বিপদ-আপদ ও অসুখ বিসুখের সময় ধৈর্য ধারণ করা একান্ত অপরিহার্য।

in hive-120823 •  9 months ago  (edited)

20231129_083943.jpg

প্রিয় সাথী বৃন্দ,
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি, সুস্থ আছি। বিপদ- আপদ বা অসুখ- বিসুখ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে আর তা আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ। এই বিষয় নিয়ে দুটি কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এই পোস্টে আপনাদের সকলকে স্বাগতম এবং অভিনন্দন।

আমরা মানুষ, আমাদের প্রত্যেকের কম বেশি বিপদ- আপদ ও অসুখ বিসুখ এসে থাকে বা আসবেই, এটাই স্বাভাবিক। আর এই বিপদ-আপদের সময়ে কিভাবে মোকাবেলা করব বা আমাদের করণীয় কি, সেই বিষয়ে কিছু কথা।

প্রথমেই আমরা একজন সাহাবীর ও তার স্ত্রীর গল্প তুলে ধরব। তাদের বিবাহ হয়েছে অনেক বছর ধরে কিন্তু স্ত্রী লক্ষ্য করল যে, তার স্বামীর কোন প্রকার বিপদ-আপদ বা অসুখ- বিসুখ হয় না। এই অবস্থা দেখে সাহাবীর স্ত্রী, সাহাবার সঙ্গে সংসার করবে না বলে মত প্রকাশ করে।

20231129_083916.jpg

তখন তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়, মনোমালিন্য হয়। একপর্যায়ে সাহাবা বললো, ঠিক আছে আমরা আমাদের নবীর কাছে গিয়ে আমাদের সমস্যার কথা বলবো। আমাদের প্রিয় নবী যে সিদ্ধান্ত দিবে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেব। এতে কি বল? তখন সাহাবার স্ত্রী বলল ঠিক আছে তাই হবে। তখন তারা দুইজন একসাথে রওনা দিল।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর বাড়ির কাছে গিয়ে সাহাবী পাথরের সাথে আঘাত লেগে পড়ে গিয়ে তার পা অনেকখানি কেটে গেল, রক্ত বের হতে থাকলো। তখন সাহাবার স্ত্রী, নিজের নতুন কাপড় ছিড়ে তার পা ব্যান্ডেজ করে দিল এবং রক্ত সমূহ মুছে দিল। তখন সাহাবা মনে মনে ভাবলো, কি ব্যাপার, সে এত পরিবর্তন হলো কিভাবে।

20231129_083631.jpg

এই মুহূর্তেই সাহাবার স্ত্রী বলল চলো বাড়ি যাই। নবীর কাছে যেতে হবে না। আমি তোমার সংসার করবো। তখন সাহাবা বলল, তুমি সংসার করবে না বিধায় আজ কতদিন যাবৎ তুমি আমার সাথে ঝগড়া বিবাদ করিতেছ। আজকে নবীর বাড়ির কাছে এসেছি আর অল্প কিছু পথ রয়েছে, এখন তুমি এ কথা বলছো, কারন কি?

তখন তার স্ত্রী বলল তোমার প্রতি আল্লাহর রহমত ও দয়া রয়েছে, এই জন্যই, এখন সংসার করতে চাই। তুমি কি প্রিয় নবীর একটা হাদিস পড়ো নাই, যে কোন ব্যক্তির উপর কোন প্রকার অসুখ-বিসুখ বা বিপদ-আপদ যদি না আসে তবে, তার উপর আল্লাহর রহমত থাকে না অর্থাৎ অসুখ-বিসুখ বা বিপদ-আপদ ইত্যাদি যখন আমাদের উপর আসে তখন আল্লাহর রহমত সাথে সাথে আমাদের উপর বর্ষিত হয়।

