পুজোর দিনের খাওয়া দাওয়া

in hive-120823 •  17 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করছিলাম আমার কালি ঠাকুর দেখতে যাওয়ার গল্প। আমি শেয়ার করেছিলাম ঈশানকে নিয়ে আমি আমার বন্ধুদের সাথে কালীপুজোয় কালী ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। তারপর ঠাকুর দেখার গল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আমি জানিয়েছিলাম আজকে আপনাদের সাথে আরো কিছু মুহূর্ত শেয়ার করে নেব, সেগুলো শেয়ার করতে চলে এসেছি।

20241101_212234.jpg

আমাদের প্ল্যান ছিল সোজা বাড়ি চলে যাওয়ার। কিন্তু এর সাথে খুব খিদে পেয়েছিল। তাই ভাবলাম কোথাও একটা বসে যদি কিছু খেয়ে নেওয়া যায়। সবাই মিলে ঠিক করে নিলাম কাছাকাছি একটি রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের নাম রান্নাবাটি। এই রেস্টুরেন্টের কথা আমার পোস্টগুলোতে আপনারা এর আগেও হয়তো শুনে থাকবেন। মোটামুটি মার্কেটের মধ্যেই এই রেস্টুরেন্টটা রয়েছে। তাই সব জায়গা থেকে এই রেস্টুরেন্টটা বেশ কাছে হয়।

20241106_154320.jpg

আবার আমরা রওনা দিলাম রেস্টুরেন্টের দিকে। যাওয়ার পথে আরো অনেক অনেক ঠাকুর দেখলাম। যেহেতু এটা কালীপুজোর পরের দিন ছিল, তাই দেখলাম অনেক কালি ঠাকুর বিসর্জন শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে যে কালী ঠাকুর গুলো বাড়ির। অমাবস্যা ছেড়ে যাওয়াতে সেগুলো বিসর্জন দিতে রাস্তায় নেমেছে।

তাই রাস্তায় প্রচন্ড ভিড় ছিল। ভিড় ঠেলে ঠেলে অবশেষে রেস্টুরেন্টের কাছে এসে পৌছালাম তখন বাজে পৌনে নটা। রেস্টুরেন্ট এর কাছে পৌঁছানোর সাথে সাথেই আমার মা ফোন করেছে। কত রাত হচ্ছে বাড়ি আসবি কখন, আমি ভীষণ বিরক্ত বোধ করি এই ব্যাপারটা নিয়ে। আমি জানি চারিদিকের এখন পরিস্থিতি খুব খারাপ। বেশি রাত অব্দি ঘোরাফেরা করাটাও ঠিক নয়। তবে পুজোর দিন, রাস্তায় এত লোকজন থাকে। সব থেকে বড় কথা আমি লোকালয়ের মধ্যেই রয়েছি, তাও এত চিন্তা কেন করে কে জানে।

IMG-20241103-WA0003.jpg

ওই যে ফোন করা শুরু করল, আমি যতক্ষণ রেস্টুরেন্টে ছিলাম তার মধ্যে তাই পাঁচ বার ফোন করেছে বাড়ি থেকে। আমি ঠিকমত খেতেও পারছিলাম না। রেস্টুরেন্টে গিয়ে প্রথমে অর্ডার করে নিলাম কুলচা, চিলি চিকেন, পনির বাটার মসলা। যেহেতু রেস্টুরেন্টে অনেক ভিড় ছিল। তাই খাবার দিতে অনেকটা লেট করলো। মোটামুটি কুড়ি মিনিট পার হয়ে যাবার পর খাবার আসলো।

IMG-20241103-WA0002.jpg

ওইটুকুনি সময়ের মধ্যে আমরা বন্ধুরা অনেক গল্পগুজব করছিলাম। অনেক বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পরে দেখা হয়েছে। তাই অনেক কথা ছিল। আমার একটি বান্ধবী তো বেশ অনেক মাস যাবত কৃষ্ণনগর আসেনি। কলকাতাতেই অফিসের কাজে খুব ব্যস্ত ছিল।। তাই ওর সাথে সব থেকে বেশি বকবক করেছি।

