নমস্কার বন্ধুরা, আজকে আমি অনেকদিন পর একটু রেসিপি নিয়ে হাজির হলাম। আমার গ্যালারি ভর্তি রেসিপি। ভালো মন্দ যা রান্না করি সেগুলোরই ছবি তুলে রেখেছি। কিন্তু শেয়ার করা হয়ে ওঠেনা সময়ের অভাবে। এই রেসিপিটাও অনেকদিন আগে আমি ছবি তুলে রেখে ছিলাম এবং আপনাদের শেয়ার করব বলেই ছবিগুলো তুলেছিলাম। কিন্তু এতদিনও শেয়ার করা হয়নি। আজ যখন পোস্ট করতে গিয়ে ভাবছি কি পোস্ট করব, তখনই এই রেসিপি দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না, কারণ এই রেসিপিটা আমার এমনিও অত্যন্ত পছন্দের ।
আজকে আমি শেয়ার করতে চলেছি বাসন্তী পোলাও তৈরি করার রেসিপি। বাসন্তী পোলাও এর রংটাও যেমন আমার পছন্দের ।তেমন এই খাবারটাও আমার খুব পছন্দের। পুজোর প্রসাদে যখন পোলাও দেখি তখন তো নিজেকে আর সামলানোই যায় না ।তাই আমি যেখানে যেখানে পোলাও প্রসাদ হয়, আগে থেকেই বলে রাখি। যেন সেই প্রসাদ আমার জন্য তারা রেখে দেয় ।
আমার পরিচিতদের মধ্যে কারোর বাড়িতে পুজো হলে তারা যখন আমার কাছ থেকে শুনতে চায় কি রান্না করলে ভালো হবে ,আমি তাদেরকেও পোলাও রান্না করতে বলি। আসলে বাসন্তী পোলাও জিনিসটা খুবই ভালো। এবং বেশ কম খরচে খুব সুন্দর ভাবে কম সময়ের মধ্যে এই রান্না হয়ে যায় ।তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির পুজোপার্বণে পোলাও রান্না করা হয়।
বাসন্তী পোলাও এর সাথে সমস্ত কিছুই বেশ সুন্দর লাগে। আমার বাসন্তী পোলাও এর সাথে কাশ্মীরি আলুর দম কিংবা বাসন্তী পোলাও এর সাথে মুরগির মাংস কষা অথবা পোলাওয়ের সাথে মটন কষা খুব ভালো লাগে খেতে।এক একজন এক এক রকম ভাবে বাসন্তী পোলাও খেয়ে থাকে। কিছু মানুষের রান্নার উপকরণ গুলোও আবার আলাদা হয় পোলাওয়ের ক্ষেত্রে।
অনেকে বাসন্তী পোলাওয়ে হালকা একটু গোলাপজল ব্যবহার করে। তবে আমি এসব কিছুই করি না ।আমি খুব সহজ পদ্ধতিতে পোলাও তৈরি করি এবং সত্যি বলতে পোলাও খেতে খুবই ভালো হয়। যখনই সময় পাই বাড়িতে পোলাও রান্না করে ফেলি। ফ্রাইড রাইস এ যেমন অনেক সবজি কাটার ঝামেলা থাকে, পোলাওয়ের ক্ষেত্রে সেটা থাকে না।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক বাসন্তী পোলাও এর রেসিপি। তার আগে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি উপকরণ গুলি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | গোবিন্দভোগ চাল | ৭০০ |
২ | চিনি | এক কাপ |
৩ | কাজু কিসমিস মিশিয়ে | ১০০ গ্রাম |
৪ | তেজ পাতা | দুটো |
৫ | লবঙ্গ | ৪ তে |
৬ | দারুচিনি | তিনটে টুকরো |
৭ | এলাচ | ৩ টে |
৮ | ঘি | পাঁচ চামচ |
৯ | জিরে গুঁড়ো | দের চামচ |
১০ | হলুদ | দুই ছোট চামচ |
১১ | নুন | দের চামচ |
১২ | সাদা তেল | দুই চামচ |
১৩ | জল | পরিমাণ মতো |
প্রথমে গোবিন্দভোগ চাল ভিজিয়ে রেখেছিলাম প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য।
৩০ মিনিট পর জল ঝরিয়ে নিয়ে চাল গুলোকে একটি পাত্রে নিয়ে নিয়েছি।
এবার চালের মধ্যে এক এক করে মসলা দিয়ে দেব। দিয়ে দিচ্ছি হলুদ গুঁড়ো ,জিরের গুঁড়ো এবং নুন। তারপর মসলাগুলোকে ভালোভাবে চালের সাথে মিশিয়ে নিলাম।
