অতৃ্প্ত পরিবার
.
রাতুলরা পুরান ঢাকার একটা অত্যন্ত পুরাতন গলির একটা
বাসা নতুন ভাড়া নিয়েছে।এখনো আশে পাশের কারো
সাথেই পরিচয় হয়নি।বাসা সবকিছু ঠিক ঠাক করার পরে
রাতুল এখন কিছুটা অবসরে আছে।তার আবার রাত জাগার
অভ্যাস।একটু রাত হলেই ছাদে চলে যায়।তো এই বাড়িতে
উঠার পরে প্রথম যেদিন ছাদে উঠল তখন প্রায় ১২টা
বাজে।চারপাশে তাকাতে যেয়ে দেখে পাশের
বিল্ডিংএর ছাদে একটা মেয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে
আছে।পাশের বিল্ডিংটা এতো কাছে ছিলো যে একটু
চেষ্টা করলেই ঐ ছাদে চলে যাওয়া যাবে।যাই
হোক,এতো রাতে রাতুল একা একটা মেয়েকে ছাদে
দেখে একটু অবাকই হলো।তবু সাহস করে যেয়ে
ডাকদিল,'এই যে শুনছেন।'মেয়েটা কোনো সাড়া দিলো
না।বরং যেভাবে দাড়িয়েছিল,সেভাবেই থাকলো।এবার
রাতুল আরেকটু জোরে ডাকলো।এবার মেয়েটি তাকালো।
চোখের দৃষ্টি কেমন যেন শূণ্য,মৃত মানুষের মতো।
রাতুল বললো,'আপু,আমরা এই বিল্ডিংএ নতুন আসছি।নাম
রাতুল।আপনার নাম?'
মেয়েটি আস্তে করে জবাব দিলো,'নিধি'।
রাতুল,'ও,তো আপু আপনি এতো রাতে ছাদে আসছেন
কেনো একা একা?'
নিধি,'প্রতিদিনই আসি।ভালো লাগে'।
এভাবে একটু একটু করে সেদিন অনেকক্ষণ গল্প করলো
রাতুল।তারপর বাসায় চলে আসলো।
কিণ্তু বাসায় আসার পরেই তার একটা অদ্ভুত অনুভূতি হতে
লাগলো।তার মনে হতে লাগলো কেউ মনে হয় তাকে
দেখছে।ও যখন খাটের পাশে দাড়াতো তখন ওর মনে হতো
কেউ খাটের নিচ থেকে তাকে দেখছে।এক্ষুণি হয়তো
তার পা ধরে টেনে তাকে খাটের নিচে নিয়ে যাবে।
আবার ওয়াশরুমে গেলে মনে হতো ভেণ্টিলেটর দিয়ে
কেউ তাকে দেখছে।এভাবেই তার দিন যেতে লাগলো।
আর এদিকে প্রতি রাতেই ছাদে উঠে নিধির সাথে গল্প
চলতে থাকলো।
এভাবে চলতে থাকলো রাতুলের দিন।রাতুল একসময়
খেয়াল করলো নিধি কখনো হাসে না।ব্যপারটা ওর কাছে
অদ্ভুত লাগলো ভাবলো হয়তোবা এটা ওর স্বভাব।তো
হঠাৎ একদিন নিধি বললো,'মার্চের ১৫তারিখ আমার
জন্মদিন।তুমি এসো।'
রাতুল বললো,'কখন যাবো?'
নিধি বললো,'রাত ১০টার দিকে'।শুনে রাতুল একটু অবাকই
হলো।এতো রাতে কেউ দাওয়াত দেয় নাকি।কিণ্তু কিছু
বললো না।সেদিন ছিলো ১২ তারিখ।পরের ২দিন রাতুল
ছাদে যেয়ে দেখলো নিধি আসেনি।ভাবলো হয়তোবা
ব্যস্ত।১৪ তারিখ রাতে রাতুল একটা ভয়ানক স্বপ্ন
দেখলো।দেখলো যে ও একটা বদ্ধ ঘরে রয়েছে।সেখানে
একটা ফ্যান ঝুলছে।ফ্যানের তিনটা পাখার সাথে তিনটা
বিকৃত লাশ ঝুলছে।আর সেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে ওর
গায়ে পড়ছে।প্রচণ্ড আতংকে রাতুলের ঘুম ভেংগে গেল।
কিণ্তু ব্যপারটাকে শুধু স্বপ্ন ভেবে ও উড়িয়ে দিলো।
পরদিন রাতে নিধির জন্মদিনে যাওয়ার জন্য বের হলো।
যেহেতু পাশেই বিল্ডিং তাই একেবারে ১০টার দিকেই
বের হলো।ওদের বাসায় যেয়ে দরজায় কড়া নাড়ার সাথে
সাথে নিধি দরজা খুললো।ঘরে ঢুকে একটু অবাক হলো
রাতুল।কারণ কোনো মেহমানই নেই।নিধি রাতুলকে বসতে
দিয়ে ভিতরে চলে গেল।একটু পরে ওর বাবা মাকে নিয়ে
আসলো।নিধির বাবা মাকে দেখে রাতুল একটু চমকে
গেলো।কারণ তিনজনের দৃষ্টি একরকম।
আর কারো মুখেই হাসি নেই।রাতুল বুঝে গেল যে ও কোনো
বিপদে পড়তে যাচ্ছে।সাথে সাথে কোনো কথা বলে
দরজার দিকে পা বাড়িয়ে দিলো।কিণ্তু ততক্ষণে ওরা
তিনজন ওকে ঘিরে ধরেছে।তখন রাতুল সমানে জোরে
জোরে দোয়া পড়তে লাগলো।দোয়া শুনে ওরা তিনজন
চিৎকার করতে থাকলো আর ওদের গায়ের মাংসগুলো
খসে যেতে থাকলো।এরপর রাতুল কোনোমতে দৌড়ে
বাহিরে এসে অজ্ঞান হয়ে গেল।পরেরদিন নিজেকে
আবিষ্কার করলো হাসপাতালের বেডে।এলাকার
লোকেরা ওকে উদ্ধার করে ওখানে ভর্তি করিয়েছে।সুস্থ
হয়ে উঠলে ও ঐ বাড়িটাতে যেয়ে দেখে তালা ঝুলছে।
পরে আশেপাশের লোকের কাছে শুনলো ১২বছর আগে
এখানে একটা পরিবার ছিলো।সেই ১২ বছর আগে ১৫ই
মার্চ কারা যেন এসে এদেরকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে
ঝুলিয়ে রাখে।তারপর থেকে প্রতি বছর ১৫ই মার্চ এখানে
একটা লাশ পাওয়া যায়।রাতুলই ছিলো একমাত্র ব্যক্তি
যে বেঁচে ফিরেছিলো।এরপর রাতুল ঐ এলাকা ছেড়ে অন্য
এলাকায় চলে গিয়েছিলো।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
valo lagse.. good job bro !
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Onekk shundor hoise...
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
horrible experience.but reality is the main issue.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Nice post bro
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
nice post.thanks for sharing.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit