নমস্কার বন্ধুরা ।সকলে কেমন আছেন ? আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আবার নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি । আজকে আমার হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার গল্প নিয়ে একটা পোস্ট শেয়ার করছি।
ভগবান আমাদের কখন কিভাবে রাখেন,আর কখন আমাদের কোথায় নিয়ে যান ,তা একমাত্র ভগবান ছাড়া আর কেউ জানে না। আমরা পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করতে পারি। সে ক্ষমতা তৈরি করতে পারি ।কিন্তু কেমন পরিস্থিতি তৈরি হবে বা ভগবান কেমন পরিস্থিতি আমাদের জন্য রাখবে, এর উপর হাত আমাদের কারোরই নেই।
গত পরশুদিনের কথা বলি, সেদিনকে আমার বাবার উত্তরাখণ্ড যাওয়ার দিন। সেইমতো আগে থেকেই সমস্ত বন্দোবস্ত ছিল ।বাবার ফ্লাইটের টাইম ছিল রাত সাড়ে সাতটা। অর্থাৎ সন্ধ্যে সাড়ে ছটার মধ্যে বাবাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছতে হবে। এয়ারপোর্ট মানে বুঝতেই পারছেন কলকাতা এয়ারপোর্ট অর্থাৎ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।
বাড়িতে বহুদিন ধরে মিস্ত্রি কাজ করছে ওপরে ফ্লোরগুলোতে, নানান ব্যস্ততা এবং কাজের চাপ,তার উপর ব্যবসা সমস্ত কিছু ঠেকিয়ে বাবাকে যেতে হচ্ছে ৪-৫ দিনের জন্য। ওখানকার একটি মাউন্টট্রেনিং ইনস্টিটিউটে মূর্তি বসানোর জন্যই বাবা যাচ্ছে। আমাদের বাকি কারিগররা ট্রেনে তার আগেই রওনা দিয়েছে। আমি এর আগেও হয়তো কখনো কোন পোস্টে বলেছিলাম বাইরের কাজগুলো আমাদের কারখানাতেই হয় ট্রান্সপোর্ট এর মাধ্যমে মূর্তি বাইরে পৌঁছে দেওয়া হয়। মূর্তি বসানোর সময় যদি কোন ভাবে আমার বাবার প্রয়োজন হয় তবে আমার বাবা যায়।
কিন্তু সেদিন সকাল থেকেই বাবার শরীরটা হট করে খারাপ লাগছিল। বাবা ভেবেছিল একাই চলে যেতে পারবে ।কিন্তু পরে সেটা আর হলো না।
দুপুর তখন একটা বাজে, আমি সবে বাবাকে খেতে দিচ্ছি। বাবা খাওয়া-দাওয়া করে রওনা দেবে এরকমই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এর মধ্যেই আবার আমাদের বাড়ির পাশের মৌসুমী বৌদি আমার বাড়িতে এসেছে। বৌদি প্রত্যেকদিনই একবার করে আসে ।না হলে আমি যাই। ওই সময় ঘরের মধ্যে আমি ,বাবা-মা, মৌসুমী বৌদি, ঈশান সবাই ছিলাম ।
হঠাৎ করে বাবা বলল - তুই পারলে আমার সাথে চল এয়ারপোর্ট অবদি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আয়, আমারও ভালো লাগবে। তোরও একটু ঘোরা হবে। তার ওপর আমার শরীরটা ঠিক লাগছে না। সাথে এটাও বললো- মৌসুমী যদি চাও ,তুমিও যেতে পারো।
মা প্রথমে একটু বাধা দিল ।কারণ বাড়িতে মিস্ত্রি কাজ করছিল। কিন্তু বাবার শরীরটা না ভালো থাকায় এবং আমাদের ইচ্ছা করছিল একটু ঘুরে আসার জন্য। এ কারণেই আমরা রাজি হয়ে গেলাম।
আমাদের গাড়ি রাখা থাকে আমাদের ফ্যাক্টরিতে। আমাদের বাড়িটা যেহেতু পাড়ার ভেতরে এবং অত বড় গাড়ি ঢোকানোর জায়গা নেই ।তাই গাড়িটা আমাদের কারখানাতে রাখতে হয়। যখন দুপুর ১টা ৪৮ বাজে, তখন তাড়াতাড়ি ডিসিশন নিয়ে আমি আর বৌদি রেডি হতে শুরু করলাম। সকাল থেকে ঠিক ভাবে খাওয়া দাওয়া নেই। কোন রকমে ভাত খেয়ে রেডি হয়ে পড়লাম। ওই সময়তেই আমাদের বাড়ির সামনে গাড়ি আনতে বলে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের যিনি গাড়ি চালান তিনি আড়াইটে নাগাত গাড়ি নিয়ে আমাদের শোরুমের সামনে হাজির। তারপর আমরা রওনা দিলাম।
ঠিক পৌনে দুটো নাগাদ আমরা কৃষ্ণনগর থেকে বেরিয়ে গেলাম কলকাতার উদ্দেশ্যে। কলকাতা যেতে কৃষ্ণনগর থেকে বেশ অনেকটা সময় লাগে ।আমার মনে আছে এর আগের বছর যখন আমি কলকাতায় যাচ্ছি আমাদের গাড়ি করে তখন প্রায় সাড়ে তিন চার ঘন্টার কাছাকাছি লেগে গিয়েছিল। তাই আমি ট্রেন বেশি প্রেফার করতাম ।কারণ ট্রেনে সে তুলনায় দুই ঘণ্টা অথবা আড়াই ঘন্টা লাগে।
কিন্তু এখন ফ্লাই ওভার হওয়াতে সেই চিন্তা মুক্ত হয়ে গেছে ।আমরা এক ঘন্টা ৪৮ মিনিটের মধ্যে কলকাতা পৌঁছে গেলাম। তার উপর সেদিন ছিল কলকাতাতে ইলেকশন। তার ওপর দুপুর বেলা। রাস্তায় চাপ কম ছিল। লোকজন ,গাড়ি চলাচল কম করছিল। খুব স্পিডে পৌঁছে গিয়েছি।
আমি এর আগে এয়ারপোর্টে অনেকবার এসেছি। কাশ্মীর যাওয়ার সময় আমি আমার মা এবং ভাইকে নিয়ে চলে গিয়েছিলাম কাশ্মীর। তখন বাবা কাশ্মীরে ছিল। সেবারেও বাবাকে যেতে হয়েছিল মূর্তি বসানোর সময়। মূর্তি বসানোর সময় বাবা না থাকলে অনেক কিছু ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে, তাই বাবাকে যেতেই হয়। সেইবার বাবা কাশ্মীর পৌঁছে যখন দেখে বরফ পড়ছে এবং দারুন ওয়েদার। সাথে সাথে আমাদের প্লেনের টিকিট কেটে দেয়। তারপরের দিনই আমি মা আর ভাইকে নিয়ে কাশ্মীর রওনা দিয়েছিলাম। তাই এয়ারপোর্টে মাঝেমধ্যেই আমাদের যাতায়াত লেগে থাকে। এর সাথেই আমাদের পরিচিত আত্মীয়-স্বজনদের এয়ারপোর্ট অবদি পৌঁছাতেও অনেকবার এসেছি।
কিন্তু তখন যে পরিমাণে সময় লাগতো ।এখন তা কতটা কম লাগে। আসলে একেই বলে প্রযুক্তি। যাতায়াত সুবিধা যে এতটা সুন্দর হয়ে গেছে ,আমি ভাবতে পারিনি। আমিও খুব নিশ্চিন্ত হলাম যখন বাবাকে পৌঁছে দিতে পারলাম এয়ারপোর্টে। আমরা পোনে তিনটে নাগাদ বেরিয়েছিলাম, সাড়ে চারটের মধ্যে এয়ারপোর্টে ঢুকে গিয়েছি।
আসলে ব্যবসার চাপ প্রচুর থাকে। যেহেতু আমাদের বাড়ির এত বড় একটা ব্যবসা পুরোটাই বাবাকে নিজে দেখতে হয়। আমি যতই অল্প আধটু সাহায্য করি। তাও যিনি মেন সেই মানুষটার ওপরই সবথেকে বেশি প্রেসার থাকে। আমার বাবার ক্ষেত্রেও তাই হয়।
বাবাকে যেদিনকে এয়ারপোর্ট এ দিতে গেলাম ,তার আগের দিন আবার আমাদের কিছু কারিগর ট্রেনে উঠেছে। তাদের নিয়েও বাবার মাথায় টেনশন রয়েছে। কারণ যে সকল ছেলেরা আমাদের কারখানায় কাজ করে, সকলের দায়িত্ব আমার বাবার মাথার উপর থাকে।
তার ওপর বাড়িতে মিস্ত্রি কাজ করছে। কাজের নানান টেনশন। বাবার বয়সও হচ্ছে। তাই হয়তো এত মাথায় লোড নিতে পারে না। এজন্যই হয়তো সেদিন সকাল থেকে বাবার শরীরটা খারাপ করছিল।
আমি বৌদি, সবাই মিলে বাবাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে গেলাম বলে, বাবার শরীরটাও ভালো হয়ে গিয়েছিল। আসলে একটা সময় পরে এসে শরীরের থেকেও বেশি মনের জোর দরকার হয়। এটা শুধুমাত্র যাদের বয়স বেড়ে যাচ্ছে তাদের জন্য নয়। আমাদের সকলের ক্ষেত্রে। আমাদের মনে কোন সমস্যা না থাকলে, আমরা যে কোন কাজ সহজেই করতে পারি। টেনশন ফ্রি হয়ে থাকলে আমাদের শরীর ভালো থাকে ।সাথে কাজেও মন বসে এবং কাজ ভালো হয়।
বাবাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়ে আমরা সাথে সাথে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলাম।মৌসুমী বৌদি এর আগে এয়ারপোর্টে যায়নি ।তাই বৌদির বেশ ভালই লাগছিল ।আমার মতই বৌদি খুব ঘুরতে ভালোবাসে। তারপর ফেরার পথে অনেক মজা হয়েছে। সেগুলো পরের দিন পোস্টে জানাবো ।আজকে এখানেই শেষ করলাম। এর জন্যই আমি বলছিলাম ভগবান আপনাদের কেমন ভাবে রাখে ,তা ভগবানই জানে। তাই আমাদের উচিত ভগবানের উপর ভরসা রাখা।
Come on, make a sudden plan with me, suddenly getting married seems exciting? Haha
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
you look like a pathetic oldman!oh you have family too!!It would be great if you could pay attention to your own earning & family!!!haha😛
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
How dare you!! I see ,you have no manners.. Just think about what kind of comments you are writing here . Just disgusting!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
I'm just trying to comfort you who are sad, but you're too emotional. I apologize from the bottom of my heart.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
I am sorry my friend because of language difference she might take your friendly comment in other ways.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
It's okay, I don't hold a grudge.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
You know that's the best quality of a teacher 🤝🫰
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এভাবে হঠাৎ করে ঘুরতে যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেলে খুব ভালোই লাগে। আপনার বাবার শরীর বর্তমান সময়ে কেমন আছে আমি জানিনা। তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন সবসময় ভালো থাকে। একদমই ঠিক বলেছেন একটা সময়ের পরে মানুষের শরীরে জোরের চাইতে মনের জোর টা খুব বেশি প্রয়োজন হয়। আর মনের জোর দিয়ে কিন্তু মানুষ অনেক কাজ করতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit