‘স্বর্ণকুমারী দেবী’ বাংলা সাহিত্যে প্রথম বাঙ্গালি মহিলা ঔপন্যাসিক এবং আধুনিক যুগের প্রথম মহিলা কবি। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় বোন। ‘দীপ নির্বাণ’ তাহার প্রথম উপন্যাস এছাড়াও মালতী, বিদ্রোহ, স্নেহলতা, মিবার-রাজ, ফুলের মালা ইত্যাদি তাহার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নয়টি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। এগুলো হলো- ভানুসিংহ ঠাকুর, আন্নকালী পাকড়াশী, অকপটচন্দ্র ভাস্কর, দিকশূন্য ভট্টাচার্ঘ, চরণ দেশর্মা, নবীন কিশোর শর্মন, বানীবিনোদ বিদ্যাবিনোদ, শ্রীমতি মধ্যমা, শ্রীমতি কনিষ্ঠা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৭-১৮৯৫ সময়কালে ভ্রাতুষ্পুত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীকে যে সকল চিঠি লিখেছিলেন ‘ছিন্নপত্র’ প্রধানত তারই সংকলন। বহু চিঠিই রবীন্দ্রনাথ ‘ছিন্নপত্র’–এ অন্তর্ভুক্ত করেননি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসের চরিত্র নিখিলেস-বিমলা। বিহারী-বিনোদিনী চোখের বালি উপন্যাসের, মধুসূদন-কুমুদিনী যোগাযোগ উপন্যাসের এবং অমিত-লাবণ্য শেষের কবিতা উপন্যাসের চরিত্র। ‘শেষের কবিতা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কাব্যধর্মী উপন্যাস। উপন্যাসটি প্রবাসী পত্রিকায় ১৯২৮ সালে প্রথম ছাপা হয় এবং ১৯২৯ সালে গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হয়। অমিত, লাবণ্য, কেতকী রায়, শোভনলাল এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।
গল্প/উপন্যাস | চরিত্র |
---|---|
হৈমন্তী | হৈমন্তী, অপু, গৌরিশংকর। |
নষ্টনীড় | চারুলতা, অমল। |
চোখের বালি | আশালতা, বিহারী, বিনোদিনী, মহেন্দ্র। |
‘ঘরে বাইরে’ একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। এটি চলিত ভাষায় লেখা রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাস। ১৯৮৪ সালে সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাস অবলম্বনে ‘ঘরে বাইরে’ চলচ্চিত্রখানি নির্মাণ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের পটভূমিতে এ উপন্যাসটি রচিত। উল্লেখযোগ্য চরিত্র: বিমলা, নিখিলেশ, সন্দীপ।
রবীন্দ্রনাথ রচিত সামাজিক উপন্যাস ‘যোগাযোগ’ এর অন্তর্গত উদ্ধৃতি – “যা হোক, যেমন তেল ফুরোয়, যেমন দীপ নেবে, তেমনি এক সময় রাতও পোহায়”।
‘শেষ লেখা’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ। এটি ১৯৪১ সালে প্রকাশিত হয়। তার উল্লেখযোগ্য রচিত কাব্যগ্রন্থ: কবিকাহিনী, বনফুল, রোগশয্যা, আরোগ্য, পূরবী, মানসী, সোনার তরী, পুনশ্চ, চিত্রা, সানাই, চৈতালী, কল্পনা, বলাকা, কড়ি ও কোমল, প্রান্তিক, গীতাঞ্জলি, ক্ষণিকা, কণিকা, সেজুঁতি, কাহিনী, জন্মদিনে, প্রভাতসঙ্গীত, সন্ধ্যাসঙ্গীত, শেষ সপ্তক, শেষ লেখা, শ্যামলী ইত্যাদি। শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি উপন্যাস।
কাব্যগ্রন্থ | উল্লেখযোগ্য কবিতা |
---|---|
বলাকা | বলাকা |
শাজাহান | |
সবুজের অভিযান | |
শঙ্খ | |
ছবি |
“কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও
তারি রথ নিত্যই উধাও”
আলোচ্য কবিতাংশটি রবীন্দ্রনাথের ‘মহুয়া’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘বিদায়’ কবিতার। উল্লেখ্য কবিতাংশটি ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসেও রয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ রচিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাস- মালঞ্চ, চতুরঙ্গ, প্রজাপতির নির্বন্ধ, নৌকাডুবি, যোগাযোগ ইত্যাদি। ক্ষণিকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কাব্যগ্রন্থ। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (কালের যাত্রা), জগদীশ চন্দ্র বসু (খেয়া), সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (আকাশ প্রদীপ) এবং নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুকে (তাসের দেশ) নাটক সমূহ উৎসর্গ করেন।
ছোটগল্প | চরিত্র | ছোটগল্প | চরিত্র |
---|---|---|---|
ছুটি | ফটিক | সুভাষিণী | সুভা |
পোস্টমাস্টার | রতন | দেনাপাওনা | নিরুপমা |
সমাপ্তি | মৃন্ময়ী | খাতা | ঊমা |
শাস্তি | চন্দরা | স্ত্রীর পত্র | মৃণাল |
নষ্টনীড় | চারুলতা | ঘাটের কথা | কুসুম |
একরাত্রি | সুরবালা | পয়লা নম্বর | অনিলা |
জীবিত ও মৃত | কাদম্বিনী | মধ্যবর্তিনী | শৈলবালা |
কাবুলিওয়ালা | খুকী | বিচারক | ক্ষীরোদা |
অপরিচিতা | কল্যাণী | হৈমন্তী | হৈমন্তী |
● রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত ছোট গল্প → ভিখারিনী।
● রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ → কবি কাহিনী।
● রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস → বৌঠাকুরাণীর হাট।
● রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কবিতা → হিন্দুমেলার উপহার।
● রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত গীতিনাট্য → বাল্মীকি প্রতিভা।
‘সভ্যতার সংকট’ (১৯৪১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ গদ্যরচনা। এই ক্ষুদ্র বিন্তু অসামান্য প্রবন্ধে ইউরোপীয় সভ্যতা ও ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের তীব্র সমালোচনা ও মানবতার প্রতি গভীর আস্থা প্রকাশিত। ‘ঐ মহামানব আসে’ গানটি এই পুস্তিকার অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া এখানেই তিনি বলেছেন- ‘মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব।’ রবীন্দ্রনাথকে বুঝবার জন্য এ প্রবন্ধটি অবশ্য-পাঠ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আত্মজীবনীমূলক প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘জীবনস্মৃতি’ (১৯১২)। তার রচিত আরো কয়েকটি প্রবন্ধগ্রন্থ- কালান্তর, সভ্যতার সংকট, পঞ্চভূত, মানুষের ধর্ম, বিচিত্র প্রবন্ধ, শব্দতত্ত্ব।