নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার গল্প ।আজকে ভাবলাম বাকি কথাগুলো বলে ফেলি।
পরীক্ষা দিয়ে এসে আমি ভেবেছিলাম একটু ঘুরতে যাব ।অনেক দিনই কলকাতায় এসে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। কলকাতা তো ভর্তি দেখার জিনিস রয়েছে ।সাথে রয়েছে প্রচুর প্রচুর সুন্দর রেস্টুরেন্ট ক্যাফে। কিন্তু সবই অনেক দূরে মানে ,আমার মেসের থেকে বেশ অনেকটাই যেতে হয়।
তাও ভেবেছিলাম পরীক্ষা দিয়ে এসে রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যেবেলার দিকে বেরোবো আমার এক জুনিয়রের সাথে। ওর নাম মহিমা। ও আমার ছোট বোনের মতন বলা চলে। আগে কয়েক মাসের জন্য আমার রুমমেট ছিল । কিন্তু হঠাৎ করে ওর শরীরটাও খারাপ করতে শুরু করে, আর আমি ফিরে এসে সেরকমভাবে আর এনার্জি পাচ্ছিলাম না বাইরে যাওয়ার ।নানা রকম প্ল্যান করা থাকলেও অনেক সময় পরিস্থিতির জন্য সেগুলো হয়ে ওঠে না। সেরকমই হয়েছিল গতকাল।
যখন সন্ধ্যে সাতটা বাজে রুম থেকে বেরিয়ে ভাবলাম ঝিলের পাড়ে গিয়ে বসি। কলকাতায় থাকাকালীন আমার সব থেকে পছন্দের জায়গা ছিল ঝিলপার। এই ঝিলপার এর জন্য কত কবিতা লিখেছি। আর এই ঝিলপাড়ের হাওয়া একশটা এসি র সমান। আসলে প্রাকৃতিক হাওয়া আমরা সবাই মিস করি। তবে এখনো নদীর ধারে অথবা জলাধারের পাশে গেলে এত সুন্দর হাওয়া পাওয়া যায়। যদি আশেপাশে গাছপালা থাকে।
মহিমার সাথে ঝিলপাড়ে গিয়ে দেখলাম ঝিলটা একেবারেই চেঞ্জ হয়নি। দূরের বিল্ডিং এর আলো গুলো ঝিলের জলে কি সুন্দর খেলা করছে। চারিদিক দিয়ে অন্ধকার এবং মাঝে মাঝে একটা আলো-আঁধারি জলের ছবি পুরো ঝিল জুড়ে। কেউ যেন ছবি এঁকে দিয়েছে।
ওখানে বসার সাথে সাথে মনটা শান্ত হয়ে গেল। সারাদিনের পরিশ্রম কোথায় যেন হারিয়ে গেল। আমি আর মহিমা অনেকক্ষণ ধরে নানান বিষয় নিয়ে গল্প করতে লাগলাম। ঝিলপাড়ে প্রচুর খাবারের দোকান রয়েছে। সন্ধ্যে হলেই সেই সমস্ত খাবারের দোকানগুলো খুলে যায়। দোকানদার গুলোর সাথেও আমার বেশ পরিচয় হয়ে গিয়েছিল। তাই এতদিন পরে যখন এসেছি আমার পছন্দের ঝিলপাড়ের পাশের চিকেন মোমো না খেলেই নয়।
আমি এরকম চিকেন মোমো, আর অন্য কোথাও পাইনি। বৃষ্টির দিনে যখন টিপটিপ করে বৃষ্টি হত, সেই অবস্থায় রুম থেকে নিচে নেমে এসে এই কাকুর দোকানে এসে চিকেন মোমো খেতাম। হালকা হালকা বৃষ্টি আর গরম গরম চিকেন মোমো, আমার প্রাণ জুড়িয়ে দিত।
তাই সেদিন প্রথমেই গিয়ে কিনে নিলাম দুই প্লেট চিকেন মোমো। আর সাথে নিলাম ছোট্ট একটা কোলড্রিংস। গল্প করতে করতে চিকেন মোমো খেতে লাগলাম। যদিও এটা বলা ভুল হবে আমি গল্প করছিলাম। মোমো খেয়ে আমি তো গুনগুন করছিলাম। আমার মুখ দিয়ে যেন কোন কথাই বের হচ্ছিল না। আপনাদের মুখে বলে বোঝাতে পারবো না ,মোমো এতটাই সুন্দর খেতে হয় ওই কাকুর দোকানের।
বেশ অনেকক্ষণ ধরে ঝিলপাড়ে বসে ছিলাম প্রায় রাত ন'টা হবে। আমার বন্ধুদের সাথেও দেখা হল, বেশ অনেকক্ষণ গল্প আড্ডা হল। তবে এর মধ্যে আমরা কেউ ছবি তোলার নামও করিনি ।আসলে কিছু কিছু মুহূর্ত এমনই অনুভব করতে ভালো লাগে। ঝিল দেখে খুব কবিতা লিখতে ইচ্ছা করছিল। চার-পাঁচটা লাইন লিখতে গিয়েও আর লিখে উঠতে পারলাম না।
আবার কবে এরকম সন্ধ্যে টুকু ওই ঝিলের সামনে হাওয়ায় নিজেকে লেপটে নিয়ে কাটাতে পারব ,জানিনা। তবে আমাদের জীবনে এরকম কিছু কিছু জায়গা থাকে ,যে জায়গাগুলো আমাদের ভীষণ শান্তি দেয়। এরকম ঝিলপাড়ের মতন আমার আরও একটি জায়গা ছিল কাশ্মীরে।
যাইহোক সেদিনকার সন্ধ্যে টুকু আমার খুব সুন্দর ভাবে কেটেছে ।আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগলো। আপনারা সুস্থ থাকুন ।আবার নতুন কিছু নিয়ে পরের দিন হাজির হব।
আসলেই সত্যি ঝিল এর পানির মধ্যে যখন পাশে থাকা বিল্ডিং এর আলো পড়ছিল। তখন পানির ঢেউয়ে অন্যরকমের খেলা করছিল, ওই বিল্ডিং এর আলো গুলো। এ ধরনের দৃশ্য আসলে সচরাচর তেমন একটা দেখা যায় না। আপনি মহিমা এর সাথে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত পার করেছেন। আমাদের দেশে মোমো পাওয়া যায় না। তাই তেমন একটা খাওয়া হয় না। তবে অবশ্যই যদি কোথাও পাওয়া যায় খাওয়ার চেষ্টা করব।
আপনারা ফটোগ্রাফি এবং লেখা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বৃষ্টির সময় গরম গরম চিকেন এবং মোমো খেতে কতটা ভালো লাগে। ধন্যবাদ ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit