তোমার ভালোবাসায়।💜

in hive-120823 •  13 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা! আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি এক ভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক.......

1000006311.jpgSource

ভালোবাসার শব্দটা একই থাকে,কেবল মানুষ দুটি পালটে যায়। নিলয়ের কাছে এই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পাশ দিয়ে হাঁটাটা নতুন কিছু নয়, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছরের অভ্যাস। বহুদিন ধরে এই রাস্তা, এই ক্যাফেট এরিয়া, বসার জায়গা, আর এই কৃষ্ণচূড়া গাছটা এরা সবাই নিলয়কে চেনে। ওই যেদিন হাঁটতে হাঁটতে প্রথম নিলয় প্রীতির হাতটা ধরেছিলো,সেদিন প্রীতির সাথে সাথে কৃষ্ণচূড়া গাছটিও লজ্জা পেয়েছিল।

সে ফেলে আসা স্মৃতির ক্যানভাসে আবারো একবার ভেসে যেতে ইচ্ছা করছে নিলয়ের। হ্যা ঠিকই ধরেছেন চোখের সামনে এক জোড়া অচেনা তরুণ-তরুণীকে বিশ্ববিদ্যালয় শেষে একে অপরের হাত ধরে রাস্তা পারাপার করতে দেখে তার নিজের গল্পটা খুব মনে পড়তেছিলো। ধুলো জমে থাকা স্মৃতি গুলো আস্তে আস্তে তার চোখের সামনে স্পষ্ট হতে লাগলো।

1000006310.jpgSource

দিনের শত ব্যস্ততার মাঝেও সেই রাস্তার সামনে থমকে দাঁড়ালো নিলয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজগার চিত্র ছিল ছুটি হওয়ার পর নিলয়ের হাত ধরে প্রীতি রাস্তা পারাপার করা। আজ সময় বদলে গেছে, বদলে গেছে মানুষ দুটো কিন্তু তাদের ভালোবাসা এখনো একটুও বদলাইনি।

আজকে নিলায় ও প্রীতির ভালোবাসার ছোট্ট একটি গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। সময়টি ঠিক সাত বছর আগে। নিলয় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। নিলয় তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক সময় কাটাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্স নিয়ে। প্রেম, ভালোবাসা এই শব্দগুলো তার মনের মধ্যে কখনো প্রকাশ পায়নি। তবে চিত্রটা ধীরে ধীরে পাল্টাতে লাগলো যখন প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া প্রীতি তার জীবনে আসলো। সেদিনগুলো হয়তো নিলয় এখনো ভুলতে পারিনি।

1000006312.jpgSource

কিছুদিন পর তাদের মধ্যের কথোপকথন গুলো অদ্ভুতভাবে বাড়তে লাগলো। তারা একে অপরের অনেক ভালো বন্ধু হয়ে উঠলো। দ্বিতীয় বর্ষের শেষের দিকে নিলয় প্রথম প্রীতিকে তার মনের অনুভূতির কথা গুলো জানিয়েছিলো। প্রীতি প্রথমে তার মুখে ভালোবাসার কথা শুনে চমকে গিয়েছিলো। তারপর প্রেতি মুচকি হেসে নিলয় কে বললো আমি এখন এসব নিয়ে ভাবছি না। এসব ব্যাপারে আমি তোমার সাথে পরে কথা বলবো। এই বলে প্রীতি চলে গেল।

কিছুদিন পর প্রীতি ও নিলয় কে জানিয়ে দেয় তার ভালোবাসার কথা। সেদিন নিলয় আনন্দে কেঁদে দিয়েছিলো। ভালোবাসার ছোয়ায় তাদের দুজনের জীবন আরো রঙিন হয়ে উঠেছিলো। তবে আপনাদের বলে রাখি যে, প্রীতি ইচ্ছা করেই এতদিন তার মনের কথা চেপে রেখেছিল। তাদের দুজনের সম্পর্ক বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবেই কাটছিলো। তারা এতদিনে বুঝতে পেরেছিল যে, তারা দুজনেই একে অপরকে ছাড়া কখনোই থাকতে পারবে না।

