গীবত গাওয়া মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সমান।

in hive-120823 •  9 months ago 

pexels-budgeron-bach-5158269.jpg

source
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

প্রিয় সাথী বৃন্দ,
আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অপার কৃপায়, আপনাদের দোয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি একটি মারাত্মক পাপ হয়, এমন একটা বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করব। বিষয়টি হলো "গীবত" । এই পোস্টে আপনাদের সকলকে স্বাগতম এবং অভিনন্দন।

গীবত একটা জঘন্যতম অপরাধ। ইসলাম ধর্মে গীবত গাওয়া একেবারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গীবতকে ভয়ংকর পাপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যে পাপ বান্দার হকের সহিত সরাসরি সম্পর্কিত অর্থাৎ যার সম্পর্কে গীবত গাওয়া হবে, তার কাছ থেকেই মাপ নিতে হয়। অন্য কেউ মাফ করলে হবে না। এমনকি মহান আল্লাহ তাআলা এই গুনাহ মাফ করবেন না।

আসুন আমরা গীবত কাকে বলে একটু দেখে নেই। গীবত হলো কাহারো অনুপস্থিতিতে তার কথা, ভালো হোক অথবা মন্দ হোক, তাহা অন্যের কাছে প্রকাশ করা অর্থাৎ কারো অগোচরে তার দোষ অন্যের কাছে বর্ণনা করা। যা শুনে যার গীবত গাওয়া হলো তার মনে কষ্টের সৃষ্টি করে।

গীবত কত প্রকার তা আমাদের প্রথমে জানা উচিত। গীবত মোট চার প্রকার আর এই গীবত করতে তিনজন ব্যক্তি জড়িত থাকতে হয় অর্থাৎ তিন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। এই চার প্রকার গীবতের মধ্যে এক প্রকার গীবত সরাসরি হারাম। যা কুরআন ও হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। আর বাকি তিন প্রকার গীবত হালাল অর্থাৎ কোন প্রকার পাপ হবে না।

pexels-helena-lopes-4011387.jpg
source
যে প্রকার গীবত হারাম বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেই গীবত সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা যাক। যে গীবত গাওয়ার ফলে (গীবত করতে যে তিনজন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়) এই তিনজন ব্যক্তির মধ্যে কাহারো, কোন প্রকার উপকার হয় না। শুধু অপকার হয়। এই প্রকার গীবত একেবারে হারাম।

হারাম গীবতের উদাহরণঃ ধরুন কোন ব্যক্তি চুরি করেছে। তাহা এক ব্যক্তি দেখেছে। এই কথা সে চা স্টলে গিয়ে সবার মাঝে বলিতেছে যে, অমুকের ছেলে আজকে চুরি করেছে। চা স্টলে অনেক মানুষের মধ্যে বলার কারণে ওই চোরের, যে গীবত করলো এবং যার চুরি করেছে, এই তিন ব্যক্তির মধ্যে কাহারো কোন উপকার হলো না। এখানে যে গীবতটা হলো তা একেবারে হারাম।

pexels-keira-burton-6147142.jpg
source
হালাল গীবত এর উদাহরণঃ ধরুন কোন ব্যক্তি তার পরিচিত একজন নেশাখোর, চোর, বখাটে ছেলে তার প্রতিবেশী মেয়ের বিবাহের জন্য দেখতে এসেছে। তখন ঐ ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে ডেকে নিয়ে ঐ ছেলের যাবতীয় দোষ ত্রুটি বলে দিল এবং বিবাহ হলো না। এতে কিন্তু সে ওই ছেলের গীবত করল কিন্তু তারপরেও তার কোন পাপ হবে না কারণ এখানে ওই মেয়েটার অর্থাৎ তার প্রতিবেশীর অনেক বড় উপকার করলো। এরকম উপকার তিনজন ব্যক্তির মধ্যে যে কোন একজনের হলেই সেই গীবত অবশ্যই হালাল হবে, আর এই গীবত করা যাবে, কোন প্রকার পাপ হবে না।

pexels-eren-li-7169670.jpg
source
তাই আমাদের সবার উচিত, হালাল গীবত গুলো গাওয়া কোন প্রকার দোষ নেই। এতে আরো মানুষের উপকার হবে। কিন্তু যে গীবত করলে মানুষের অপকার হয় অর্থাৎ কোন প্রকার উপকার হয় না অর্থাৎ এই গীবত হারাম। এই প্রকার গীবত হতে আমরা সবাই সাবধান থাকি। পরে আমরা অন্য কোন পোস্টে গীবতের ভয়াবহতা এবং গীবতের শাস্তি এবং গীবতের প্রতিকার নিয়ে কথা বলব ইনশাল্লাহ। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, আল্লাহ হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

আপনি অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেটি বর্তমান সমাজে প্রায় বেশিরভাগ মানুষের মাঝে মিশে আছে। গীবত গাওয়ার ফলে মানুষ মনে কষ্ট পায়। এর ফলে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হন। এই গীবত বর্তমান সমাজে গ্রাম এলাকার মহিলাদের মাঝে বেশি দেখা যায়। গীবত থেকে আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক, আমিন।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য।

পরনিন্দা করা খারাপ এটা আমরা সবাই ছোট থেকেই জানি তারপরও এই বদঅভ্যাস থেকে মুক্ত হতে পারি না।সুযোগ পেলেই কিংবা আড্ডায় বসলে এই নীতিকথা আমরা ভুলে যাই।
চমৎকার এই বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Loading...

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষকে দেখা যায় গীবত করে বেড়ায়। গীবত করা মোটেও ঠিক না। এটা তারা জানা শর্তেও একজন আরেকজনের পেছনে কথা বলে। আমার কাছে মনে হয় যাকে যা বলার সামনাসামনি বলে দেয়া উচিত।

আজকে আপনি খুব চমৎকারভাবে আমাদের সাথে গীবত কাহাকে বলে। যারা গীবত করে তারা দেশ এবং সমাজের জন্য অনেক বড় একটা সমস্যা।অনেক মানুষ দেখা যায় পরিবারের কথা অন্যের কাছে বলে বেড়ায়। এটাও এক ধরনের গীবত। বর্তমান সময়ে তো দেখেছি স্বামী তার স্ত্রীর কথা বাইরের মানুষের কাছে বলে বেড়ায়। আবার স্ত্রী তার স্বামীর কথা বাইরের মানুষের কাছে বলে বেড়ায়। এতে করে সংসারের সুখ নষ্ট হয়ে যায়। গীবত করা থেকে বিরত থাকা উচিত। চমৎকার বিষয় উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।

গীবত কী সেটা আসলে আজকেই প্রথম জানতে পারলাম ৷ গীবত সম্পর্কে আগে আমার কোন কিছু ধারনাই ছিলো না ৷ তারপরও অনেক কিছু জানতে পারলাম গীবত এক ধরনের অপরাধ এটা পাপের সমতূল্য বলা যায় ৷ তারপর আপনাদের ইসলাম ধর্মে এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ৷ যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে গীবত সম্পর্কে কিছু কথা আলোচনা করার জন্য ৷

ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷ আপনার পরবর্তী পোস্টে পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ৷ 🙏