আজ কতদিন যাবত তোমার সাথে আমি সংসার করি, কোনদিন তোমার উপর বিপদ-আপদ বা অসুখ-বিসুখ কিছুই দেখি নাই। তাই ভাবলাম তোমার উপর মহান আল্লাহ তাআলার কোন প্রকার দয়া-মায়া ও রহমত বর্ষণ করেন না। আর যার প্রতি দয়া- মায়া ও রহমত বর্ষণ করা হয় না, তার সাথে আমি সংসার কেমনে করি।

20231129_083608.jpg

এই জন্যেই তোমার সাথে আমি সংসার করতে চাই নাই। কিন্তু যখন দেখলাম, তুমি পাথরের সাথে আঘাত পেয়ে রক্ত গড় গড় করে বের হচ্ছিল, তখনই আমি মনে করলাম আল্লাহর রহমতে ও দয়া তোমার উপর রয়েছে। অতএব সংসার করতে আর কোন সমস্যা নেই।

এই হাদিস থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, আসলে বিপদ- আপদ বা অসুখ-বিসুখ সবই আল্লাহর রহমত দয়া ও মায়ার ফসল। তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকটি বিপদ-আপদ বা অসুখ-বিসুখে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তবে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব ইনশাআল্লাহ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রিয় ভাই, আজ আপনি অনেক মূল্যবান একটি জিনিস আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আমরা অনেকেই রোগ বালাই আসলে সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করি। যা কখনো উচিত নয়। কারণ আল্লাহ রোগ দেয়ার মালিক এবং তিনিই সারানোর মালিক। মাঝে মধ্যে তিনি আমাদের রোগ বালাই দিয়ে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে থাকেন। আর আমরা যদি সেই পরীক্ষায় পাশ করতে পারি তাহলে আমাদের ইহকাল এবং পরকাল দুই সুখের হবে বলে আমার বিশ্বাস।

ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য। আসলে আমরা সবাই এই পৃথিবীতে পরীক্ষায় পড়বো। এটা মহান আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেছেন আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব। তাই আমাদেরকে সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল আল্লাহ হাফেজ।

বিপদ আপদে সব সময় মাথা ঠান্ডা রেখে চলা উচিৎ আমাদের।অনেক সময় সৃষ্টিকর্তা বিপদ আপদ দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করেন।বিপদেও আমরা তার স্মরনাপন্ন হবো,তাহলেই মিলবে মুক্তি। আপনাকে ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। চলার পথে আমাদের অনেক বিপদ-আপদ এর সম্মুখীন হয়। এজন্য আমাদেরকে ধৈর্য সহিত মোকাবেলা করতে হয়। তবেই তার সুফল পেতে পারি। ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইল।

Loading...

আমরা যেহেতু মানুষ তাই আমরা বিপদ আপদের সম্মুখীন হবোই। আর এসব ক্ষেত্রে আমাদের অধৈর্য হলে চলবে না।ধৈর্যের সাথে কিভাবে বিপদ থেকে বের হওয়া যায় সেই চেষ্টা করতে হবে।
চমৎকার একটা বিষয় সবার মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে রোগ বালাই মানুষের হবে এটাই স্বাভাবিক আমাদের রোগের সম্মুখীন হতে হবে এবং তা ধৈর্য্য সহকারে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে ৷ রোগ বালাই শরীরের মধ্যে দেখা দিলে ভয় পাইলে চলবে না আমাদের ধৈর্য্য নিয়ে তা রুখে দাড়াতে হবে ৷

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

আমরা অনেকেই অসুখ বিসুখ হলে বিরক্ত হই। কিন্তু যারা এই হাদীস টি জানে তারা রোগ বালাই কে রহমত হিসেবে নেয়। সবাই কে আল্লাহ সঠিক বুঝদান করুক। রোগ বালাই হলে বিরক্ত না হয়ে এটাকে রহমত হিসেবে গণ্য করতে হবে।
ধন্যবাদ সুন্দর বিষয় উপস্থাপন করার জন্যে।