ভ্রমণ :- বগুড়া মহাস্থানগর বেহুলা লক্ষিন্দর বাসর ঘর ভ্রমণ।

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)

প্রিয় স্টিমিয়াম
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আস-সালামু আলাইকুম বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি এবং সুস্থ আছি, আলহামদুলিল্লাহ।

আজকে আপনাদের সামনে উপস্থিত হলাম ভ্রমণ এর বিষয় নিয়ে। পড়াশোনা এবং চাকরি চাপে তেমন ভ্রমণ করার সুযোগ পায় না।তবে রোজার জন্য ছুটিতে ভ্রমণ করার সুযোগ টা আর হাত ছাড়া করতে চায় না।

বগুড়া অনেক দিন অবস্থান করছি তবে বগুড়া প্রচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বা পর্যটন জায়গা গুলো তেমন ঘুড়ে দেখা হয় নি।
IMG_20230310_170315_258.jpg

স্থান:
নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত।যা বর্তমানে মহাস্থানগড় নামে প্রচালিত।বগুড়া শহর থেকে পনেরো কিঃমিঃ
পথ

কিভাবে যাওয়া যায়?

বগুড়া সাতমাথা থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করে পনেরো কিমি উত্তরে মাডিডালি বিমানবন্দর ওপর দিয়ে আসতে হবে প্রাচীন নগরীর আছে বিভিন্ন আমলের প্রত্ন তাত্ত্বিক প্রাচীন নিদর্শন। শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন শাসকর্তা রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু রাজাদের রাজধানী ছিল।প্রাচীন এই শহর টিকে পুন্ড্রনগরও বলো হতো তৃতীয় খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অনেক অনেক হিন্দু রাজা বাদশারা রাজত্ব করেন। মহাস্থানগড়ের অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় ।[বগুড়া শহর থেকে করতোয়া নদীর পাশে

মাজার শরীফ
মহাস্থান হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ আছে

আমরা সবাই মাজারে মসজিদ এ জুম্মা নামাজ আদায় করলাম।মসজিদটি অনেক সুন্দর ছিল। এরপর বের হয়ে মাজারে পাশে লাল কাপড় পরা মাথায় লম্বা চুলে জট বাধা লোক দেখতে পেলাম। তবে আশপাশের পরিবেশ টা ভালো না কিছু লোক মাদক সেবন করছে।এতে আমাদের দেশের যুব সমাজ নষ্ট হসছে এবং বিদেশি পর্যটন এ কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হসছে।

জাদুঘর
মহাস্থান গড় খননের ফলে মাটির নিচ থেকে একে একে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ প্রাচীন কালের মুদ্রা অনেক দেবদেবীর মূর্তি এবং কারুকার্য করা শীলা পাওয়া গেছে যা মহাস্থানগড়ের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে জমা আছে।

জাদুঘর ঘরে ঢুকার জন্য প্রথমে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।প্রতি টিকিট এ মূল্য বিশ টাকা করে। ভিতর ঢুকে প্রচীন বিভিন্ন দেব দেবীর মূতি এবং প্রচীন মুদ্রা দেখতে পেলাম।তবে ভিতরে ছবি তোলা নিষেধ ছিলো বলে মোবাইল বের করতে পারি নাই। জাদুঘরে পাশে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল গাছের বাগান করা যদি প্রিয় মানুষটিকে সাথে নিয়ে যান ইচ্ছে হবে একটা ফুল তার খোঁপাই গুচে দিতে।তবে ভুলেও এই কাজটি করবেন না ওখানে নোটিশ দেওয়া আছে ফুল ছিরলে একশত টাকা জরিমানা করা হবে।

বেহুলার বাসরঘর

এরপর আমরা বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসরঘর দেখার জন্য বের হলাম।জাদুঘর থেকে বেহুলা বাসর ঘরে আসতে বিশ টাকা ভাড়া লাগে।বেহুলা বাসরঘরে ঢুকার জন্য প্রতি টিকিট এ মূল্য বিশ টাকা করে।

IMG_20230331_133446_833.jpg

ছোট বেলায় দাদিদের মুখে শুনছি চাঁদ সওদাগর মনসা পূজা করতেন না।চাঁদ সওদাগর যদি মনসা পূজা দিতেন তাহলে ত্রিলোকে মনসা পূজা চালু হতো।চাঁদ সওদাগর বাণিজ্য শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে মনসা ঝড় বৃষ্টি সৃষ্টি করে তার নৌকা ডুবায়ে দেয়।প্রাণে বেচে যান তিনি।একই সময় চাঁদ সওদাগর একটা সুন্দর ফুটফুটে ছেলে সন্তান হয় নাম তার লক্ষিন্দর।তখন একজন জতিসি ভবিষ্যৎ গগনা করে দেখেন তার ছেলেকে বাসরঘরে সাপে কামড়ায়ে মেরে ফেলবে।সেই ভয়ে চাঁদ সওদাগর লোহার বাসর ঘর বানায়ে বেহুলা সাথে বিয়ে দেন।কিন্তু বিয়ে রাতে মনসা সুতার মত চিকন হয়ে তার ঘরে প্রবেশ করে কামডায় লক্ষিন্দার কে।

