নিয়ন্ত্রনে রাখুন আপনার রাগ

in good-karma •  7 years ago 

) উলটো সংখ্যা গুনুনঃ
সাধারনত আমরা বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর সময় এই উপায়টা অবলম্বন করতে বলি। কিন্তু আপনি কি জানেন, যখন আপনি খুব রেগে আছেন ১০০ থেকে ১পর্যন্ত উলটো করে গুণলে আপনার রাগ কমে যাবে অনেকটাই! বিশ্বাস না হলে একবার চেষ্টা করেই দেখুন না!

২) রাগ ঝেড়ে ফেলুনঃ
অনেক সময় আমরা আমাদের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই কিছু সময়ের জন্য। কিন্তু সেটা ভেতরে চাপা থেকেই যায়। এবং এই অবদমিত রাগ দেহ ও মনের উপর প্রভাব ফেলে। তাই আপনি যখন উত্তেজিত অবস্থা পেরিয়ে কিছুটা শান্ত বোধ করছেন, তখন রাগটা ঝেরে ফেলুন শান্তভাবে। যার উপর, যে বিষয় নিয়ে রাগ করেছেন তাকে বুঝিয়ে বলুন। তবে খেয়াল রাখবেন সেই ব্যক্তির উপর নিয়ন্ত্রন আরোপ বা তাকে কোনভাবে মানসিক আঘাত করে নয়।

৩) ব্যায়াম করুনঃ
যখন কোন কারণে খুব রাগ লাগছে তখন সেই স্থান ত্যাগ করুন ও চেষ্টা করুন একটু হেঁটে, দৌড়ে বা প্রিয় কোন দৈহিক ব্যায়াম ৫-১০ মিনিটের জন্য করার। এটা আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে সচলতা বাড়াবে এবং আপনাকে রিলাক্স করতে সাহায্য করবে।

৪) কিছু বলার আগে ভাবুনঃ
সাধারনত রাগের মাথায় আমরা সামনের মানুষটিকে এমন অনেক কিছু বলে ফেলি যার জন্য পরে আমাদের আফসোস করতে হয়। অথবা অযথাই সামনের মানুষটিকে আমরা এমন কিছু বলে আঘাত করি যা আসলে সত্য নয় বলে আমরাও জানি। তাই রাগের মাথায় কিছু বলার আগে একবার ভাবুন। কারন বলে ফেলা কথাটি আপনি আর চাইলেও ফিরিয়ে নিতে পারবেন না। কিছু বলার আগে ৫ মিনিট সময় নিন। নিজের চিন্তা ভাবনাগুলোকে জড়ো করুন এবং শেষবারের জন্য নিজেকে প্রশ্ন করুন আসলেই আপনি কথাটা বলবেন কিনা!

৫) সম্ভাব্য সমাধানগুলো ভাবুনঃ
রাগ আসলে আমাদের ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি ছাড়া আর কোন কিছুরই মুখোমুখি করে না। রাগের মাথায় নেয়া সিদ্ধান্তগুলোও অনেক সময় পরে আমাদের ভোগায়। তাই ভাবুন চিৎকার চেঁচামেচির বদলে সম্ভাব্য সমাধান কী হতে পারে। যেমন, আপনার স্বামী প্রায়ই রাতে খাবার সময় ফেরেন না। এর কারন হতে পারে তিনি অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং চাইলেও পারছেন না। এক্ষেত্রে আপনার রাগ করা স্বাভাবিক। কিন্তু তার সাথে চিৎকার করে কি সমাধান সম্ভব? বরং সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে সপ্তাহের কয়েকটা দিন আপনি একা খাবার অভ্যাস করুন, আর বাকি কয়েক দিন তার সাথে এবং সপ্তাহে একদিন বিশেষভাবে বাইরে কোথাও দুজন একান্তে ডিনার করতে পারেন। এভাবে সমাধান চিন্তা করুন। কাজে দেবে।

৬) কথাগুলো বলুন, একটু অন্যভাবেঃ
রাগ প্রকাশ করুন, চেপে রাখবেন না। কিন্তু একটু অন্যভাবে। যেমন আপনার সঙ্গী যদি ভীষণ অগোছালো হয়ে থাকেন এবং ঘরের কোন কাজে আপনাকে সহযোগিতা না করেন। তাহলে আপনি রাগ করে দুটো কথা তো তাকে শোনাতেই পারেন। “ঘরের সব কাজ তো আমিই করি, তুমি তো কিছু করো না” এভাবে বললে আপনার সঙ্গী কষ্ট পেতে পারেন। তাই বরং এভাবে বলতে পারেন, “আমার খুবই মন খারাপ হয় যখন তুমি আমাকে সহযোগিতা করো না এবং আমাকে একা একাই কষ্ট করে ঘর গোছাতে হয় ” এভাবে বললে তিনি তার ভুল বুঝতে পারবেন ও আপনার কষ্ট তার মনেও সহমর্মিতা জাগাবে।

৭) ক্ষমা করে দিনঃ
বিষয়টা তত সহজ নয় যদিও, তবু একবার ভাবুন তো, আশপাশের সবাই ঠিক আপনার মনের মত হবে না। আপনি কারো ক্ষতি করেননি বলেই যে কেউ আপনার ক্ষতি করবে না তা ভাবাটা বোকামী। কারো অপরাধের শাস্তি নিজে না দিয়ে প্রকৃতির হাতেই ছেড়ে দিন। ক্ষমা করে দিন। একদিন রাগ করে চেঁচিয়ে দেখুন আর আরেকদিন ক্ষমা করে দিয়ে দেখুন, কোনটায় বেশী তৃপ্তি পাচ্ছেন আপনি?

৮) নিজেকে পরামর্শ দিনঃ
যখন খুব রেগে আছেন নিজেকে কয়েকবার নিজেই বলুন, ‘শান্ত হও’, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে’, ‘এগুলো জীবনের অংশ’... নিজেকে নিজেই নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করুন। এই অটোসাজেশন আপনার রাগ নিয়ন্ত্রনে আনতে সাহায্য করবে অনেকটাই।

৯) বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিনঃ
যদি উপরের কোন উপায়ই আপনার কাজে না লাগে তবে পরামর্শ নিন একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের। তার পরামর্শ আপনাকে সহযোগিতা করবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের।

রাগ করুন, কিন্তু তা যেন চলে না যায় আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।আবেগের সুস্থ প্রকাশ ঘটান, সুস্থ থাকুন।

@good-karma
@feruz
@isteemit
@esteemapp

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
http://www.somewhereinblog.net/blog/nizamuddin212/29859477