২০২৪ এর শিক্ষার্থিদের উপর হাসিনা সরকারের গণহত্যা

in hasinaresign •  3 months ago 

একটি করুণ অধ্যায়

২০২৪ সালটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থিদের জন্য ভয়াবহ এক অধ্যায় হয়ে দাঁড়ায়। দেশের তরুণ সমাজ, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিরা, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল। শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, এবং সামাজিক অবিচার নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ জমে উঠেছিল, যা আন্দোলনে রূপ নেয়। তবে এই আন্দোলনের উত্তাল সময় এক ভয়ঙ্কর মোড়ে পৌঁছে যায় যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার শিক্ষার্থিদের বিক্ষোভ দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।

শিক্ষার্থি আন্দোলনের সূত্রপাত...

শিক্ষার্থিরা দেশের নানা ইস্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করছিল, যার মধ্যে ছিল:

১/বেকারত্বের উচ্চ হার: শিক্ষিত যুবসমাজের একটি বড় অংশ চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত।

২/শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষার অভাব, সেশনজট, এবং দুর্নীতি ক্রমশ শিক্ষার্থিদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করে।

৩/রাজনৈতিক প্রভাব: শিক্ষার্থিরা মনে করছিল, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব এবং দলীয় ছাত্র সংগঠনগুলোর আধিপত্য শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করছে।

সরকারী নিপীড়ন ...

শুরুতে শান্তিপূর্ণভাবে চলা বিক্ষোভগুলো ক্রমেই উত্তাল হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিরা বড় একটি মিছিল বের করলে, পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। তবে সরকারের এই পদক্ষেপ আরো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্ম দেয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থিরা পথে নামে এবং সরকারের পদত্যাগের দাবি জানায়।

গণহত্যার সূচনা...

মার্চ মাসে, বিক্ষোভ দমনে সরকার আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়। নিরস্ত্র শিক্ষার্থিদের উপর গুলি চালানো হয়, যার ফলে শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ হারায় এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়। সরকার এটিকে "দাঙ্গা দমন" হিসাবে ব্যাখ্যা করলেও, আন্তর্জাতিক মহল থেকে এই পদক্ষেপকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসাবে দেখা হয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া...

শেখ হাসিনার সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে আসে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং বিভিন্ন দেশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং বাংলাদেশ সরকারকে ছাত্রদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানায়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে।

পরিণতি...

শিক্ষার্থিদের উপর চালানো এই নিষ্ঠুর হামলা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলে। শেখ হাসিনার সরকারকে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে পড়তে হয় এবং দেশের অভ্যন্তরে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থিরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে, কিন্তু হাজারো নিরীহ প্রাণ হারানোর এই ঘটনা ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় হয়ে রইল।

উপসংহার :

২০২৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে শিক্ষার্থিদের উপর এই গণহত্যার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গভীর ক্ষত হিসেবে থাকবে। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন দমন নয়, বরং একটি জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে স্তব্ধ করার চেষ্টা।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...