১৬৬৩ টাকার বাশযুক্ত একটি করুণ মেজবানি সন্ধ্যা
ছবিতে যে আইটেমগুলো দেখছেন, এগুলো আজ রাতে মেজবানি খানা হিসেবে গুডবয়ের মতো চুপচাপ খেয়ে এসেছি। জ্বি, নবাব চাটগাঁর ভাষ্যমতে ইহাই অথেনটিক মেজবানি খানা
অর্ডার দিলাম লইট্যা ফ্রাই (মেজবানি আইটেমের বাইরে) সবজি, চনার ডাল, নলার ঝোল, ঝুরা গোশত (এটাও মেজবানি আইটেমের বাইরে)মেজবানি গোশত, কালাভুনা আর সাদাভাত। লাস্টে লেমোনেড।
আসলো নিচের খাবার। চনার ডাল নাকি নাই, বদলে মশুরির ডাল। নলার ঝোল করা হয় নাই আজ। অর্ডার নেয়ার সময় জানালেই হতো সেটা। ঝুরা গোশত আসতে লেট হবে, গরু এখন খামারে বড় হবে। এরপর কসাইখানায় গিয়ে সাইজ হয়ে রান্না হয়ে টেবিলে আসবে। তাই ছবিতে সেটা নাই।
শুরু থেকে শুরু করি। বাচ্চা পোলাপানের ইয়ের সাইজের জিনিসগুলোর নাম লইট্যা ফ্রাই। চিটাগাং এ ১০০ টাকায় বাটি উপচায়া পড়ে লইট্যা ফ্রাই। এখানে ২৫০++ টাকায় ছোটছোট ৪ পিস বাচ্চা পোলাপানের ইয়ের সাইজের জিনিস।
সব্জি যেটা খেলাম মেজবানি সবজি মনে করে, আমার মহল্লার হোটেলের সকালের নাস্তায় এর চাইতে ভালো সব্জি বেচে পরোটার সাথে। ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম, এই সব্জি কি মেজবানিতে দ্যায়?
জ্বি স্যার অবশ্যই।
মশকরা করেন ভাই? নাকি আমার চেহারা কামলার মতো দেইখা আমারে কামলা ভাবতাসেন?
জ্বিনা স্যার। এরকম হবে ক্যান?
ভাই, এই সাদা সব্জি হাসপাতালের রোগীরে দ্যায়, মেজবানিতে দেয়া সব্জি খাইসেন কোনোদিন?
ওয়েটার চুপ।
চনার ডালের মজা নিতে উবারে ভাড়া দিয়া আসছি। মশুরের ডালের বাটি নিয়া বাড়িতে মা পেছন পেছন ঘুরে বেড়ায়। আপাতত সেটাই গিলতে হচ্ছে, স্বাদ এভারেজ। নলার ঝোল অর্ডার নেয়ার পর জানালো, আজ রান্না হয়নি।
কালাভুনা এভারেজ স্বাদের, মেজবানি গোশত খেলাম নাকি টক টক ফ্লেভারের আচার দেয়া গোশত খেলাম তা বুঝে উঠতে সময় লাগলো। সবার লাস্টে ঝুরা গোশত। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের পর গোশত ১ সপ্তাহ জ্বাল দিয়ে মা ঝুরা গোশত রান্না করে। এই নিম্নমান এবং নিম্ন স্বাদের ঝুরা গোশত আমার মায়ের সামনে নিলে ঝাড়ু দিয়ে পিটাবে কনফার্ম।
সবার লাস্টে লেমোনেড। এটা মোটামুটি চলনসই। তাও বরফ দেয়া নাই, আলাদা করে মনে করিয়ে দিতে হইসে।
সব মিলিয়ে ১৬৬৩ টাকা বিল দিয়ে সাথের জনরে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই আপনের মতামত কি?
একদমই ভালো হয়নি, এক কথায় উত্তর।
মেজবানির নামে গলা কাটা দামে যেই অখাদ্য খাইলাম, মোঘল আমল হলে এতক্ষণে বাবুর্চিরে নির্ঘাত খোজা করা হইতো বাদশাহ নামদারের হুকুমে।
খোজা চিনেন? সোজা বাংলায় খাশি করা। ধারালো কঞ্চি বাশ দিয়ে অণ্ডকোষ কেটে ফেলে দিয়ে রসুন ভরে সেলাই করে দেয়া হয়। বাদশাহ এর বেগমদের পাহারার দায়িত্বে থাকা তাগড়া নওজোয়ান আফ্রিকান হাবশিদের খোজা করা হতো, বেগমদের সেফটি ইস্যু বলে কথা।
ইতিহাস বলে, বাদশাহ এর মন মতো রান্না না হওয়ায় ক্ষেত্রবিশেষে বাবুর্চিরা এইটাইপ টুকটাক শাস্তি পেয়েছে।
আফসোস আজ বাদশাহি যুগ আর নাই, আমিও স্রেফ ছাপোষা এক গরিব কামলা, তাই অখাদ্য খাইয়ে ১৬৬৩ টাকা উশুল করে নিলো।
উবারের যাওয়া আসার ভাড়া আর নাই বা ধরি
You Got 50!! vote from @bdbot
Thanks for Using bdbot voting service. Our 100 vote service coming soon so please stay with us.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
We recommended this post here and here.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit