"নমস্কার সবাইকে"। গত কিছু দিন যাবত বেশ শীত পড়ছে। প্রতিদিন এর মতো আজকেও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গিয়েছিল অনেক। উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম। তারপর খাতা কলম নিয়ে বসে গেলাম একটা নতুন কাহিনীর গল্প লিখতে। আগের গল্পে ভালোবাসার শেষ পরিণয় হয়েছিল না,তাই আজকে ভাবলাম ভালোবাসার শেষ পরিণয় নিয়ে কিছু লিখি...........
বিয়েটা তাদের হয়েই গেল ! দীর্ঘ সাত বছর অপেক্ষা করার পর আজ সূচী আর খালিদের শুভ পরিণয়। তারা তাদের কলেজ জীবন থেকে এখনো এক সাথে আছে। খালিদ এখনো আগের কথা মনে করে হাসে।যেদিন প্রথম সূচী কলেজে এসেছিল। ক্লাস শুরু হয়েছিল অনেক আগে কিন্তু সূচীর বড় বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান এর জন্য অনেক দিন পরে ক্লাস শুরু করেছে।
প্রথম যেদিন ক্লাসে এসেছিল সেদিন খালিদের সাথে সূচীর একটা বড়সড় ঝামেলা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "দেনাপাওনা" গল্প নিয়ে। সেদিনের ঝামেলা থেকে এটা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল যে তাদের মতের মিল কোনো দিনও সম্ভব নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের দুজনের মধ্যে সখ্যতা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।তারা তাদের কলেজ জীবন একসাথে পার করলেও তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আলাদা। দুটি মানুষ ইঠাৎ করেই দেশের দুটি প্রান্তে চলে গিয়েছিল।
তাদের দুজনের মাঝে অনেক ভুল বোঝাবুঝিও সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তারা দুইজন কখনোই হার মানে নি। তারা সর্বদা চেষ্টা করেছে তাদের সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে। একটি সম্পর্ককে বাচিয়ে রাখতে চাইলে দরকার "কথা" সে যে ধরনের সম্পর্কই হোক না কেন। আর যেখনে ভালোবাসার সম্পর্ক থাকবে সেখনে তো অভিমান একটু বেশিই হবে এটা স্বাভাবিক। সূচী এবং খালিদের সম্পর্কটা কিন্তু একটুও ব্যতিক্রম নয়।
খালিদ ও সূচী দীর্ঘ সময় দূরে থাকার কারণে তাদের মধ্যে নানা ধরনের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তারা হাল ছেড়ে না দিয়ে আবার দুজনে সব মিটিয়ে নিয়েছিল।
"এক দিনের ঘটনা বলি,খালিদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অন্তবর্তী ফুটবল খেলা থাকার কারণে সারাদিন সময় করে উঠতে পারিনি সূচীর সাথে কথা বলার।সে দিন সূচী অনেক বার কল করেছিল খালিদকে। কিন্তু খালিদের ফোন তার কাছে না থাকায় সে সূচীর ফোন ধরতে পারেনি। সূচী তাকে অনেক ম্যাসেজ ও দিয়েছিল কিন্তু খালিদের পক্ষে সেটা দেখাও সম্ভব হয়ে উঠেনি। সূচী হঠাৎ করে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কারণ খালিদ এর আগে এমন কখনো করেনি। যাই হোক না কেনো খালিদ সর্বদা সূচীকে জানিয়ে যেত যে,সে কোথায় যাচ্ছে।কিন্তু সেই দিনের ঘটনাটা ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম।
সূচী সারা দিন খালিদের কোনো খবর না পেয়ে হঠাৎ করেই টিকিট কেটে সেদিন সন্ধ্যায় সিলেটে চলে গিয়েছিল। এবং পরদিন সকালে খালিদ যখন সূচীকে তার হলের গেস্ট রুমে দেখলো তখন তো সে আকাশ থেকে পড়লো। সূচী খালিদের বন্ধুদের ও সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু হয়ে উঠেনি।সূচীর সেকি কান্না খালিদকে দেখে। সেদিনটা তারা দুজনে সারাদিন একসাথে ছিল। সূচী সেদিন অনেক রেগে ছিল কিন্তু খালিদকে দেখে তার সব রাগ জল হয়ে গিয়েছিল।
আরো অনেক অনেক পথ একসাথে তারা চলবে তাইতো তারা তাদের সকল রাগ অভিমান ভেঙে আবার এক হয়ে গেল। এবার তারা আর স্বপ্নের মাধ্যমে নয় বাস্তবেই একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিল।তাদের ভবিষ্যৎটা অনেক ভাবে কল্পনা করে রেখেছিল তারা। এখন তারা সত্যি সত্যি সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে। সূচী ও খালিদের সম্পর্কের কথা তাদের পরিবার জানার পর প্রথম প্রথম তারা দ্বিমত পোষন করেছিল। কিন্তু সূচী ও খালিদের ভালোবাসার কাছে তারাও হার মানলো। আজ সব আয়োজনের মাধ্যমেই তাদের দুজনের ধুমধাম করে বিয়ে হচ্ছে। সূচী ও খালিদ সবদিনই চেয়েছিলো তাদের ভালোবাসার শেষ পরিণয় যেন একসাথে থাকাটাই হয়।
শেষ পর্যন্ত সূচী ও খালিদের দীর্ঘ সাত বছরের ভালোবাসার শেষ পরিণয় হলো..........