জানি আবার দেখা হবে! ☹️

in hive-120823 •  18 days ago 

"নমস্কার বন্ধুরা"! আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। সবাইকে নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আজকে আপনাদের মাঝে আমি এক ভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক.......

1000006231.png

Edit by canva

হঠাৎ দেখা, কাছাকাছি আসা, সারা জীবন একসঙ্গে থাকাই কি আসলে ভালোবাসা? নাকি সমস্ত ভালো, খারাপ আর বিচ্ছেদের পরেও যে অপেক্ষা যে আশা কখনো ফুরায় না তাই ভালোবাসা? আমি মনে করি ভালোবাসা কোন অসাধারণ স্বর্গীয় আনন্দ নয়, বরং এটা আমাদের রোজগার জীবনের সবচেয়ে সাধারণ মূহুর্ত গুলো একসাথে পথ চলতে চলতে একদিন ভালোবাসা হয়ে যায়।

দমকা হাওয়ায় হঠাৎ কাচ ভাঙার আওয়াজে চমকে উঠলো অনন্যা। রনির ছবিটা মাটিতে পড়ে গিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে কাচের টুকরো গুলো। আজ রনির পঞ্চাশ তম জন্মদিন। অনন্যার এখন বয়স হয়েছে, চুলেও পাক ধরেছে। বিগত তিন বছর এই বাড়িটা রনির স্মৃতিতে জুড়ে আছে। রনির আকর্ষিক মৃত্যুতে থমকে গেছে সবকিছু। অথচ মনে হয় কয়দিন আগেই তারা শুরু করেছিল পথ চলা।

1000006232.jpg

জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে হাতে হাত রেখে একই পথে চলা শুরু করেছিল তারা। মিষ্টি মধুর স্মৃতিতে আজ রনি বেঁচে আছে অন্যের মনে ছায়া সঙ্গী হয়ে। আমাদের বাড়ির সব কিছুতেই রনির হৃদ স্পন্দন শুনতে পাই অনন্যা। আজ রানির জন্মদিনে স্মৃতির পাতা উল্টে দেখে বড্ড হাসি পাচ্ছে অনন্যার। কেনো জনি না সে দিন হঠাৎ অনন্যার তার পুরনো দিনের কথা অনেক পড়তেছিল। কিভাবে রনির সাথে তার পরিচয় হয়েছিল, কিভাবে রনি তাকে ভালোবাসার কথা জানিয়েছিল সব কিছু তার মনে করতেছিল। আর রনি ছবির সামনে বসে কাঁদতেছিল।

পুরনো স্মৃতি মনে করতে করতে হঠাৎ অনন্যা মাটিতে পড়ে গেল। বাড়ির লোকেরা এসে তাকে খাটের উপর শুইয়ে দিল। ডাক্তারকে ডেকে আনা হলো। ডাক্তার ভালো করে পরীক্ষা করে অনন্যার মেয়েকে বললেন Sorry অন্বেষা তোমার মা আর নেই। অনন্যার মেয়ে কথাটা শুনে অঝোরে কাঁদতে লাগলো। সে বিশ্বাসই করতে পারছে না যে তার মা তাদের ছেড়ে চলে গেছে। হয়তো প্রতিটা গল্প এখানেই শেষ হয়ে যায়, রয়ে যায় শুধু স্মৃতিটুকু।

1000006229.jpg

অনন্যার মেয়ে একদিন তার মায়ের জিনিসপত্র নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে ছিল। কোন জিনিসের ভিতর সে তার বাবা-মায়ের অনেক পরানো কিছু ছবি খুঁজে পাই। তার সাথে খুঁজে পায় একটা ডাইরি। অন্বেষার মায়ের ডাইরি লেখার অনেক শখ ছিল। সে ডাইরিটির উপরে খেয়াল করে দেখে ডাইরির উপরে লেখা ছিল "জানি আবার দেখা হবে "। ডাইরিটি পড়তে পড়তে তার মায়ের অনেক সুন্দর একটা লেখা তার চোখে পড়ল। লেখাটি হলো.......

মনের কথা, "যতবার দেখি থাকে মনে হয় এ দেখাই শেষ দেখা নয় বহুদিন বহু বছর ধরে দেখে চলেছি এক অদৃশ্য মানবকে। কিন্তু তুমি শুধুই তুমি। জানি আমাদের দুজনের আবারও কোন একদিন দেখা হবে হোক সে ওপারে".....

