নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আমি আপনাদের সকলের সাথে লক্ষ্মী পূজার কথা শেয়ার করেছি। এবং জানিয়েছিলাম আজকেও আপনাদের সাথে পুজো নিয়ে অনেক কথা বলব। তাই পূজোর আরো অনেকগুলো মুহূর্ত নিয়ে আপনাদের সকলের কাছে হাজির হলাম। কাল যেটুকু লিখেছি তারপর থেকে শুরু করছি।
যাইহোক সকালবেলায় স্নান সেরে উঠে প্রথমে বৃহস্পতিবার এর পুজো সারলাম। যেহেতু বৃহস্পতিবারের পুজো করতে অনেকটা সময় লাগে। তাই ওই পূজোয় আগে করে নেওয়া হলো। সারা বাড়ি জুড়ে নিজের মন মতো করে আলপনা দিলাম। আর এমনিতেও বৃহস্পতিবার করে বাড়িতে আলপনা দিতে হয়।
আমি যতক্ষণ পূজো সারছিলাম ততক্ষণ আমার মা, বাড়ির রান্না এগিয়ে রেখেছিল। সেদিন এক তরকারি ভাত। এছাড়া আর কিছু হয়নি। কারণ এমনিতেও পুজোর ভোগ রান্না করতে হবে। আমার বৃহস্পতিবারের পুজো অর্থাৎ ঘরের পূজোর সারা হয়ে গেলে। তারপরে আমি লেগে পড়লাম লক্ষ্মী পূজোর আয়োজনে। মাও বাড়ির সমস্ত রান্না সেরে নিয়ে আবার একবার স্নান সেরে নিল। তারপরে পুজোর ভোগ রান্না শুরু করল।
প্রথমে নারু এবং মোয়া জাতীয় খাবারগুলোকে আমরা বানিয়ে নিলাম। তারপর সেটা হয়ে গেলে মা চলে গেল পুজোর আয়োজন করতে। আর আমি এদিকে ঠাকুরের জন্য ভোগ রান্না করা শুরু করলাম। প্রত্যেকবার যেকোনো পূজোতেই আমি নিজের হাতে পোলাও রান্না করে থাকি। সেটাই করছিলাম। সাথে লুচি , পায়েস, আলুর দম। এর মধ্যেই মৌসুমী বৌদি এসে ফল কাটা শুরু করল।
আমি পুজোর দিনগুলোতে বিশেষ করে এই লক্ষ্মীপূজোর দিনে একটু আলতা পড়ে থাকি। তাই পূজোর মাঝখানে একবার উঠে পায়ে আলতা পড়ে নিয়েছিলাম। এর সাথে অনেক অনেক ছবি তুলেছি নিজের।
ভোগ রান্না বসিয়ে আমি মাঝেমধ্যে লক্ষ্মীর আসন গোছাতে লেগে যাচ্ছিলাম। লক্ষীর আসন এবং নারায়ণ ঠাকুরের আসন গোছানোর নিয়ম কানুন আলাদা। তাই সেগুলো ঠিকভাবে গোছাতে হয়।
আমাদের যেমন লক্ষ্মী পূজো ধানের আঁড়িতে হয়। এই আড়ি আমার ঠাকুমার বাবা ঠাকুমাকে দিয়েছিল। আমার মা বলে এটা নাকি আমার ঠাকুমার বাপের বাড়ির স্মৃতি । আর সেই এত এত বছর ধরে এই জিনিসকে আমরা এত যত্ন করে রেখে আসছি। প্রত্যেকবার পুজোতে এই আঁড়ি বার করা হয়। তারপর আসন সাজাতে বসা হয়।
আমরা প্রথমে জল চৌকির ওপর একটি আসন পেতে তার ওপর আড়িটা রাখি। তারপর এক কেজি আড়াইশো ধান আঁড়ি ভর্তি করে দেওয়া হয়। এর সাথে দেওয়া হয় সাতটা কলার ছড়া। তারপর ওড়না দিয়ে সুন্দর করে আঁড়িটা বউয়ের মতন ঢেকে দেওয়া হয়। পাঁচ দিকে পাঁচটা পান পাতা, করি পাঁচটা, আরো পাঁচ রকমের জিনিস দেওয়া হয়। সাথে পাঁচ রকমের ফল থাকে পাঁচ দিকে। আবার আঁড়ি র সামনেও পাঁচ রকম ফল রাখা হয়।
তারপর নারায়ণের আসনে ঠিক একইভাবে পাঁচ দিকে পাঁচটা পান পাতা, পাঁচটা পইতে, এক টাকা করে ৫ জায়গায়, বাতাসা ,ফল এসব দিয়ে আসন সাজানো। আমাদের ঠাকুরমশাই নারায়ণ শিলা নিয়ে আসেন।
পুজোর আয়োজন এবং আসন সাজানো নিয়ে আজকে পুরোপুরি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করলাম। আমাদের বাড়িতে তো এইভাবে আয়োজন করা হয়। আসলে এক একজনের বাড়িতে এক এক রকম ভাবে পুজোর জোগাড় করা হয়ে থাকে। তাই কারো সাথে কারোর তুলনা করাও ঠিক নয়। তবে আমার পুজোর জোগাড় করতে সত্যিই খুব ভালো। আজকে আমি এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পোস্টে আরো কথা শেয়ার করব।