড় আমাদেরকে কত নদী উপহার দিয়েছে?
কত সভ্যতার সৃষ্টি করেছে?
আমরা কি কেউ তার হিসেব রেখেছি?
তুমিও সেইরূপ সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্যকে
উপভোগ করে পুলকিত হতে।
আমাদের দুজনের মধ্যে এত অমিল থাকা স্বত্বেও
দুজনের দু’জনকে ভালোলাগতে শুরু হল,
দুজনে দু’জনকে ভালোবাসতে
শুরু করলাম।
তারপর বিয়ের পর দশ বছর পেরিয়ে গেলো।
এখন আমাদের মধ্যে মানসিক দুরত্বটা
অনেকটা কমে গিয়েছে।
ধীরে ধীরে এখন আমার সমুদ্রকে
ভালো লাগতে শুরু করেছে।
পাহাড়ের গগনচুম্বী রূপ যেমন আমাকে
মোহিত করেছে,
সমুদ্রও তেমনি তার অপরূপ
বিশালতায় আমাকে আপন করে নিয়েছে।
ঠিক তেমনই তুমি এখন
পাহাড়কে ভালোবাসতে শুরু করেছো।
ভালোবাসার ক্ষমতা অনেক।
পাহাড় এবং সমুদ্রকে এক করে দিতে পারে।
ভালোবাসা বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করে।
এই প্রকৃতির প্রত্যেকটি কণার মধ্যে রয়েছে
সেই ভালোবাসা।
সেই ভালোবাসা দিয়েই হয়তো ঈশ্বর
এই অপরূপ সৌন্দর্যকে সৃষ্টি করেছেন।
তার কতটুকুই বা আমরা জানি?
তাই আমরা ঠিক করেছি
দুচোখ ভরে সেই অপরূপ সৌন্দর্যকে
উপভোগ করবো।
কারণ সৌন্দর্যই হলো সত্য।