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

প্রিয় বন্ধু প্রথমেই নতুন বছরের শুভেচ্ছা,
লেখাটা পড়ে খানিকটা প্রিয় মানুষটির কথা মুখের সামনে ভেসে উঠেছিল তবে আমি মনে করি স্বাভাবিক, হয়তো একেই ভালোবাসা বলে, ঐতো আমি আপনার কথার সাথে একমত কাছাকাছি না থেকেও সমস্ত বিচ্ছেদের পরেও প্রিয় মানুষটির কথা যখন আমার মত মনে পড়ে যায় এর নাম কি ভালোবাসা বলে না? আমার তো মনে হয় একেই ভালোবাসা বলে,
অনন্যর এবং রনির গল্পটা শুনে ভীষণ ভালো লাগছিলো,তবে আমার কাছে মনে হয় বর্তমান জগত সংসারে এমন মানুষ পাওয়া বড় মুশকিল তবে হ্যাঁ সত্যি কারের ভালোবাসার মানুষ অবশ্যই আছে। না হলে হয়তো বা ভালোবাসা নামটাই এই জগত সংসারে থাকতো না।। ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ।।

আপু আপনাকে নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আপনি ঠিক কথাই বলেছেন বর্তমানে অনন্যা এবং রনির এর মতো ভালোবাসা খুব বেশি একটা দেখা যায় না। ভালোবাসায় এমন একটি জিনিস যা ব্যাখ্যা করে শেষ করা যায় না।

ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। নতুন বছর আপনার ভালো কাটুক, ভালো থাকবেন ।

Loading...

গল্পটা সত্যিই খুব মনের মধ্যে গিয়ে লাগলো। ভালোবাসা আর স্মৃতির এমন সুন্দর একটা দিক তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শেষের লেখাগুলো তো একদম মন ছুঁয়ে গেল। প্রিয়জনদের স্মৃতি আমাদের জীবনে কীভাবে বেঁচে থাকে, তা খুব সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন। দারুণ লাগলো পড়ে। ভালো থাকবেন সব সময়।

আপু এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে যেখানে সত্যি কারের ভালোবাসা থাকে সেখান থেকে বের হওয়া খুব কষ্ট সাধ্য। এজন্যই হয়তো অনন্যা রনিকে মরার আগ পর্যন্ত ভুলতে পারিনি৷ তার কথা মনে করতে করতে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেছে।

ভালো থাকবেন আপু। নতুন বছর আপনার ভালো কাটুক।

এটা একেবারেই বাস্তব আমাদের জীবনে ভালোবাসা কোন রকম স্বর্গীয় সুখ এনে দেয় না জীবনের সাথে সাথে এটাও কিন্তু আমাদের জীবনের একটা অভ্যাসে পরিণত হয় তবে এটা ঠিক একটা মানুষ যখন একটা মানুষকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসার চেষ্টা করে এবং ভালোবাসে সে মানুষকে কিন্তু সে চাইলেও ভুলতে পারে না।

অনন্যার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে যদিও মানুষটা তাকে ছেড়ে চলে গেছে কিন্তু তারপরেও তাকে বুকে ধারণ করে বেঁচে থাকার চেষ্টায় এই মানুষটা অনেকটা বছর কাটিয়ে দিয়েছে তার মেয়ে যখন তার ডাইরিটা পড়া শুরু করেছে তখন সে বুঝতে পেরেছে তার মায়ের জীবনের মুহূর্তগুলো কতটা সুন্দর ছিল এবং সে কতটা সুন্দরভাবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছিল।

প্রতিটা গল্পের শেষটা এমনই হয় যদি গল্পের শেষটা অন্যরকম হতো তাহলে হয়তো বা এই পৃথিবীর মানুষগুলো আবারো নতুন করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করত তারপরেও দোয়া করি ভাল থাকুক তারাও পারে যেন ওপারে গিয়েও তাদের আবারও দেখা হয়। ধন্যবাদ চমৎকার গল্প শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। আপনি ঠিক কথায় বলেছেন, প্রতিটি গল্পের শেষ যদি শুরু মতো মনোমুগ্ধকর হতো তাহলে পৃথিবীর মানুষ গুলো নতুন করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতো। এখনে অনন্যার ভালোবাসা ছিল একদম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।

ভালো থাকবেন আপু।

ভালোবাসা যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে যেকোন জায়গায় হয়ে যেতে পারে।। ভালোবাসা হওয়ার সময় যতটা আনন্দ অনুভব হয় ঠিক হারিয়ে ফেলার পর তার চাইতে তিন গুণ বেশি কষ্ট হয়।। একটি গল্পের মাধ্যমে ভালোবাসার অনেক কিছু প্রকাশ করেছেন খুবই ভালো লেগেছে পড়ে‌‌