হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভাল আছি।
প্রথম পর্বের লিংক |
---|
লাশের গাড়ির ড্রাইভার এর নাম ছিল মহনলাল, লোকটি দেখতে কিছুটা পাগলের মত। তার সাথে আমি টাকা পয়সার সব হিসাব মিটিয়ে বললাম হসপিটালের গেটে গাড়ি লাগাতে স্ট্রেচারে করে লাশ আনা হচ্ছে। সে আর বেশিক্ষণ দেরি করল না গাড়ি নিয়ে এসে হসপিটালের গেটে রাখল।
লাশ নিয়ে আসতে আসতে আমি তার সাথে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলছিলাম, তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম কোন রাস্তা ধরে আমাদের পিরোজপুর যেতে হবে। সে ও বলল সে কখনো ওই দিকে যায়নি তবে রাস্তা বলে দিলে সুন্দরভাবে নিয়ে যেতে পারবে।
ওইদিকে লুৎফর ভাইয়ের বাড়ি থেকে আমাকে বারবার ফোন করে কান্নাকাটি করছিল লাশ নিয়ে আমরা রওনা দিয়েছি কিনা বারবার এটাই সকলেই জিজ্ঞাসা করছিল।
তখন প্রায় রাত এগারোটা বেজে গিয়েছে। একবার ভেবেছিলাম সকালে রওনা দিব পরক্ষণেই মাথায় চিন্তা আসলো পিরোজপুরে সকলেই লাশের অপেক্ষায় বসে রয়েছে তাই রাতেই রওনা দিতে হবে।
তারপর লাশ নিয়ে আসা হল, একটি কফিনে লাশ রাখা ছিল। কফিন টিকে গাড়ির পেছনের দিকে তুলে দেয়া হয়েছে আমি এবং লুৎফর ভাইয়ের সেই চাচা বসবো গাড়ির সামনের দিকে। তারপর কিছু ফর্মালিটিস পূরণ করলাম, কিছু কাগজ পাতিতে সাইন করে আমরা লাশ নিয়ে রওনা দিলাম।
আমরা ভালোভাবেই ২-৩ ঘণ্টার মতো রাস্তা পাড়ি দিলাম। তারপর হাইয়ের পাশে একটা হোটেলে দাঁড়িয়ে আমরা খাবার দাবার সেরে নিলাম। আমাদের গাড়ির ড্রাইভারও আমাদের সাথে খেয়েছিল।
তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা আবারো যাত্রা শুরু করি। তারপর আমরা যে রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করেছিলাম সেটা কিছুটা লোকাল রাস্তার মত ছিল। আশেপাশে অন্য কোন গাড়ি ঘোড়া ছিল না, রাস্তাটা একদম ফাঁকা ছিল। আমি আসলে ডাকাতের ভয় পাচ্ছিলাম। লুৎফর ভাইয়ের চাচা আমার পাশে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল আমি এবং আমাদের ড্রাইভার জেগে ছিলাম।
আরো কিছুটা পথ যাওয়ার পর হঠাৎ পেছন থেকে যেন কিসের শব্দ আসছিল। শব্দটা কিছুটা হাড় চিবিয়ে খাওয়ার মত ছিল। কে যেন পিছনে মরমর করে হাড় চিবিয়ে খাচ্ছিল। কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ল পেছনে তো লুৎফুল ভাইয়ের বাবার লাশ ছাড়া আর কেউ ছিলনা তাহলে কিসের শব্দ আসছে পেছন থেকে।
ড্রাইভার কে জিজ্ঞাসা করলাম পেছন থেকে এরকম শব্দ আসছে কেন। ড্রাইভার ও ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল তাই সে আমার কথায় উত্তর দেয়ার সাহস পেল না। হাত কাঁপিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছিল। এদিকে আমিও ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। তারপর লুৎফর ভাইয়ের চাচার ঘুম ভাঙলো সেও ঘুম থেকে উঠে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো পেছন থেকে এ কেমন শব্দ আসছে।
তারপর লুৎফর ভাইয়ের চাচা মাঝের ছোট উইন্ডো টা খুলে পেছনে দেখলো কালো পোশাক পরা একজন লুৎফর ভাইয়ের বাবার লাশ নিচের দিক থেকে চিবিয়ে খাচ্ছিল। খাচ্ছিল আর এমন বিকট শব্দ করছিল আমি তো একদম ভয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।
সে রাস্তায় দাঁড়ানোর মতো আমরা এমন কোন জায়গা পাচ্ছিলাম না যে দাঁড়াবো। আর পেছনের শব্দটা যেন ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। তারপর আমি একটু সাহস করে আবার পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে পুরো লাশটাই একদম খেয়ে ফেলেছে। শুধু মাথাটা রেখে পেছনেই বসেছিল।
হঠাৎ করে আমাদের গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেল। তারপর কালো পোশাক পড়া সেই জিনিসটি গাড়ি থেকে নেমে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। তার চেহারা এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে লুৎফর ভাইয়ের চাচা দেখার সাথে সাথেই সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের গাড়ির ড্রাইভারও আমাদেরকে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল।
তারপর আমি কখন যে আমার সেন্স হারিয়ে ফেলেছিলাম তা বুঝতেই পারিনি। সকালে যখন আমার চোখ খোলে তখন আমি সেই গাড়ির সামনেই শুয়ে ছিলাম। আমাদের চারপাশে অনেক লোকজন ভিড় করেছিল। সবাই লুৎফর ভাইয়ের বাবার লাশের সেই মাথাটিই দেখছিল।
সেদিন রাতের সেই ভয়ংকর জিনিসটা কি ছিল আমি জানিনা। যেটাই ছিল খুবই ভয়ংকর ছিল। সম্ভবত মৃত্যুর পাশ ঘেঁষে আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। সেই রাতের ঘটনা এখনো মনে পড়লে আমার গায়ের লোম শিউরে ওঠে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার লাশের গাড়ির গল্পের দ্বিতীয় পর্ব পাওয়ার জন্য অনেক অপেক্ষায় ছিলাম যাইহোক আপনি গিয়েছেন এবং আমি আপনার লাশের ঘাড়ে গল্পের দ্বিতীয় পর্ব পড়ে অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম আসলে সেদিন রাতে ঠিক কি হয়েছিল।
কি ছিল সেই কালো পোশাকধারী সে কেন পুরো লাশটাকে এভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ছিল এ তথ্যগুলো আসলেই আমাদের অজানা।
অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit