আনা ফ্রাঙ্ক থেকে ফিলিস্তিনের শিশু | Stop Killing Children

in general-writing •  5 months ago 

সেবা প্রকাশনির অন্যান্য বই গুলোর পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন কিশোর ক্লাসিক বই গুলোও ভীষণ প্রিয় ছিল টিনএইজে। একবার অনেক গুলো ওয়েস্টার্ন কিশোর ক্লাসিক বই উপহার পাই তারমধ্যে একটি ছিল 'আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি ', বইটি। আনা ফ্রাঙ্কের জন্ম জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট আম মাইন শহরে, কিন্তু তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। জাতীয়তায় ১৯৪১ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন একজন জার্মান। নাৎসি জার্মানির সেমিটিক বিদ্বেষী নীতির কারণে তিনি তার জার্মান নাগরিকত্ব হারান। আনা তার ১৩তম জন্মদিনে পাওয়া ডায়েরিতে আত্মগোপন অবস্থায় নেদারল্যান্ডসের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালীন তার অভিজ্ঞতাগুলোকে লিখে রেখেছিলেন।

৪ আগস্ট ১৯৪৪ সালের সকালে তারা জার্মান নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে ধরা পড়েন এবং তাদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আনা ফ্রাঙ্ক ও তার বোন মার্গোট ফ্রাঙ্ককে বার্গেন-বেলজান কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ১৯৪৫ সালে টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে তারা দুজনেই মৃত্যুবরণ করেন। যুদ্ধ শেষে তার পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকা ব্যক্তি বাবা অটো ফ্রাঙ্ক আমস্টারডামে ফিরে আসেন, এবং আনার দিনলিপিটি (ডায়েরি) খুঁজে বের করেন। তার প্রচেষ্টাতেই দিনলিপিটি ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয় এবং এটি ছিল ওয়াল্ড বেস্টসেলার বই গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।

বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে তখন কিছু বুঝতাম না। কেন হিটলার এতো এতো ইহুদীকে হত্যা করলো তার পেছনের গল্পও জানতাম না। তখন কিশোরী আনার জন্য ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলাম এবং কেঁদেও ছিলাম। ধর্ম যাইহোক স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিটি মানুষের আছে। তার ধর্ম কী সেটা সেদিন মূখ্য ছিল না, এখনও নেই। ধর্ম মানবতা শেখায় শান্তির বার্তা দেয়। ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষদের ওপর ইসরায়েলের নির্মম গণহত্যা বর্বরতার নামান্তর।

নিউজফিডে যখন ফিলিস্তিনের বোমা হামলায় নিহত শিশুদের লাশ গুলো ভেসে বেড়ায় ভীষণ খারাপ লাগে। পৃথিবী এগিয়ে চলেছে আধুনিক হয়েছে সভ্য হয়েছে কিন্তু বর্বরতায় মানুষ আজও আদিমকালে বসবাস করছে। আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি পড়ে বিশ্ববাসীর কাছে যেমন খারাপ লেগেছিল আঘাত হেনেছিলে অন্তরে। ফিলিস্তিনের এই নিরপরাধ মানুষ ও শিশুদের প্রতিও যে অন্যায় হচ্ছে সেটাও কোন অংশে কম নয় বরং আরও বেশি খারাপ লাগার কথা কিন্তু তাঁরা বেশিরভাগই চুপ । কারণ, পরবর্তীতে নুরেমবাগ ট্রাইব্যুনাল তৈরী করে হিটলারের নাৎসী বাহিনীর প্রধান যারা ছিল তাদের ফাঁসি দিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, ইসরায়েলের সাথে বরং হচ্ছে উল্টো তাদের প্রমোট করা হচ্ছে । ফিলিস্তিন ১৯৪৮ সালের পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশটির জনগণ একের পর এক বর্বর হামলার শিকার হচ্ছে। ২০২৪ সাথে এসে যা চুড়ান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে।

ছবির উৎস

মানুষের জন্য দেশ, দেশের জন্য মানুষ নয়। তেমনই মানুষের জন্য ধর্ম, আর ধর্ম শেখায় শান্তি, সম্প্রীতি এবং ভ্রাতৃত্ব। ফিলিস্তিন কিংবা ইসরায়েল তাদের ধর্ম যাইহোক অন্তত মানবিকতা দিক থেকে হলেও এই যুদ্ধ বিগ্রহ বন্ধ করা উচিত। যুদ্ধ বিগ্রহ কখনোই শান্তি নিয়ে আসে না।

এই লেখাটি প্রথম ২০২৩ সালে নভেম্বর মাসে ফেসবুকে প্রকাশ করেছিলাম। এখনো গুরুত্বপূর্ণ বিধায় এইখানে আবার পোস্ট করলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.