খাবার না আসার আগেই মা আমাকে আরেকবার ফোন করেছে। খাবার আসার পর মা আবার ফোন করেছিল। আমি এত বিরক্ত বোধ করছিলাম। আমার বন্ধুদের বাড়ি থেকে এত ফোন আসে না। আমার বাড়ির লোকজন প্রচন্ড চিন্তা করে। তাই এগুলো আমাকে সহ্য করতেই হয়। ছোটবেলা থেকেই এই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। সবাই বলে তুই এখনো বাচ্চা থেকে গেলি। ওই জন্যই তো বাড়ি থেকে এত ফোন আসে।

20241101_213535.jpg

কলকাতাতে থাকার সময় বাড়ি থেকে এত কল করতো না। এই লজিকটা আমি এখনো বুঝতে পারি না। যখন আমি বাইরে ছিলাম তখন এত ফোন করত না। কিন্তু শহরের মধ্যে সামান্য ঠাকুর দেখতে বেরোলে কেন যে এত ফোন করে। যাইহোক এর উত্তর হয়তো আমি কোনদিনও খুঁজে পাবো না। বাড়িতে এসে রাগারাগি করলে, বাবা বলে , তোর ছেলে মেয়ে হলে তখন বুঝবি। তাই আমিও কোন প্রশ্ন করি না। বকা দিলে চুপচাপ শুনি।

20241101_202543.jpg

খাওয়া দাওয়া খুব ভালোভাবেই চলছিল। আমার আরো খাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ফোনের চাপে আর খেতে পারিনি। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি আর ঈশান মিলে টোটো করে রওনা দিলাম। আমার এক বন্ধু আমাকে কিছুটা দূর এগিয়ে দিল। মানে ও টোটোর পিছন পিছন আসছিল। আসলে রাত হয়ে যাচ্ছিল। আর আমি এর আগেও বলেছি আমাদের কালী পুজোতে খুব একটা বেশি ধুমধাম হয় না। আর যে জায়গাগুলোতে প্যান্ডেল অথবা বারোয়ারী সে জায়গাগুলোতেই বেশি লোকজন থাকে।

আমাদের পাড়ার দিকে যেহেতু পুজো হয়নি, তাই এদিকটা বেশ নিঝুম ছিল। যাইহোক টোটো কাকু চেনাশোনা হওয়াতে বাড়িতে ঠিকভাবে নামিয়ে দিয়েছে।। যখন দশটা বাজে তখন আমি বাড়িতে পৌঁছালাম। বাড়িতে এসে দেখি মা-বাবা রেডি হয়ে আছে ঠাকুর দেখতে বেরোবে বলে। তখন বুঝতে পারলাম আমাকে এতবার ফোন করার কারণ। যেহেতু আমি আসছি না ,তাই ওরাও বেরোতে পারছে না।

আপনাদের সকলের সাথে সমস্ত মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগলো। সকলে ভালো থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

মা-বাবার কাছে সন্তান কখনোই বড় হয় না মা বাবা আছে বলেই তো খোঁজ নিচ্ছে ।হয়তোবা এখন বিরক্ত হচ্ছেন বারবার ফোন করছে বলে। আপনার বন্ধুরা হাসাহাসি করছে কারণ ছোটবেলায় যেমনটা করত এখনো ঠিক তেমনটাই করে এই কথা ভেবে।

কিন্তু একটা সময় এই কথাগুলো আপনার খুবই মনে পড়বে এবং তখন আফসোস করবেন। সেই সময়টার কথা আমি উল্লেখ করলাম না আপনি বুঝে নেন। মা-বাবা থেকে দীর্ঘদিন ধরে আছি মায়ের কাছে দুইদিন ফোন দিতে দেরি হলে মা বলে কতদিন আমার সাথে কথা বলিস না। এমনটা করিস কেন প্রতিদিন কথা বলবি।

যাইহোক ভালই লাগলো আপনার আনন্দময় মুহূর্তগুলো পড়তে।

Loading...

আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পুজো দেখতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া কিছু মুহূর্ত। যখন বাহিরে আমরা যাই তখন বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে হয়। যেহেতু আপনারা বাহিরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছেন বাহিরে তাই আপনাকে বাহিরেই খেতে হবে। এবং পূজার সময় রাস্তাঘাটে অনেক ভিড় থাকে এটা আমি ও দেখেছি। যাই হোক রেস্টুরেন্টে গিয়ে আপনারা খাওয়া-দাওয়া করে নিয়েছেন । এটা দেখে ভালো লাগলো ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।