তুমি আমার সেই মাধবীলতা। 💚

in hive-120823 •  13 days ago 

"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......

1000007199.jpgSource

গ্রামে যাকিয়ে শীত পড়তে শুরু করেছে। হাড় কাঁপানো শীতে অসাড় প্রকৃতি। ঠান্ডার সাথে বাতাসও বইছে। কুয়াশার আবরণে ঢাকা চারপাশ। চারপাশে কোন শব্দ নেই তবে মাঝে মাঝে কানে আসতেছে কুকুরের হুংকার। বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। রাস্তার পাশের কবরস্থানের লাইট গুলো টিমটিম করে জ্বলছে।

সদ্য হওয়া নতুন কবরটার উপর মাথা রেখে বসে আছে রাফিদ। দুই হাতে শক্ত করে মাটি ধরে রেখেছে রাফিদ।মাধবীলতা তো তুমি আমার কথা শুনছো? তুমি আমারে কেন বললে না যে, এই জীবনে ভালোবাসা যায় কিন্তু ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়ার স্বপ্ন দেখা যায় না? তাহলে কে আমি শুধুই ভালবাসতাম? তোমাকে পাওয়ার স্বপ্নটা কি আমি দেখতাম না?

যে চোখ দিয়ে আমি তোমায় দেখেছি সেই চোখ চিরকালের মতো বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তোমার মায়া আমার কাটবে না। তুমি আমাকে রেখে চলে গেলে কেন? আমি তো এই মরন যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না! তুমি আমারে এইভাবে একা রেখে চলে যাওয়ার কি খুব দরকার ছিল? তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো, মাধবীলতা?........

1000007198.jpgSource

কোন উত্তর আসে না। রাফিদ তখনো কবরের পাশে বসে কেদেই চলেছে। রাফিদের ভিতর যে কি হচ্ছে তার শুধু মাত্র সেই ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না। সে পুরো পাগলের মত হয়ে গেছে। কিছুদিন যাবত সে কোন কাজই ঠিকমতো করছে না, খাওয়া দাওয়া করছেনা। হঠাৎ কি যেন একটা হলো, রাফিদের মনে হলো মাধবীলতা কবরের ভিতর দিয়ে মৃদুস্বরে তাকে বলছে, এখানে অনেক অন্ধকার, আমার খুব ভয় করছে, তুমি আমার এখান থেকে নিয়ে চলো রাফিদ।

রাফিদ তৎক্ষণাৎ কিছু না ভেবেই বলে উঠলো, তোমার কোনো ভয় নেই মাধবীলতা! আমি আছি তো। তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাব। এই বলে রাফিদ পাগলের মতো হাত দিয়ে কবরের মাটি সরাতে লাগলো। সে যেন নিজের ভেতরে নেই অন্য এক জগতে আছে।

তার বন্ধুরা রাফিদকে বাড়িতে কোথাও না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে লাগলো। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর তারা কবরস্থানের পাশে চলে আসে। এসে তো তারা পুরোই অবাক। তারা রাফিদকে এই অবস্থায় দেখে নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না। রাফিদ যে এরকম একটা কাজ করবে তারা কোনো দিনও ভাবিনি।

1000007200.jpgSource

তারপর তার বন্ধুরা রাফিদকে জোর করে সেখান থেকে ধরে নিয়ে আসে। রাফিদ কোনোভাবে সেখান থেকে আসতে চাচ্ছিল না। সে তার বন্ধুদের চিৎকার করে বলতে থাকে, আমাকে তোরা ছেড়ে দে আমার মাধবীলতা তো অনেক কষ্ট পাচ্ছে। তার বন্ধুরা তাকে জোর করে বাড়ি নিয়ে যায়। রাফিদের কান্না এখনো থামেনি।

আসলে এই কান্না কখনো থামার নায়। ভালোবাসা সত্যিই অনেক নিষ্ঠুর। প্রকৃত ভালোবাসা মানুষকে পাগল পর্যন্ত করে দেয়। বেঁচে থাকুক সকল ভালোবাসা, বেঁচে থাকুক সকল ভালোবাসার মানুষগুলো।

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

কথায় বলে একটা নারী যদি একটা পুরুষের মায়ায় পড়ে তাহলে সে পুরো পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে আবারো বেঁচে থাকার চেষ্টা করে পুরুষ সহজে কোন নারীকে বিশ্বাস করে না। যদি সে নিজের শখের নারী হিসেবে কোন নারীকে একবার নির্বাচন করে তাহলে তাকে পাওয়ার জন্য পাগলের মত কান্না করতে পারে।

আসলে আপনি প্রথম অবস্থায় যে প্রশ্নগুলো আমাদের কাছে করেছেন এগুলো একেবারেই প্রয়োজন আসলে এই পৃথিবীতে ভালোবাসা যায় তবে তাকে পাওয়া যায় কিনা এটা আমার জানা নেই তবে বর্তমান সময়ে অনেকের ক্ষেত্রেই দেখেছি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলে এটা একেবারে ভুল সিদ্ধান্ত নয় কেননা প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য মানুষ কতটা যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে সেটা আমি খুব কাছ থেকে একজনের দেখেছি।

তবে যদি আমাদের জীবন থেকে উপরওয়ালা আমাদের প্রিয় মানুষটাকে কেড়ে নিয়ে যায় তাকে তো আর আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব না রাফিদ তার মাধবীলতার জন্য শুধুমাত্র কান্না করতে পারবে সারা জীবন কিন্তু চাইলেও তাকে আর ফিরে পাবে না তার স্মৃতিগুলো তাকে হয়তো বা ভালো থাকতে দিবে না তবে সে পাগল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ সে তার শখের নারী হিসেবে মাধবীলতা কে চেয়েছে ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটা ভালোবাসার মানুষ ধন্যবাদ চমৎকার গল্প শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। আপনার মন্তব্যটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। পুরুষ মানুষ সহজেই কারোর মায়ায় পড়ে না। কিন্তু একবার কারোর মায়ায় পড়লে তার থেকে কখনোই বের হয়ে আসতে পারে না। যারা তার প্রিয় মানুষকে হারায় তারাই বোঝে এর কষ্ট। ভালোবাসার মানুষটিকে আমরা কখনোই হারাতে চাই না।

ভালো থাকবেন আপু।