ক্ষমার ক্ষমতা অপরিসীম।

in forgiveness •  7 years ago 

image
source

header# headerক্ষমার ক্ষমতা অপরিসীম

মহানবী (সাঃ) একদিন মসজিদে বসে আছেন। সাহাবীরা তাঁকে ঘিরে আছেন। এমন সময় মহানবী (সাঃ) বললেন, “এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।” একথা শুনে উপস্থিত সব সাহাবী অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রইলেন মসজিদের প্রবেশ মুখে। সবার মধ্যে জল্পনা কল্পনা চলছে, হয়তো হজরত আবু বকর (রাঃ) বা হজরত উমর (রাঃ) অথবা এমন কেউ আসছেন যাঁদের বেহেশতের সুসংবাদ আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন একজন সাধারণ আনসার সাহাবী। এমনকি তাঁর নাম পরিচয় পর্যন্ত জানা ছিল না অধিকাংশের।

এরপরের দিনেও সাহাবীরা মসজিদে বসে আছেন নবীজি (সাঃ) কে ঘিরে। নবীজি (সাঃ) আবার বললেন, “এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।” সেদিনও মসজিদে প্রবেশ করলেন সেই সাহাবী।

তৃতীয় দিন নবীজি (সাঃ) সাহাবীদের লক্ষ্য করে আবার ঘোষণা দিলেন, “এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।” এবং সাহাবীরা দেখলেন সেই অতি সাধারণ সাহাবী মসজিদে প্রবেশ করলেন।

পরপর তিনদিন এই ঘটনা ঘটার পর, সাহাবীদের মধ্যে কৌতূহল হলো সেই সাধারণ সাহাবী সম্পর্কে জানার জন্য। তিনি কেন অন্যদের চেয়ে আলাদা তা জানতে হবে। বিখ্যাত সাহাবী হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর আল আ’স (রাঃ) ভাবলেন, এই সাহাবীর বিশেষত্ব কী তা জানতে হলে তাকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তিনি সেই সাহাবীর কাছে গিয়ে বললেন, “আমার বাবার সাথে আমার মনোমালিন্য হয়েছে, তোমার বাড়িতে কি আমাকে তিন দিনের জন্য থাকতে দেবে?’’

সেই সাহাবী রাজী হলেন। হজরত আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলেন, খুঁজতে থাকলেন কী এমন আমল তিনি করেন। সারা দিন তেমন কোন কিছু চোখে পড়ল না। তিনি ভাবলেন হয়তো তিনি রাত জেগে ইবাদত করেন। না, রাতের নামায পড়ে তো তিনি ঘুমাতে চলে গেলেন। উঠলেন সেই ফজর পড়তে।

পরের দুটি দিনও এভাবে কেটে গেল। হজরত আবদুল্লাহ (রাঃ) কোন বিশেষ আমল বা আচরণ আবিষ্কার করতে পারলেন না যা অন্যদের চেয়ে আলাদা। তাই তিনি সরাসরি সেই সাহাবীকে বললেন, “ দেখ আমার বাবার সাথে আমার কোন মনোমালিন্য হয় নি, আমি তোমাকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য তোমার বাড়িতে ছিলাম। কারণ নবীজি (সাঃ) বলেছেন যে তুমি জান্নাতি। আমাকে বল তুমি আলাদা কী এমন আমল করো?’’

সেই সাহাবী বললেন, “ তুমি আমাকে যেমন দেখেছ আমি তেমনই, আলাদা কিছু তো আমার মনে পড়ছে না”।

এ কথা শুনে হজরত আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতে থাকলেন। এমন সময় সেই সাহাবী হজরত আবদুল্লাহ (রাঃ) কে ডেকে বললেন, ‘আমার একটা অভ্যাসের কথা তোমায় বলা হয়নি –রোজ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দেই, যারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে, বা আমার প্রতি অন্যায় করেছে। তাদের প্রতি কোন ক্ষোভ আমার অন্তরে আমি পুষে রাখি না”। হজরত আবদুল্লাহ (রাঃ) একথা শুনে বললেন, “এ জন্যই তুমি আলাদা, এ জন্যই তুমি জান্নাতি”। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন না। (বুখারী ও মুসলিম)

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.facebook.com/786summaameen

Hello, as a member of @steemdunk you have received a free courtesy boost! Steemdunk is an automated curation platform that is easy to use and built for the community. Join us at https://steemdunk.xyz

Upvote this comment to support the bot and increase your future rewards!