এবার দিয়ে দেব এর মধ্যে প্রায় আড়াই চামচ মত ঘি। মসলা এবং ঘি সমস্ত কিছু ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পরে পাত্রটা ঢাকা দিয়ে রেখে দেবো। প্রায় আবার কুড়ি থেকে ত্রিশ মিনিটের জন্য এভাবে ঢেকে রাখতে হবে।
এবার কড়াই গরম করে তাতে এক চামচ ঘি দিয়ে দেব ।ঘি গরম হলে দিয়ে দেবো কাজু ,কিসমিস পরিমাণ মতো।
কাজু কিসমিস হালকা হালকা করে ভেজে তারপর তুলে নেব।
ওই কড়াইয়ের মধ্যেই আর এক চামচ ঘি আর দুই চামচ সাদা তেল দিয়ে গরম হয়ে গেলে তাতে দিয়ে দেব তেজপাতা ,দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ। সাথে দেবো আদা কুচি এবং সমস্ত কিছু কয়েক সেকেন্ডের জন্য ভেজে নেব।
এবার ঢেকে রাখা চালটা দিয়ে দেব এবং একদম লো আঁচে হালকা হালকা করে চাল গুলো ভেজে নেব। বেশি ভাঁজলেও চলবে না। চালগুলো যাতে দানা দানা মত থাকে,তাই একটু ভেজে নিতে হবে।।
এবার এর মধ্যে দিয়ে দেব জল। পরিমাণ মতন জল দিতে হবে। পোলাও রান্না করতে জলের পরিমাণ টাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।। জল এমন ভাবে দিতে হবে যাতে বেশিও হয় না। চাল গুলো ডুবে থাকবে এবং জলে স্তরটা চালের উপর থেকে এক কর অবধি থাকবে।
জল দেওয়া হয়ে গেলে দিয়ে দেব কাজু কিসমিস। সাথেই দিয়ে দেবো চিনি। পোলাওয়ে অনেকে চিনি বেশি খায়, আবার অনেকে কম খায়। যে যার পছন্দ মতো চিনির পরিমাণ ব্যবহার করতে পারেন।
তারপর চালের সাথে সমস্ত কিছু মিশিয়ে নিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিতে হবে। এই সময় গ্যাসের আঁচ লো থেকে মিডিয়ামের মধ্যে রাখতে হবে। প্রায় ১৫ মিনিট এভাবেই রাখতে হবে।
১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুললে দেখতে পারবেন চালগুলো সিদ্ধ হয়ে এসেছে। তখন গ্যাসের আঁচ একেবারে আস্তে দিয়ে একটু খুন্তি দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।
আর এই ভাবেই তৈরি হয়ে যাবে বাসন্তী পোলাও। এবার আপনারা পছন্দ মতো তরকারির সাথে এই পোলাও সবাইকে সার্ভ করুন।।
আশা করছি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। নতুন কিছু নিয়ে আবার পরে হাজির হব। আজ এখানেই শেষ করছি।
তোমার বাসন্তী পোলাও রেসিপিটা সত্যিই খুব সুন্দর করে লিখেছ। আমিও চেষ্টা করব না বাড়িতে বাসন্তী পেলাম তৈরি করার। আসলে পোলাও পুজোর কাজেও আমরা ব্যবহার করি। এই সুন্দর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি, আমি গতরাত থেকে বেশ কিছু পোস্টে মন্তব্য করার সময় আপনার মন্তব্য চোখে পড়েছে। নিঃসন্দেহে আপনার মন্তব্য একদমই নিখুঁত। কিন্তু এই মন্তব্য গুলো তখনই কাউন্ট হবে যখন আপনার মন্তব্যে একশত বিশটি বর্ণ অথবা পঞ্চাশের বেশি শব্দ থাকবে। আপনাকে অনুরোধ করবো মন্তব্যের শব্দ সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য। তাহলে দেখবেন সপ্তাহ শেষে আপনার সক্রিয়তা অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Your post has been successfully curated by our team via @steemdoctor1 at 35%.
Thank you for your committed efforts, we urge you to do more and keep posting high-quality content for a chance to earn valuable upvotes from our team of curators and why not be selected for an additional upvote later this week in our top selection.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রেসিপিটি দেখে জিভে জল এসে গেলো।কালার কম্বিনেশন দেখে মনে হচ্ছে এখনেই খেয়ে ফেলি।আপনি বাসন্তী পোলাও রেসিপিটি খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।প্রতিটি দ্রব্যের পরিমান খুব সুন্দরভাবে উল্লেখ করেছেন। আর আপনার করা প্রতিটি ধাপের ব্যাখ্যা অসাধারণ ছিলো।আমাদের মাঝে এতো সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাসন্তী পোলাও অনেক বার এই খাবারের নামটি শুনেছি। অবশ্যই এটা অনু সুস্বাদু না হলে এতোটা আলোচনায় থাকার কথা না।
আপনার রন্ধন-প্রনালীর প্রতিটি ধাপ সহজ এবং স্পষ্ট হয়েছে। মনে হচ্ছে এবার মাকে বলে একবার বাড়িতেই খেয়ে দেখতে হবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি রন্ধন-প্রনালী আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাসন্তী পোলাও নামটা অনেকবার শুনেছি কিন্তু কখনো তৈরি করা হয়নি। আসলে হলুদ রঙের পোলাও হবে এটা মনে হলেই কেমন যেন লাগছিল।গতকাল আপনার পোস্টটি পড়ার ও ছবিগুলো দেখার সাথে সাথে কেন যেন মনে হলো পোলাওটা একদিন তৈরি করে দেখতে হবে। খুব ভালো করে তাই আপনার রেসিপিটি পড়েছিলাম।
আজকে শনিবার আমাদের এখানে ছুটির দিন বিধায় আমি ঠিক করে ফেললাম যে আজকে এই পোলাও রান্না করবো। অবশেষে সত্যিই
আপনার রেসিপি ফলো করে তৈরি করে ফেললাম। আমার আজকের পোস্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে। তবে আপনাকে অবশ্যই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার বাসন্ত পোলার রেসিপিটা আসলে অনেক সুন্দর ছিল, এবং দেখলে খেতে মন চাচ্ছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আমি আশা করি ভবিষ্যতে আরো অনেক সুন্দর রেসিপি আমরা আপনার কাছ থেকে দেখতে পাবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রতিটি মানুষের পছন্দের কিছু খাবার থাকে যেমন আপনার বাসন্তী পোলাও অনেক পছন্দ।। আর পছন্দের জিনিস দেখলেই খেতে ইচ্ছে করবে এটাই স্বাভাবিক।।
খুবই চমৎকারভাবে ধাপে ধাপে দেখিয়েছেন বাসন্তী পোলাও রান্না করার নিয়ম।। বাসন্তী পোলাও দেখে কিন্তু লোভ লেগে গেছে দিদি একা একা খেলে কিন্তু হবে না 🤣🤣
ধন্যবাদ এত সুন্দর রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাসন্তী পোলাও নামটা শুনে কেমন যেন পেটের ভেতর খিদে খিদে ভাব চলে আসলো। আসলে আপনার প্রথম ফোটোগ্রাফিটা অসাধারণ হয়েছে। যেটা দেখতে এতটাই লোভনীয় দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে এখনই রান্না করে খেয়ে ফেলি। চমৎকারভাবে কিভাবে অল্প খরচের মধ্যে বাসন্তী পোলাও রান্না করা যায়। সেই বিষয়টা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ইনশাল্লাহ অবশ্যই রান্না করার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ চমৎকার রেসিপি আপনি আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit