হাঁটাহাঁটি

in hive-120823 •  4 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ।আজকে ভেবেছিলাম হয়তো পোস্ট লেখা হবে না। কারণ আগামীকাল আমার পরীক্ষা ।আগামীকাল পরীক্ষার কারণে আমার মাথাতে আর কোন কিছু কাজ করছে না। আমি সবকিছুই ভুলে ভুলে যাচ্ছি ।হঠাৎ এখন মনে হল পোস্ট লেখা হয়নি। তাই চলে এলাম আপনাদের কাছে।

20240610_190425.jpg

তবে কি পোস্ট করব বুঝতে পারছিলাম না। কিছুদিন আগে একটু ঘোরাঘুরি করতে বেরিয়েছিলাম ,ভাবলাম সেটা নিয়ে পোস্ট করি।বাড়িতে সারাদিন মিস্ত্রি কাজ করে কানের মাথা তো খেয়ে নেয়। মেশিন, আওয়াজ। বাড়িতে যাদের কাজ চলে ,তারাই জানে কত আওয়াজ হয়। যাই হোক এইভাবে সারাদিনটা যায়।

ছাদে গিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করতে পারি না, কারণ আমাদের এখন সিঁড়িতে কাজ চলছে ।পাথরগুলোকে কাটা হচ্ছে। বেশ অনেকদিন ধরেই ভাবি যে রাস্তায় হাঁটতে বেরোবো। কিন্তু হাঁটতে বেড়ানো হয় না ।ছাদে বিকেলবেলা করে একটু হাঁটতাম ।সেটাও আমার বন্ধ হয়ে গেছে। সেদিনকে তাই হঠাৎ যখন রোদ কমে এলো, খুব মন হলো হাটাহাটি করতে বেরোনোর।

20240610_184421.jpg

আর সঙ্গী সাথী বলতে একজনই রয়েছে ।আমার পাশের বাড়ির মৌসুমী বৌদি। বৌদিকে বলার সাথে সাথে বৌদি ও রাজি হয়ে গেল। বৌদি যদিও আমাদের পাশের বাড়িটাই ছিল না। মামার বাড়িতে গিয়েছিল। তাও বললো কোন অসুবিধা নেই। মামার বাড়ি থেকে এসে আমার সাথে বেরোবে। যেহেতু বৌদির মামার বাড়ি থেকে বৌদি শ্বশুরবাড়ির দূরত্ব বেশি নয়। পায়ে হেঁটে খুব জোর তিন মিনিট হবে ।তাই কিছুক্ষণের মধ্যে বৌদি চলে এলো।

20240610_184531.jpg

কিন্তু সন্ধ্যেবেলায় মা কিছুতেই বের হতে দিতে চাইছিল না ।বাবাও রাগারাগি করছিল। কিন্তু সেদিন আবার বৌদির বড় মামার জন্মদিন ছিল ।আর বৌদির বড় মামার জন্য কেক কিনতে হতো। তাই আমি বললাম বাবা মাকে বুঝিয়ে এবং কেক কেনার নাম করেই হাঁটাহাঁটি করতে বেরোলাম। বাবা বের হওয়ার আগেই বললো, টোটো করে সোজা যাবি কেক নিয়ে চলে আসবি ।হাঁটাহাঁটি করার দরকার নেই।

কিন্তু মন মানে না ।আমি আমার বাড়ি থেকে হাঁটা শুরু করলাম বৌদির সাথে। মার্কেট যেতে মেনরোড পড়ে । ধার দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। কারণ বড় বড় বাস ,গাড়ি গুলো খুব স্পিডে যেতে থাকে। তাও সেদিনকে গাড়ি অল্প ছিল ।তাই আমরা ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে এগোতে লাগলাম।

20240610_191722.jpg

আমাদের এলাকা ক্রস করে রাম মন্দিরের সামনে দিয়ে ,ঘাটের ধারে সামনে দিয়ে এগোতে লাগলাম ।তারপরে পড়ল ষষ্ঠী তলা ।সেখান দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম কাঠুরিয়া পাড়া। কাঠুরিয়া পাড়া ছাড়িয়ে চ্যালেঞ্জের মোড় ,সোনা পটি। এভাবেই একটা কেকের দোকানে পৌঁছালাম। সেই কেকের দোকানে পৌঁছে বৌদির কেক পছন্দ হলো না। কারণ বৌদি ছোটর মধ্যে সুন্দর চাইছিল।

20240610_185744.jpg

তারপরে সেখান থেকে আর একটা কেকের দোকানে চলে গেলাম। সেই কেকের দোকানটা যেখানে অবস্থিত ,সেখানকার নাম হলো খাই খাই গলি। খাই খাই গলিতে দুটো কেকের দোকান রয়েছে। তার মধ্যে একটি কেকের দোকানে কেক নিলাম। এত হাঁটাহাঁটি সত্ত্বেও আমরা কিছু খাইনি। কারণ বেশ হাওয়া উঠেছিল।

20240610_184540.jpg

ঝর ঝর ভাব ।এ কারণে আমিও ভয় পাচ্ছিলাম। বাই চান্স যদি ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়, তাহলে বাড়ি যাওয়ার সমস্যা হবে ।বাড়ি যাওয়া যতটা না সমস্যা হবে, তার থেকেও বড় কথা আমরা বাড়ি গিয়ে খুব বকা খাব। আমার তো বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোই লাগে। বৃষ্টি এলে ভিজতে ভিজতে গেলে, আমার কোন সমস্যা নেই ।কিন্তু বাড়িতে গিয়ে যে মায়ের বকুনি শুনতে হবে, সেটা নিয়ে তো ভয়। এ কারণেই ষষ্ঠী তলা ছাড়িয়ে যখন বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছি, যখন জোরে হাওয়া দিতে শুরু করল ,আমি আর হাঁটলাম না।

20240610_191312.jpg

বৌদিকে বললাম, চলো টোটো ধরে নিই। তারপর টোটো করে আমি আর বৌদি বাড়ি চলে আসলাম ।আমরা বাড়ি ঢোকার সাথে সাথে জোরে বৃষ্টি শুরু হল। ওয়েদারটা পুরো ঠান্ডা হয়ে গেল ।গরমের মধ্যে ঘামতে ঘামতে হাটাহাটি করেছি। শুধুমাত্র নিজের কিছু ওজন কমানোর জন্য ।যদিও আমি মোটা নই। কিন্তু শরীর ঠিক রাখতে মাঝেমধ্যে একটু হাঁটাহাঁটি, এক্সেসাইজ করা প্রয়োজন।

বিকেলের ক্লান্তিটা পুরো দূর হয়ে গেল হাঁটাহাঁটি আর এই বৃষ্টির কারণে। আপনাদের সাথে এই মুহূর্তগুলো এবং রাস্তার দৃশ্যগুলো শেয়ার করেও আমার ভালো লাগলো। সকলে ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে একটু হাঁটাহাঁটি না করলে দম বন্ধ হয়ে আসে। মাঝে মাঝে এজন্য বাইরে যেতে হয়। যাহোক কেকের উসিলায় বের হতে পেরেছিলেন বাসা থেকে। ভাগ্যভালো যে ঝড়ে আটকা পড়তে হয়নি। যেখান থেকে কেক নিয়েছেন সেই জায়গাটার নাম আমার খুব পছন্দ হয়েছে। খাই খাই গলি 😄।
ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।

যারা প্রকৃতি প্রেমী মানুষ, ভ্রমণ প্রিয় মানুষ তারা একাধারে রুমে আটকে থাকা মোটেও পছন্দ করেনা।আপনি কেক কেনার কথা বলে বাসার বাইরে ঘুরতে যান।সঙ্গী হিসেবে আপনি মৌসুমী বৌদিকে বেচে নেন।এরপর আপনারা অনেক বড় একটা পথ পাড়ি দেন।ফেরার পথে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলে আপনারা টোটো করে বাসায় ফিরেন।ভালো লাগলো আপনার হাটাহাটি সম্পর্কে পড়ে।ধন্যবাদ।

ইনশাল্লাহ খুব সুন্দর ভাবে আপনার পরীক্ষা হবে এবং আপনি ভালোভাবে পরীক্ষা দেবেন এই কামনা করি। পরীক্ষা থাকলে অন্য কিছু মাথার মধ্যে আর নিতে ইচ্ছা করে না। কোন কিছু ভালো লাগে না এটাই স্বাভাবিক।

গত কয়েকদিন ধরে আপনাদের বাড়ি মিস্ত্রি কাজ করছে এবং সিঁড়ির ওপরে কাজ চলছে বলে ছাদের উপরে যেতে পারছেন না এবং আপনি ভেবেছিলেন বাহিরে একটু হাঁটাহাঁটি করতে যাবেন। আপনার সঙ্গে আপনার পাশের বাসার মৌসুমী বৌদি তাকে বলার সাথে সাথে সেও রাজি হয়ে যায় দুজনে অনেক হাঁটাহাঁটি করেছেন আপনার পোস্ট পড়ে বুঝা যাচ্ছে।

ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

এক দিন হাঁটাহাঁটি করে কি হবে। শরীর ঠিক রাখতে গেলে রোজ হাটতে হবে। তবে শরীর ঠিক থাকবে। এখন নয় বাড়িতে মিস্ত্রি কাজ করছে ।কিন্তু আমার মনে হয় যখন মিস্ত্রি কাজ করে না ।তখন তুমি ছাদে ওঠো কিনা আমার সন্দেহ আছে। যাইহোক আমি চাই পরীক্ষার ভালোভাবে দাও। পরীক্ষার পর আবার তোমাকে নিয়ে হাটতে বেরোবো।

সন্ধ্যার পরে এমনিতেই হাঁটাহাঁটি করতে বেশ ভালো লাগে। তাই আপনি আপনার প্রিয় সঙ্গীকে নিয়ে হাতটা বের হয়ে গেলেন। আপনার শেয়ার করার প্রত্যেকটা ছবি অসাধারণ ছিল। আসলে সন্ধ্যার পরে হাঁটাহাঁটি করা এবং কিছুটা সময় বাহিরে পার করার মধ্যে কিন্তু অন্যরকম একটা আনন্দ আছে। ঝড় বৃষ্টি আসার ভয়ে আপনারা টোটো ধরে বাসায় ফিরে এসেছেন। ধন্যবাদ হাঁটতে যাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।