ভাইয়ের মৃত্যু

in funny •  2 months ago 

image.png

দুই ভাই সাজু ও জুয়েল । তাদের দুজনকে একসাথে দেখলে মনে হয় দুই বন্ধু । দুজনে একসাথে খায় একসাথে ঘুমায় এক সাথে গল্প করে ইত্যাদি ইত্যাদি । বয়সের দিকথেকে সাজু বড় এবং জুয়েল ছোট । প্রতি দিন সকাল বেলা ওদের বাবা জুয়েল কে ১০০ টাকা দেয় সাজু দেয়না দেয় আমার মঝে মধ্যে ৫০ টাকা । ভালো খাবার ভালো জামা সবই জুয়েলের সাজুকে দেওয়া হয় সব খারাপ । এ ভাবে ভলোই চলছিল আস্তে আস্তে ওড়া বড় হল এখন সাজু নবম শ্রেনীতে আর জুয়েল হল পঞ্চম শ্রেনীতে । জুয়েলের একটু মেয়ের প্রতি আসস্তি বেশি ছিল । আর সাজুর পড়ালেখার প্রতি একটু বেশি আসক্তি ছিল । ওড়া সময়ের পরিক্রমায় আর একটু বড় হল এখন সাজু এস.এস.সি পাস করে একদশ শ্রেনীতে আর জুয়েল সপ্তম শ্রেনী । জুয়েল হল উচ্চবিলাসী বন্ধু বান্ধব মিলে সব সময় মজা আড্ডায় মেতে থাকে আর সাজু পড়ালেখায় । এখানে আপনাদের একটা কথা বলে রাখা ভ।লো সাজু জুয়েল বন্ধুর মত হলেও ওড়া কিন্তু সবসময় একসাথে থাকে কারণ হল সাজু তার মায়ের সাথে থাকে এবং জুয়েল থাকে তার বাবার সাথে । ওদের বাবা মা আবার আলাদ থাকে । সাজু তার মায়ের সাথে তার দাদা বাড়িতে থাকে এদের আয়ের উৎস হল হালকা কিছু জমি চাষাবত করে সাজু এবং মা তা দিতে কোন রকমে খেয়ে পড়ে এবং সাজুর পড়া লেখার খরচ চালায় । অন্য দিকে জুয়েলদের আয়ের উৎস হল ব্যবসা ওদের বাবার মোটামুটি একটা ব্যবসা আছে তা দিয়ে ওদের বাবা ভালোই আয় করে তা শুধু জুয়েল এবং তাদের মধ্যেই সিমা বধ্য থাকে এখানে আপনাদের বলে রাখা ভালো এখানে কিন্তু জুয়েলের বাবা সাথে জুয়েলের একজন মাও আছে অর্থ্যাৎ বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী । এবার আপনারা নিশ্চয় বুজতে পেরেছেন আমি কি বোঝাতে চেয়েছি । যাহোক, এভাবে দিন যেতে যেতে সাজু এইস, এস,সি পাস করলো এবং এইস, এস, সি পাস করার পর সাজু একটা ছোট কম্পানীতে কম্পিটার অপারেটর পদে চাকরী পায় । এবার সাজুদের কষ্টের একটু অবশান হয় এখন সাজু চাকরীর পাশাপাশি পড়ালেখা চালায় এবং সাজুর মা চাষাবাদ করে মা এবং সাজু কিছু কিছু টাকা সঞ্চয় করে ভবিষৎতের জন্য
অন্য দিকে জুয়েল একদশ শ্রেনী অধ্যয়ন করছে । সাজু জুয়ের প্রায় সময় একসাথে ঘুরতে যায় । জুয়েল দেখে আর ভাবে আর মনে মনে কষ্ট পায় সাজু ভাইয়ার জীবন কত সুন্দর ছোট চাকরী মা নিয়ে অনেক ভালোই আছে ভাইয়া । আর আমার হয়েছে যত জ্বালা মা বাবা প্রতি দিন ঝগড়া করে । টাকা আছে কিন্তু মনে শান্তি নাই ।
১৬ ডিসেম্বর সাজুর অফিস এবং জুয়েলের স্কুল বন্ধ থাকায় তারা দুজনে সাড়া দিন অনেক ঘুড়াঘুড়ি করে এবং রাতে বাড়িতে ফেরে যদিও সাজুর সাথে বাবার দেখা হয়না অবশ্য দেখা করার জন্য কোন দরকার হয় না দেখা হবে কি করে সাজুতো বাবার বাড়িতে যাইনা সেদিন রাত হওয়ায় এবং প্রচন্ড শীত হওয়ায় জুয়েলের সাথে বাবার বাড়িতে আসে ।
বাবাঃ কিরে তোরা তো এখন অনেক বড় হয়েগেছিস চাকরী করিস মা নিয়ে তো ভালোই আছ ।
সাজুঃ এটা আমার কেমন কথা, আল্লাহর রহমাতে ভালোই আছি
বাবাঃ তো কি জন্য এই বাড়িতে আসছিস আমাকে দেখতে না কি আমকে টাকা দেওয়ার জন্য ।
জুয়েলঃ বাবা তুমি এ কেমন কথা বল ভাইয়া আসছে আমার সাথে বেড়াতে আর তোমাকে টাকা
দিবে মানে ভাইয়া কত টাকাই পায় যা পায় ভাইয়া আর বড় মা কোন রকমে চলে বরং তো
তোমার ভাইয়াদের খোজ খবর দেওয়া উচিত তা তো তুমি করনা ।
বাবাঃ এ তুই চুপ কর বেয়াদবের সাথে থাইকা বেয়াদব হইছো ।
জুয়েলঃ বাবা তুমি কাকে বেয়াদব বল ভাইয়াকে নিয়ে গর্বব করা উচিত ।
বাবাঃ এ তুই (জুয়েল) এখান থেকে চলে যা (জুয়েল চলে যায়) ।
বাবাঃ তুই (সাজু) আর কোন দিন আমার বাড়িতে আসবিনা তোর কারণে আমার ছেলের সাথে
আমি জন্দ করতে পারবো না । আর শোন প্রত্যেক মাসে বেতন পাওয়ার পর আমাকে ৩০০০
টাকা পাঠাবি ।
সাজুঃ কি জন্য আমি টাকা পাঠাবো । বাবা হয়ে কি করছো মা, আমার দায়িত্ব তো নেওনি কোন দিন
তো আমরা আসিনি বলিনী খাবার দেয়, বলিনী টাকা দেয় ।
বাবাঃ আমার বাবার বাড়িতে তোরা আছিস এজন্য টাকা দিবি ।
সাজু আজকে এ কথা বললা আমার মায়েকে বিয়ে করছো কোন দায়িত্ব নেওনি আমার দায়িত্ব নেওনি
বাবাঃ আমি কিছু অন্যায় করিনী তোর মাকে তো আমি আমার বাবার বাড়িতে থাকতেদিছি
সাজুঃ আমার মাকে তুমি থাকতে দেয়নি, চাচা, দাদা, দাদী সবাই থাকতে অনুরোধ করতে তোমার সংসার
বাছানোর জন্য ।
বাবাঃ ঠিক আছে তুমি যখন টাকা দিবিনা আমি তোকে সন্তান হিসাবে স্বীকার করিনা ।
সাজুঃ তুমি স্বীকার করলে কী আর না করলে কি ।
বাবাঃ তোকে এক মাস সময় দিলাম আমার বাবার ভিটে মাটি ছেরে চলে যাবি । এখন আমার
বাড়ি থেকে চলে যায়(রাত ১২ টা) আর এখানে কোন দিন আসবিনা তোর মত ছেলে
আমার দরকার নেই আমার ছেলে আছে আমার ছেলেই আমাকে দেখবো আমি মরলেও তুই
আসবিনা আমাকে দেখতে তোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই ।
সাজুঃ এই বাড়ি ঘর ছেরে আমি কই যাব ।
বাবাঃ তুই কই যাবি তোর ব্যাপার আমি যানিনা ।
সাজুঃ কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে গেল ।

এত কিছু হওয়ার পর সাজু মাকে কিছুই যানায়না । শুধু মনে মনে ভাবে কই যাবে বাড়ি কই পাবে । আর কিছুই ভালো লাগেনা । সাজু ঠিকমত খায়না ঘুমায়না । দিন রাত শুধু ভাবে আলাদা যদি একটা বাড়ি করতে যাই তাহলে তো অনেক টাকা লাগবো এত টাকা কই পামু সাজু মনে মনে ভাবে আর বলে আল্লাহ নিশ্চয় একটা ব্যবস্তা করবে ।
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে ঘুমিয়ে পরে ভোর ৪:১২ মিনিট হঠাৎ একটা ফোন এল সাজু তখনো ঘুমায় আবার একটা ফোন এল সাজু দেখলো এটা জুয়েলের বন্ধুর ফোন নাম্বার রিসিভ করতেই বলে উঠল তোর ভাই আর নাই, নাই কি হল জুয়েল মারা গেছ এ কথা শোনার পর সাজু কেদেই অস্থির । কি আর করা নিয়তীর লেখা । সাজু মা লাশ দেখতে গেল গোসল হল, দাফন হল । পরদিন সাজু মা গেছে দোয়া করতে ।
বাবাঃ জুয়েল তো মাড়াগেল তুমি আয় আমার সাথে এ বাড়িতে থাক তোর সব দায়িত্ব আমার
সাজুঃ মনে মনে ভাবে হায়রে মানুষ যখন আমার দায়িত্ব নেওয়ার কথা নেয়নি আর এখন । সাজু
কিছু বলেনা । বাকি গল্প পরের পোষ্টে ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!