ছোট বোনের সাথে ভোটার কেন্দ্রের যাত্রার গল্প

in hive-120823 •  20 days ago 

আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।


আজকে ভোর চারটার দিকে সেহরি খেয়ে ফরজ নামাজ পড়ে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুম ভাঙলো সকাল সাড়ে নয়টার দিকে। কয়েক দিন আগে আমার ছোট বোন আমাকে বলেছিল যে, আজ ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তুলতে যাবে। তবে আমি ভুলে গিয়েছিলাম। অনেকদিন আগে এক পোস্টে বলেছিলাম, তার ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য অনেক জায়গায় ঘুরে-ঘুরে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হয়েছিল। ছোট বোনের সকালে চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে, ভালোবাসার কবুতরটিকে কিছু খাবার দিলাম এবং ছোট বোনকে নিয়ে ভোটার কেন্দ্রে রওনা হলাম। আমরা বাসা থেকে বের হলাম সকাল ১০টার দিকে।

1000012421.jpg


1000012422.jpg

1000012420.jpg

ভোটার কেন্দ্রে যেতে বেশি সময় লাগলো না, ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগলো। সেখানে গিয়ে দেখি, বিশাল লম্বা লাইন। কিছু-কিছু মানুষ প্রায় সকাল ৬টার দিকে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের এলাকায় নতুন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার, তার মধ্যে কিছু পুরনো ভোটারও আছেন, যারা কোনো কারণে পরিচয়পত্র করতে পারেননি, তারা আজ ভোটার হচ্ছেন।

লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছোট বোন আমাকে আরও বকাবকি করতে শুরু করল, তবে শেষপর্যন্ত সে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। ভোটার কেন্দ্র ছিল একটি স্কুল, যেখানে আমাদের এলাকার আশেপাশের অনেক মানুষ এসেছিল জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি তোলার জন্য এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য। আমি ছোট বোনকে লাইনে দাঁড়া করাইয়া রেখে বাহিরে একটু ঘুরে আসি।

1000012424.jpg

এই হল ভোটার কেন্দ্র

1000012418.jpg

এই সেই প্রতিবন্ধী ছেলে আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করুক

বাহিরে যাওয়ার পর হঠাৎ এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে আমার সাথে। জানি না, এই ব্যাপারটা বলা উচিত হবে নাকি আমার, তারপরও মন চাচ্ছে আপনাদের সাথে শেয়ার করি। স্কুলের বাইরে গিয়ে, একজন প্রতিবন্ধী হুইলচেয়ারে বসা ছেলে আমাকে দেখতে পায়। সে আমাকে বলে, ভাই, আমাকে একটি দোকান থেকে সিগারেট এনে দেবেন! আমি তাকে বলি, ভাই, আমি তো রোজা রাখছি। সে উত্তর দিলো, তাহলে আমাকে টাকা দেন, আমি সিগারেট কিনব। আমি অবাক হয়ে তার কথা শুনলাম, কিন্তু সে যদি সুস্থ মানুষ হত, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে আমার ভদ্রতা বুঝিয়ে দিতাম।

তবে আমি তাকে বললাম, ভাই, আমি রোজা রাখছি, আর আপনি সিগারেট চাচ্ছেন। এটা ঠিক না। তারপর আমি তাকে দশ টাকা দিয়ে চলে আসি। এই সব মানুষকে দেখে হয়তো অনেকেই ভাববে তারা অসহায়, কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে ওই ছেলেটির মাথায় কিছু সমস্যা ছিল, নইলে এমনভাবে হঠাৎ কেউর থেকে কেউ কোন কিছু চায় না।

1000012419.jpg

এই ফলগুলো আজকে বাজার থেকে কিনে আনলাম স্ট্রবেরি দাম অনেক বেশি আর বেলেরও

অনেক সময় ধরে ভোটার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। কারণ বসার জায়গা ছিল না, শুধু মানুষ আর মানুষ। হয়তো আপনি উপরে যে ছবিটা দেখছেন, সেটি আমি ওই বাসার নিচে রাস্তায় বসে তুলি। অপেক্ষা করতে-করতে প্রায় ২টা বেজে গেল। এরপর, ছোট বোন আমাকে ফোন দিয়ে জানালো। সে জাতীয় পরিচয় পত্রের কাজ সম্পন্ন করেছে। এক দেড় মাসের মধ্যে অনলাইনে কার্ডটি পেয়ে যাবে। শুনে খুব ভালো লাগলো। দীর্ঘ সময় পর কাজটি সম্পন্ন ভাবে শেষ হলো।

আজকে আমার জীবনের ছোট্ট এই গল্পটি দিয়ে পোস্টটি শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7yctNbUfy3Svm873NHceMEBkiU7QugfFD3RdWkWB8D5Nn71Vnqc38zTwcdMtsxGBY9bLpzWCxcXrK7yhhF5vsc2ofGXjYS.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦

৪,মার্চ, ২০২৫

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

Loading...

বর্তমান সময়ের প্রতিটা জায়গায় জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করার জন্য কাজ চলছে আসলে ওই জায়গায় গেলে বোঝা যায় কি পরিমানে মানুষ। আজকে আপনি আপনার ছোট বোনকে নিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বাড়ানোর জন্য কি ভোটার কেন্দ্রে গিয়েছিলেন ওখানে গিয়ে আপনার অবস্থা নাজেহাল হয়ে গেছে তবে আলহামদুলিল্লাহ সঠিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে জানতে পেরে ভালো লাগলো।