শিল্পাচার্য নন্দলাল বসু সম্মান

in hive-120823 •  22 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। কিছুদিন আগে পোস্টে আমি শেয়ার করেছিলাম আমাদের কৃষ্ণনগরের একটি হেরিটেজ ভবনের কথা। এবং সেখানকার ইতিহাসের কথা। সাথে জানিয়েছিলাম সেখানে নন্দলাল বসুর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের দিন কি কি হয়েছে আজকে পোস্ট এ শেয়ার করব।

20241203_170445.jpg

প্রথমেই অনুষ্ঠান শুরুতেই আমার উদ্বোধনী সংগীত ছিল। আমি একটি উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেছিলাম। আমি গিয়েছিলাম - " আমার মাথা নত করে দাও "। এটি রবীন্দ্র সংগীত। এটি পূজা পর্যায়ের গান। গানটি উদ্বোধন সংগীত হিসেবে ও গাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই আমি গানটি গেয়েছিলাম। আমার গান গাওয়ার পর এক এক করে উপস্থিত অতিথিদের নন্দলাল বসু এবং কাজী নজরুল ইসলামের ফটোতে ফুল অর্পনের জন্য ডাকা হয়েছিল।

1000181251.jpg

তারপর কটেজের বাইরে যে কাজী নজরুল ইসলামের মূর্তিটি ছিল সেখানে মাল্যদান করা হলো। তারপর পুনরায় ঘরে ফিরে এসে, নন্দলাল বসু সম্মান যাদের দেওয়া হচ্ছে, অর্থাৎ চিত্রশিল্পী শ্যামা রায় এবং শিল্পী নিরঞ্জন শীল মহাশয়কে সম্মান জ্ঞাপন অনুষ্ঠান শুরু হল। প্রথমেই চিত্রশিল্পী নিরঞ্জন শীল মহাশয়কে মানপত্র, উত্তরিয়,মিষ্টান্ন
, পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেওয়া হলো।

20241203_164716.jpg

এই সমস্ত ছবি আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এবার এর সাথেই আমাদের চারুকলা সোসাইটির সদস্য আমাদের বাপি কাকা যিনি আমার বাবার কাছেও কাজ করেন মানে আমাদের কারখানার সদস্য। তার হাতের তৈরি নন্দলাল বসুর ফাইবারের মিউরালটি ওনার হাতে তুলে দেয়া হলো।

1000181250.jpg

কিছুদিন আগে পড়ে গিয়ে কাকার হাত ভেঙে গিয়েছে। প্লাস্টার হাতে থাকা অবস্থাতে একহাতে মূর্তিটি তৈরি করে ফেলেছে কিভাবে তা ভগবান জানে। আসলে ইচ্ছা থাকলে সব হয়। ভালবাসলে সব কিছুই করা যায়। এ কথাটা গত কাল আমাকে বুঝিয়েছে আমারই এক প্রিয় জন।

20241203_170449.jpg

যাইহোক আমরা সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে ওই হাত নিয়ে কিভাবে দুটো কাজ করে ফেলল। নন্দলাল বসুর ফাইবারটি খুবই সুন্দর দেখতে ছিল। সেই ছবিও আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

তারপরে ঠিক একইভাবে আমাদের আরেক চিত্রশিল্পী শ্যামা রায় মহাশয়া কে বরণ করে নেওয়া হলো। এই সময় আমার বাবা হঠাৎ করে উপস্থিত হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই বাবার থাকার কথা, কিন্তু সেটা হয়নি। বাবার কিছু কাজের চাপের জন্য। বাবা হঠাৎই সেই সময় এসে পড়ে।

20241203_172943.jpg

তারপরে আরো অনেক কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এবং তারপর অর্থাৎ তার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের অতিথিরা বক্তৃতা রাখেন। বক্তৃতা রেখেছিলেন চারুকলা সোসাইটির সভাপতি। এবং আরো বিশিষ্ট মানুষেরা। এভাবেই খুব সুন্দর ভাবে অনুষ্ঠান চলেছে সেদিন।

আমার বক্তৃতা গুলির মধ্যে কিছু বক্তৃতা এতই সুন্দর লেগেছে, যে আমি বলে বোঝাতে পারবো না। তার মধ্যে নিরঞ্জন শীল মহাশয়ের তার ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা আসার গল্প, এবং তার চিত্র চর্চা কিভাবে শুরু হয়েছে তা নিয়ে গল্প আমার মন ছুঁয়ে গেছে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন সেই সময় এত ছবি আঁকা বেশি ছিল না। গান-বাজনা থাকলেও ছবি নিয়ে কেউ মাতামাতি করত না। অত্যন্ত গ্রামের মধ্যে গিয়ে তিনি সকলকে ছবি আঁকায় উদ্ভূত করেছেন। নিজের স্কুল খুলেছেন। বিনা পয়সায় ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের শিক্ষা দিয়েছেন।

20241203_170428.jpg

এখন তার ছাত্ররা কত বড় হয়ে গেছে, তার উদ্যোগে প্রচুর গ্রামে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় মনোনিবেশ না করতে পারলেও অন্তত ছবি আঁকতে শিখে গেছে। তার জীবনের গল্প আমার সব থেকে বেশি মজা লেগেছে। তার ছবি আঁকা কিভাবে শুরু হয় তিনি খুব ভালোভাবে ব্যক্ত করেছেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

অনুষ্ঠানের প্রতিটি মুহূর্ত এবং অভিজ্ঞতা পড়ে মন ছুঁয়ে গেল। নন্দলাল বসু এবং কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা, চিত্রশিল্পীদের সম্মান এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসনীয়। নিরঞ্জন শীল মহাশয়ের গল্প বিশেষভাবে অনুপ্রেরণাদায়ক। ধন্যবাদ এত সুন্দর স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।