1000006313.jpgSource

তারপর হঠাৎ একদিন নিলয় প্রীতিকে ফোন করে বলে,আমি কালকে তোমার বাড়িতে আসছি। তোমার পরিবারের সাথে আমাদের দুজনের ব্যাপারে কথা বলার জন্য। যে কথা সেই কাজ নিলয় পরের দিনই তার বাবা- মাকে নিয়ে প্রিতির বাড়িতে হাজির হলো। তবে আগের দিন রাতেই প্রীতি তার মাকে ডেকে নিলয়দের আসার কথা বলেছিল। দুই পরিবারের মধ্যে কথা হয়ে পরিবারের সবাই তাদের সম্পর্ক মেনে নিল।

তারপর দুই পরিবার মিলে একটি ভালো দিন দেখে তাদের বিয়ের দিন ঠিক করলো। নির্দিষ্ট দিনে অনেক ধুমধাম করে তাদের দুজনের বিয়ে সম্পন্ন হল। অবশেষে তারা যেটা চেয়েছিলো সেটাই তারা পেল। এটাই হয়তো ভালোবাসার একটি শুভ পরিণতি।

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

নিলো আর প্রীতির প্রেমের কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। এত সুন্দর ভাবে গল্পটি উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি গল্পটি পড়ে খুবই আনন্দ উপভোগ করছি। আশায় আছি এরকম আরো অনেক গল্পই আমাদের কে উপহার দিবেন। আপনার গল্পের মাঝে প্রেম ,ভালোবাসা, অভিমান থাকে যা পড়ে মনের ভিতর আনন্দ কাজ করে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালোবাসায় ভালো লাগা, ভালোবাসা, অভিমান সব কিছুই থাকবে। আামাদের সব কিছুর সাথে মানিয়ে নিতে হবে। মানিয়ে নিতে না পারলে আমাদের সম্পর্কে গভির ক্ষত তৈরি হবে।

ভালো থাকবেন দাদা।

Loading...

তোর পোস্টটি পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো। ভালোবাসা এমন একটি জিনিস, যেটা মনের অজান্তেই হয়ে যায়। আস্তে আস্তে তার প্রকাশ ঘটে। প্রথম ভালোবাসার প্রতি একটা আলাদা ফিলিংস কাজ করে। নিলয় আর প্রতীর বেলায় ঠিক এমনই ঘটেছে। যাই হোক, ভালো থাক আর আমাদের মাঝে এই রকম সুন্দর সুন্দর গল্প শেয়ার করতে থাক।

ভালোবাসা কোন বাধা-বিপত্তি মানে না যাকে মন থেকে ভালোবাসা যায় তাকে কখনো ভুলে থাকা যায় না আর জীবনে যত মুহূর্ত আসুক না কেন সেটা যত কঠিন হোক না কেন ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পাওয়ার মধ্যে কতটা আনন্দ আছে সেটা হয়তো বা তারাই উপভোগ করেছে যারা প্রকৃতপক্ষে নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পেয়েছে।

প্রীতির প্রতি নিলয়ের ভালোবাসা দেখে আমি একেবারেই মুগ্ধ হয়ে গেছি আসলেই চাইলেই কিন্তু দুইটা মানুষ মিলে দুইটা পরিবারকে একসাথে করতে পারে হয়তোবা একটু কষ্ট হয় প্রথমে বাধা-বিপত্তি আসে কিন্তু দিন শেষে অবশ্যই তারা একে অপরের জন্য তৈরি হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।

নিলয় তার ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে প্রীতি তার প্রিয় মানুষটাকে কাছে পেয়েছে এর চাইতে বড় পাওয়া হয়তোবা আর কিছুই হতে পারে না অনেকেই বলে টাকা পয়সা না থাকলে নাকি ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় কিন্তু আমি মনে করি সত্যি কারের ভালোবাসা সবকিছু হারিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

আপু আপনি ঠিকই বলেছেন ভালোবাসা কোনো বাধা মানে না, জীবনে যাই আসুক না কেন ভালোবাসার মানুষ কখনোই তার মানুষটিকে ছেড়ে চলে যায় না। ভালোবাসা কখনোই ধনী,গরিব দেখে না। এখানে প্রীতি ও নিলয়ের ভালোবাসা সত্যিই অনেক অসাধারণ।

এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন আপু।