নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার বাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মী পূজোর মুহূর্তগুলি শেয়ার করতে চলেছি।
যদিও লক্ষ্মীপূজো অনেকদিন আগেই হয়ে গেছে। এ বছরে লক্ষ্মীপূজা ছিল ১৬ এবং ১৭ই অক্টোবর। আর আমাদের বাড়িতে ১৭ তারিখে পুজো হয়েছিল। ১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার ছিল। দিনটি ভালো ছিল বলে মা সেদিনকেই পুজো করেছিল।
ছোট থেকেই দেখে এসেছি আমাদের বাড়িতে প্রত্যেক বছর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়। আর সত্যি বলতে আমার মনে হয় এই পুজোটি প্রত্যেক হিন্দু ঘরে এই সময় হয়ে থাকে। অনেকের সারা বছরে অন্যান্য সময় বাড়িতে লক্ষ্মীপূজো হয় কিন্তু এই কোজাগরি লক্ষ্মীপূজো যেটা দুর্গা পূজোর পরেই হয়ে থাকে সেটা সকলের বাড়িতেই প্রায় করা হয়।
হিন্দু মতে লক্ষ্মী দেবী হলেন ধন-সম্পদের এবং সুখ শান্তির দেবী। সংসারের সুখ শান্তি যাতে বজায় থাকে এবং সংসারে যাতে অর্থের অভাব না হয় এ কারণে এই দেবীকে পুজো করা হয় যুগ যুগ ধরে। দেবীর মাহাত্ম্য এর কথা আমাদের হিন্দু ঘরে ঘরে সকলের বাড়িতে এটি বইয়ে লেখা আছে। সেই বইটির নাম হল লক্ষ্মীর পাঁচালী। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে প্রত্যেক সপ্তাহের বৃহস্পতিবার করে লক্ষ্মীর পাঁচালী পড়া হয়। এবং পাঁচালী কথায় মা লক্ষ্মীর পূজা প্রচারের সকল ঘটনা উল্লেখ করা রয়েছে।
ছোটবেলায় আমি দেখতাম আমার ঠাকুমা খুব ধুমধাম করে আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো করতো। আমার পিসিরা এবং আমাদের পরিবারের সকলে সেদিন আমাদের বাড়িতে আসতো। এর সাথেই পাড়ার সকলকে এই দিনকে নিমন্ত্রণ করা হতো।। আমার ঠাকুরমা বেঁচে থাকাকালীন পুজটি সন্ধ্যাবেলা করা হতো। বলা হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো সন্ধ্যাবেলাতেই করতে হয়।।
ঠাম্মা চলে যাওয়ার আগেই আমার মাকে সমস্ত পুজোর বিধি এবং নিয়ম শিখিয়ে দিয়েছিল। সেই সূত্রে আমিও সকল পূজার নিয়ম জানি। কিন্তু আমাদের পুজো এখন দুপুরের দিকে হয়। আমাদের যিনি সারা বছর পুজো করেন। অর্থাৎ যে ব্রাহ্মণ আছেন, তিনি কোনমতেই সন্ধ্যাবেলায় সময় বার করতে পারেন না। তাই দুপুরেই পূজা করতে হয়। এবারে যেহেতু ১৭ তারিখে বিকেলের আগেই পূর্ণিমা ছেড়ে যাওয়ার কথা। তাই দুপুরে পুজো হয়েছিল।
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে মায়ের সাথে লেগে পড়েছিলাম সমস্ত কাজে। পাশের বাড়ির কাকিমা যেহেতু বাড়ি ছিল না তাই আমার মা একটু হিমশিম খাচ্ছিল। কারণ সবাই মিলে হাতে হাতে কাজ করলে খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। সব থেকে বড় কথা হল আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মীপূজো শুধু হয় না। এর সাথে নারায়ণ পূজো হয়ে থাকে।
যদিও যখন ঠাকুমা বেচে ছিলেন তখন শুধুমাত্র লক্ষ্মী পূজোয় হত। কিন্তু আমার মা বারবার বলে যে শুধু শুধু লক্ষ্মী পুজো করতে মায়ের কেমন লাগে। এ কারণেই লক্ষ্মী ঠাকুরের সাথে নারায়ণকেও পূজা করা হয় সেই দিনে। আর এর জন্যই পূজোর আরো জোগাড় বেড়ে যায়। লক্ষ্মী পূজার বাজার করা থেকে শুরু করে পূজো হওয়া, এবং তারপরে বাড়িতে লোকজন আসলে সকলকে খেতে দেওয়া। সবকিছুই একা হাতে করা সম্ভব না। তাই মায়ের সাথে সাথে আমিও থাকি।
প্রত্যেক পূজার মতন এবারেও আমার পাশের বাড়ির মৌসুমী বৌদি চলে এসেছিল আমাদের বাড়িতে। ও অনেকটা হাতে হাতে করে দিয়েছে। পুরো সমস্ত ফল ওই কেটেছে। সবাই মিলে টুকটুক করে কাজ করলে খুব তাড়াতাড়ি জোগাড় হয়ে যায়। পুজোতে যেহেতু নারু , মোয়া সমস্ত কিছু বানাতে হয়, এর সাথেই ঠাকুরের ভোগ রান্না করা। তাই প্রচুর কাজ থাকে।
ছবিগুলির মাধ্যমে আজকে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। বাকি কথা আগামীকাল শেয়ার করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit