একটু গল্প আর একটু শপিং

in hive-120823 •  last month 

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আমি আপনাদের সাথে আমার পছন্দের একটি খাবারের রেসিপি শেয়ার করেছিলাম। আজকে আমি ভাবলাম কিছুদিন আগের একটু ঘোরাঘুরি নিয়ে লিখি। ঘুরতে আমি কতটা ভালবাসি তা হয়তো আপনারা পোষ্টের মাধ্যমে অনেকবার শুনেছেন। আর ঘুরলে যে মন ভালো হয় , সেটা আমাদের সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমি খেয়াল করে দেখেছি মন খারাপ থাকলে একটু হাওয়া পরিবর্তন করলে ,মনটা অনেক হালকা হয়।

20241015_180602.jpg

রোলের আর্ট

আমার মন খারাপ এবং ভালো থাকা নিয়ে বিষয়টা নয়। বিষয়টা এই যে আমি ঘুরতে ভালোবাসি। যখনই সুযোগ হয় চেষ্টা করি একটু ঘোরাঘুরি করার। যখন একা বেরোতে পারি না, অন্তত বাবার সাথে জেদ করে বাবাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে যাই। মাঝেমধ্যে বাবা কাজ থেকে ফিরে আসলে আমরা আমাদের বড় গাড়িটা নিয়ে এমনি এমনি ঘুরে বেড়াই। এই পাগল মানসিকতা যারা ঘুরতে ভালোবাসে তারাই বুঝবে।

20241015_174345.jpg

20241015_174023.jpg

ক্যাফের পেন্টিংগুলো

যাই হোক, কিছুদিন আগের কথা আমি বিকেল বেলায় প্ল্যান করে বেরিয়েছিলাম। সাথে ছিল আমার প্রিয় মানুষটি। তার সাথে আবার অনেকদিন দেখা হচ্ছিল না। তাই ভাবলাম একটু দেখা সাক্ষাৎ করে অনেক গল্প করব। আর এর সাথেই আমার অনেক পনির রোলের ক্রেভিং হচ্ছিল। পনির রোল আমি তো নিজেই বানাতে পারি। কিন্তু সব সময় তো নিজে হাতে রান্না করে খেতে ভালো লাগে না। শরীর সবসময় সায় দেয় না।

20241015_174035.jpg

20241015_174858.jpg

ক্যাফের পরিবেশ

তাই আমি আর ও মিলে ঠিক করে চলে গিয়েছিলাম আমাদের কৃষ্ণনগরের একটি ওপেন ক্যাফেতে। ওপেন ক্যাফে বলতে এই ক্যাফেটা একদম রোডের পাশে অবস্থিত। একদম ওপেন ক্যাফে। রাস্তার পাশে ক্যাফে টা এত সুন্দর জায়গায় রয়েছে। খুবই ভালো লাগে জায়গাটা। ক্যাফেটা ছোটখাটো হলেও দেখতে ভালো লাগে । বিশেষ করে ক্যামেরাটা ওপেন বলেই আমার বেশি পছন্দের। কৃষ্ণনগরের মধ্যে এরকম ওপেন ক্যাফে আর কোথাও নেই। এই ক্যাফেতে অনেক ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। সন্ধ্যাবেলার দিকে ছোট থেকে বড় ইভেন বয়স্করাও এখানে এসে বসে। চা খায় ,গল্প করে। এর সাথে এখানে অনেক ধরনের খাবার পাওয়া যায়।

Snapchat-1389597122.jpg

20241015_175658.jpg

আমি এখানকার পনির রোল এবং চিকেন রোল খুব পছন্দ করি। সেদিনকে আমি নিরামিষ খাচ্ছিলাম তাই প্রথমে গিয়ে অর্ডার করে নিলাম পনির রোল। আর ও অর্ডার করেছিল চিকেন রোল। তারপর বসে বসে দুজন মিলে গল্প করতে করতে রোলগুলোকে খেলাম। দুটো রোল খেয়ে আমাদের দুজনেরই পেট ভরে গিয়েছিল। কারণ বেশ বড় সাইজের ছিল। খাবার সাথে সাথে অনেকক্ষণ ধরে গল্প হল। ক্যাফের পরিবেশটা খুবই সুন্দর ছিল। যেহেতু হাওয়া দিচ্ছিল তাই আরো ভালো লাগছিল।

20241015_174017.jpg

বিলিং সেকশন

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমাদের কিছু কেনাকাটা ছিল। তাই আমরা চলে গিয়েছিলাম আমাদের পছন্দের দোকানে। কৃষ্ণনগরের মধ্যে সব থেকে পছন্দের কেনাকাটার জায়গা হল যশোরেশ্বরী বস্ত্রালয় । এটা একদম আমাদের কৃষ্ণনগরের মার্কেটের মধ্যে অবস্থিত। প্রবেশ করেই শাড়ির দোকানে চলে গেলাম। পুজোর জন্য শাড়ি কিনতে হবে। যদিও এই শাড়িটা কিন্তু সেই প্রিয় মানুষের দেওয়া উপহার। আর এদিকে আমি নিজের জন্য শাড়ি কেনা মানে অনেক বিপদ।

IMG-20241015-WA0003.jpeg

কত জামদানি!

সহজে আমার কোন জিনিস নিজের জন্য পছন্দ হতে চায় না। আবার এক দেখাতে যে জিনিস পছন্দ হয় , সে জিনিস আমি কিছুতেই ছাড়ি না। যাওয়ার সাথে সাথেই বলেছিলাম হলুদ শাড়ি দেখাতে। কাকু তো প্রচুর হলুদ শাড়ি নিয়ে এসে হাজির। মোটামুটি ১৫-২০ টা শাড়ি দেখার পর। অবশেষে আমার পছন্দমত শাড়িটি বার হল। এক দেখাতে আমার আর ওর খুব পছন্দ। সাথে সাথে চুজ করে নিলাম।

1000153744.jpg

আমি শাড়িটা পেয়ে ভীষণ খুশি। যদিও আমি বেশি শাড়ি কিনি না। মায়ের শাড়িতেই আমার পুজো পার্বণ সব কেটে যায়। বড় হয়েও শাড়ি কেনার ধুমটা এখনো তৈরি হয়নি। আমার বয়সী সবাইকে দেখেছিস শাড়ি কেনার প্রচুর সখ রাখে। সেটা আমার এখনো তৈরি হয়নি।

1000153745.jpg

যাইহোক আমার কেনাকাটা হয়ে যাওয়ার পর, শাড়িগুলো আমার এত ভালো লাগছিল আমি আমার জেঠিনের জন্য একটি শাড়ি নিয়ে নিলাম। এছাড়াও আমার জেঠুর জন্য একটি জামা কিনতে হতো। তাই মেরুন রং এর শার্ট কিনে নিলাম।

1000153746.jpg

আমি লক্ষ্মী পূজার আগে গিয়েছিলাম। পুজোর জন্য ঠাকুরের শাড়ি কিনতে হতো । তাই একটি সুতির ঠাকুরের শাড়িও কিনে নিলাম। সবমিলিয়ে বেশ কেনাকাটা হয়ে যাওয়ার পর, মা আর ভাইয়ের জন্য খাবার কিনে ফেললাম। ওদের জন্যও আমি রোল নিয়েছিলাম। রোলগুলো জামাকাপড় কিনতে যাওয়ার আগে অর্ডার করেছিলাম। ভেবেছিলাম খুব তাড়াতাড়ি কেনাকাটা হয়ে যাবে আর রোল গুলো নিয়ে বাড়ি চলে যাব।

কিন্তু কেনাকাটা করতে এত দেরি হয়ে গেল ,ততক্ষণে রেস্টুরেন্টে এসে দেখি রোল অনেকক্ষণ আগে তৈরি করে রেখে দিয়েছে। রোলগুলো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। কি আর করা যাবে, ওই অবস্থায় বাড়ি নিয়ে আসলাম।

ও বলেছিল এত তাড়াতাড়ি অর্ডার না দিতে, কারণ ও ভালো করেই জানে আমার কেনাকাটা করতে কতটা টাইম লাগে। যাইহোক আপনাদের সাথে সমস্ত মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগলো। সকলে ভালো থাকবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম।

ক্যাফের নাম ছিল - 'ক্যাফে সবার উপরে '
লোকেশন

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...
Loading...

আপনার পোস্টটি সত্যিই আনন্দদায়ক এবং প্রাণবন্ত! ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা এবং ক্যাফের পরিবেশ সম্পর্কে আপনার বর্ণনা বেশ ভাল। কৃষ্ণনগরের ওপেন ক্যাফের কথা শুনে সত্যিই ভালো লাগলো; ওপেন পরিবেশে খাবার খাওয়া এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো সবসময়ই বিশেষ।