আমি একবার ট্র্রেনে ঢাকায় রওয়ানা হলাম। আমার সামনের সিটে এক ভন্দ্রলোক বসে আছেন, তার সিটের নিচে কিসের যেন একটি ব্যাগ। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর রেলওয়ে পুলিশ এসে সিটের নিচ থেকে ব্যাগটি টেনে বের করল, জিজ্ঞেস করল ব্যাগটি কার?
- ভদ্রলোক বলল ব্যাগটি আমার।
- ব্যাগের ভেতর কি আছে
খারাপ কিছু নাই, তবে ব্যাগ খোলা যাবে না।
কেন?
- সমস্যা আছে
- কি সমস্যা?
সমস্যাটা বলতে পারছি না, যে কারণে খুলতেও পারছি না।
সবাই ব্যাগ খুলে দেখালো আপনি দেখাবেন না কেন?
ভদ্রলোক বলল, আপনার যখন দেখার এতো আগ্রহ তখন আপনিই খোলেন। আমার পক্ষ থেকে কোন আপত্তি নেই।
পুলিশ খুব আগ্রহ নিয়ে ব্যাগের মুখ খুলে ভেতরে হাত দিয়ে মুখটা মলিন করে বলল, এগুলো কি নিয়েছেন?
- ভদ্রলোক বলল, আপনি তো নিজেই হাত দিয়ে দেখতে পারছেন, আমাকে আর মুখে বলতে বলছেন কেন?
পুলিশ রাগত স্বরে বলল, এটা আমারে আগে বললেই তো হতো।
ভদ্রলোক বললো, আপনি যে ভাবে ভয়ভীতি দেখালেন তাতে তো বলার সুযোগই পেলাম না।
পুলিশ সুর কিছুটা নরম করে বলল, এগুলো কেন নিয়েছেন?
ভদ্রলোক জবাবে বলল, আমার ছোট বোন ঢাকায় নতুন বাসা নিয়েছে, সে মাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ঢাকা শহরে সব পাওয়া যায় শুধু এটারই নাকি খুব অভাব। তাই অন্য কিছু বাদ দিয়ে ব্যাগ ভর্তি করে এগুলো নিতে বলেছে। তাই নিয়ে যাচ্ছি।
পুলিশের এ অবস্থা দেখে আমিও আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই ব্যাগের ভেতর আসলে কি জিনিষ?
পুলিশ বিরক্তভাবেই জবাব দিল, অবৈধ কিছু নয়, তবে বলা যাবে না।
একটু পরেই গাড়ি স্টেশনে থামলে সব পুলিশ নেমে গেল।
ঘটনাটা কি কিছুই বুঝতে পারলাম না। তাই ভলোককে বললাম ভাই সত্যি করে বলেন তো, ব্যাগের ভেতর কি নিয়েছেন?
ভদ্রলোক বিরক্ত হয়ে বলল, আরে ভাই আপনিও তো দেখি পুলিশের মতো পাগল হয়ে গেছেন। কি নিয়েছি পুলিশ যখন বলল না তখন আপনার শোনার এতো আগ্রহ কেন? বলেই ব্যাগের উপর খুলে রাখা রসি হাতে নিয়ে ব্যাগের মুখ দুই হাতে চেপে ধরতেই ভক্ করে কিছু ছাই উড়ে এসে আমার এবং পাশের যাত্রীর চোখে মুখে ঢুকে গেল।
চোখ কচলাতে কচলাতে বললাম, আরে ভাই কি করছেন, ছাই উড়াচ্ছেন কেন?
ভদ্রলোক মুখটা বাঁকা করে বলল, আরে ভাই ব্যাগের ভেতর আছে ছাই, ছাই উড়াবো না তো টেলকম পাউডার উড়াবো!
ভদ্রলোক ব্যাগের মুখ বাঁধতে বাঁধতে বিরক্তভাবে বলল, আরে ভাই বললাম তো, ছোট বোনটা চিঠি লিখেছে ঢাকা শহরে সব পাওয়া যায়, কিন্তু ছাই নাকি পাওয়া যায় না, তাই ছাই নিতে বলেছে। শ্যালার পুলিশ এইটা দেখার জন্য পাগল হয়ে গেল। দেখে তো নিজেও আহম্মক হলো আমাকে আহাম্মক বানালো।