অসমাপ্তি।😕

in hive-120823 •  2 days ago 

"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......

1000007334.jpg

সুমন মাত্রই জানান দিলো মধুপুর গ্রামের মানুষদের যে সে আবার গ্রামে ফিরে এসেছে। এবার সে আর তার কিছুই করে উঠতে না পারা জীবনটাকে নিয়ে আসেনি। আজ সে তার জীবনের সবটুকু দিয়ে অর্জন করা সফলতা নিয়ে গ্রামে ফিরেছে। সুমন খুব আনন্দের সাথে গ্রামে এসেছে। কিন্তু সে জানেনা যার জন্য তার এত সফলতা, যার জন্য সে এত ত্যাগ আজ সেই আর নেই। সুমন আর কোনদিন তাকে আর আপন করে পাওয়া হবে না।

কাল গোধূলি লগ্নে দিপালীর বিয়ে হয়েছে। এখনো তার বাড়িতে সাজগোজ রয়ে গেছে। একটু পরেই তার বিদায় হয়ে যাবে মধুপুর গ্রাম থেকে। কত কত স্মৃতি রয়ে গেছে তার এই মধুপুর গ্রামে। তার ছোটবেলা কেটেছে এই গ্রামে। শুধু তার একার নয়। তার সাথে তার নিজের থেকেও বেশি তার সাথে সুমনের স্মৃতি আছে। দিপালী জানে না যে ছেলেবেলার তার একমাত্র সঙ্গী তার স্বপ্নের পুরুষ সুমান আজ মধুপুরে আসছে।

1000007336.jpg

দিপালী অনেকবার অনেকভাবে চেষ্টা করেছে সুমনের সাথে যোগাযোগ করার কিন্তু দিপালী কোনভাবেই সুমনকে হাতের নাগালে পায়নি। আজ আট বছর হয়ে গেছে দিপালীর সাথে সুমনের কোন যোগাযোগ নেই। দিপালী অনেকবার চেষ্টা করলেও সুমন চাইলেই সাথে যোগাযোগ করতে পারত। কিন্তু তারপরও সে একবারও তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি। মধুপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে আসার সময় সবাই তাকে দেখতে ছিল। কিন্তু সুমন তেমন কোন আমল দেয়নি কারণ সে ভেবেছিলো, অনেক বছর পর গ্রামে আসার কারণেই তাকে এমন ভাবে দেখছে মনুষ।

আসলে, সুমন এবং দিপালীর সম্পর্কের ব্যাপারে মধুপুর গ্রামের সবাই সবকিছু জানতো। তাদের দুজনকে নিয়ে অনেক বড় ঝামেলা ও হয়েছিল তাদের গ্রামে। সুমন একজন অনাথ ছেলে। তার এই পৃথিবীটা কেউ নেই। তাকে তার মামারা বড় করেছে। সুমন তার এক মামার কাছে বড় হয়েছে। সে জানেও না যে এরা তার কেমন মামা। বুঝতে শেখার পর থেকেই সমান দেখেছে যে সে মধুপুর গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই সুমনের একমাত্র সঙ্গী ছিল দিপালী। দিপালীর মা বাবা কখনোই চাইনি সুমনের সাথে দিপালীর কোন সম্পর্ক থাকুক।

1000007335.jpg

কারণ সুমন একজন অনাথ ছেলে। এটাই হয়তো সুমনের সবথেকে বড় ভুল। এদিকে দিপালীর বাবা দিপালীকে কোন অনাথ ছেলের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। গ্রামে তাদের নিয়ে ঝামেলার কারণে সুমন মধুপুর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সুমনের গ্রাম ছাড়ার পর দিপালী তার বাবাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আটটি বছর রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দিপালীর মাকে মরণ রোগে ধরেছে আর তার শেষ ইচ্ছা হলো তাকে বিয়ে দেওয়া। এজন্যই দিপালীকে কাল বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছে।

সুমন সোজা যখন দিপালীদের বাড়ি এসে দেখে তাদের বাড়ি সাজানো, তখন হঠাৎ করে সুমনের বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো। সুমন বাড়ির ভেতরে গিয়ে যখন দিপালীকে কনের সাজে দেখল তখন সে কোন পারলো না। সুমন দিপালীকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে দিপালী সুমনকে দেখে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর দিপালী সুমানকে আর দেখতে পায় না। সুমনকে আবারও তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে.......

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

কিছু গল্পের সমাপ্তি এমনভাবে হয় তখন মনে হয় এটা যদি অন্যরকম ভাবে হত তাহলে কতই না ভালো হতো ভালোবাসার সম্পর্কটা অনেক বেশি গভীর কিন্তু সুমন চাইলেই দিপালীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে নিয়ে এই গ্রাম থেকে চলে যেতে পারত কিন্তু সে এটা করেনি।

এত বছর দিপালী তার জন্য অপেক্ষা করেছে যখন তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো তখন সুমন সফলতা নিয়ে গ্রামে ফিরল কিন্তু তার সেই সফলতা এখন আর কোন কাজে আসবে না কারণ তার প্রিয় মানুষ এখন আর তার হতে পারল না দিপালী হয়তো বা তাকে মন থেকেই ভালোবাসতো তা না হলে একটা মানুষকে দেখার পর সে জ্ঞান হারাবো না জানি না তাদের পরবর্তী জীবনে কি হয়েছে তবে দোয়া করি তারা ভালো থাকুক।

আপনি ঠিক কথায় বলেছেন আপু, কিছু গল্পের সমাপ্তি পূর্ণতা পেলে গল্প গুলো সত্যি অনেক আলাদা হতো। কিন্তু সকল ভালোবাসাই যে পূর্ণতা পাবে এমনটাও নয়। কিছু কিছু ভালোবাসা এমনও হয় যেখানে তার প্রিয় মানুষটির জন্য সব কিছু করতে রাজি। শত প্রতিকূলতার মাঝেও তারা একে অপরকে ছেড়ে যায় না।

ভালো থাকবেন দিদি আপনি।

এত সুন্দর একটি গল্প আমার সাথে শেয়ার করার জন্য, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
গল্পটির সংবেদনশীলতা এবং মানবিক দিক খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। দিপালী এবং সুমনের ব্যক্তিগত সংগ্রাম, একে অপরকে ভালোবাসার ইচ্ছা, কিন্তু একে অপরকে হারানোর বিষাদ সবকিছুই খুব প্রভাবশালী। আপনার গল্পটি পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। আমি আশা করি, এরকম গল্প আমাদের মাঝে আরো বেশি-বেশি শেয়ার করবেন।

গল্পটি পড়তে পড়তে মনে হলো যেন এক অসমাপ্ত ভালোবাসার যন্ত্রণাদায়ক কাহিনি চোখের সামনে ভেসে উঠল। সুমন আর দিপালীর সম্পর্ক, সময়ের নিষ্ঠুরতা, আর সমাজের বাধা সবকিছুই বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। সুমনের ফিরে আসার মুহূর্তটা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী ছিল, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাকে আবারও একা করে দিল।

আপনার লেখার ধরণ খুবই আকর্ষণীয়, পাঠককে একদম গল্পের ভেতরে টেনে নিয়ে যায়। শেষটা যদিও বেদনাদায়ক, কিন্তু বাস্তব জীবনের অনেক গল্পই তো এমন অসমাপ্ত রয়ে যায়। চমৎকার একটি গল্পের জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।