বর্তমানে প্রেমিক প্রেমিকার জন্য মহাস্থানগড় অনেক নিরাপদ দেখে মনে হলো কারণ যেদিকে চোখ যায় দেখি শুধু প্রেমিক প্রেমিকার পাশাপাশি বসে মনের সব কথা খুলে বলছে।

তবে রোজার মাস ইবাদত এ মাস।এই মাসে আমরা সবাই চেষ্টা করবো পাপ থেকে দূরে থাকার।আমাদের জন্য এটা রহমতের মাস।আমাদের গোনাগুলো মাফ চাওয়ার মাস।এই মাসে একটা ভালো কাজ করলে সত্তর টা নেকি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই সবাই বেশি বেশি আল্লাহ ইবাদত করবো। আল্লাহ যেন আমাদের ক্ষমা করে দেয়।

আজকের মত এ পর্যন্তই। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। স্মৃতি হিসেবে দিনটি জীবনের পাতায় থেকে যাবে। মনের মাঝে থেকে যাবে সেই ভ্রমণ এবং প্রাচীন নিদর্শনগুলো। আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম সমস্ত কিছু

TQ.png

DeviceName
AndroidInfinix X688B
Camera13M Dual camera
LocationBangladesh 🇧🇩
Short by@kamrul21
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমাদের ইনক্রেটেবল ইন্ডিয়া কমিউনিটিতে আপনাকে স্বাগতম।

বগুড়া অনেক দিন অবস্থান করছি তবে বগুড়া প্রচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বা পর্যটন জায়গা গুলো তেমন ঘুড়ে দেখা হয় নি।

আমাদের ভাষায় একটা কথা আছে ঘরের গরু ঘাটের ঘাস খায় না। এ কথার অর্থ হলো আমরা আমাদের কাছে থাকা সৌন্দর্য জিনিসগুলোকে, খুব তেমন একটা গুরুত্ব দেই না। এবং সেই জিনিসগুলোর মধ্যে যে কতটা সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। সেটা দেখার জন্য কখনো আগ্রহ প্রকাশ করি না। আপনার এই কথা গুলো পড়ে আমার এই কথাগুলো মনে পড়ে গেল।

এরপর আমরা বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসরঘর দেখার জন্য বের হলাম।জাদুঘর থেকে বেহুলা বাসর ঘরে আসতে বিশ টাকা ভাড়া লাগে।বেহুলা বাসরঘরে ঢুকার জন্য প্রতি টিকিট এ মূল্য বিশ টাকা করে।

এই বেহুলার কথাটা আপনার পোস্টে পড়তে গিয়ে আমার দাদীর কথা মনে পড়ে গেল। কারণ আমার দাদি সব সময় এই বেহুলা এবং লক্ষিন্দারের বাসর ঘরের কথা। আমাদের সাথে গল্প করত। আমরা মন দিয়ে তার গল্প গুলো শুনতাম।

সাপে কামড়াবে এই ভয়ে এই বাসরঘরটি তৈরি করা হয়।লখিন্দর প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বেহুলার সাথে তার বিয়ে ঠিক করা হয়। তাদের জন্য তৈরি করা হয় লোহার বাসর ঘর। বাসর রাতে অনেক নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও মনসাদেবী সুতার আকার ধারণ করে ঘরে প্রবেশ করে লখিন্দরকে দংশন করে।

একদমই ঠিক বলেছেন, আপনি আপনার পোস্টে যেভাবে বর্ণনা করেছেন। বেহুলা এবং লক্ষিন্দরের বাসর ঘরের কথা। ঠিক তেমনি ভাবে আমার দাদুর কাছে আমরা এই গল্পটা শুনতাম। তাদের জন্য লোহার বাসর ঘর তৈরি করা হলেও, সুতো হয়ে সেখানে ঢুকে পড়েছিলেন মনসা দেবী। এবং দংশন করেছিলেন, লক্ষিন্দর কে ওখান থেকেই হয়তোবা এই ঘটনার উৎপত্তি হয়।

আমাদের এদিকে এখনো লোকমুখে এই ঘটনা শোনা যায়। কারো কাছ থেকে যদি জানতে হয়। তাহলে সে এমনভাবে এই ঘটনার বর্ণনা করে। আপনার কাছে মনে হবে, আপনি তখন সেই জায়গায় ছিলেন।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।

#miwcc

Loading...