আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।
অন্যের আনন্দ দেখে নিজেকে খুশি করার মজাই আলাদা! আমাদের আশেপাশে এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা আমরা একটু উপলব্ধি করলেই নিজেকে খুশি রাখতে পারি।
এমনই একটি ঘটনা আজকে সকাল বেলায়, আমাদের বাসায় ঘটেছে আমার সাথে, হঠাৎ করে একটা ভিক্ষুক মহিলা, বাচ্চা নিয়ে আমাদের গেটের সামনে বার-বার বলছে, তাদেরকে কিছু সাহায্য করার জন্য। আমার ছোট বোনটা, এই মহিলার কথা শুনে গেটটি খুললো!
আমি এবং আমার ছোট বোন বাচ্চাকে দেখে কিছুটা আত্মবিধ্বংসী হয়েছে ! কেননা বাচ্চার আম্মার থেকে শুনতে পেলাম। মহিলা যখন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল, তখন এই বাচ্চার আব্বাটি ট্রেনের একটি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে তিন বছর আগে। কিন্তু সে এখনো বিয়া করেনি, এই বাচ্চাটির জন্য! তার স্বপ্ন এই বাচ্চাটিকে মানুষের মতন মানুষ করবে, এবং বুড়া বয়সে তাকে দেখে রাখবে।
মহিলা উনার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল, সৎ শাশুড়ি আর শ্বশুর মিলে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
আমরা এইসব বিষয়গুলো মহিলার থেকে শুনি এবং মহিলার প্রতি আরেকটু দয়াশীলতা হয়ে পড়ি! আমার ছোট বোনের কিছু কাপড়-চোপড় এই মহিলাকে দেওয়া হয়, আর কিছু শীতের পোশাক! অপরদিকে মহিলার বাচ্চাকে আমার ভাগ্নি ওর একটি খেলনার গাড়ি দেয়। বাচ্চাটি খেলনার গাড়ি পেয়ে খুশিতে পুরাই আত্মহারা এবং খেলছে!বাচ্চার মা ও এতগুলো কাপড় পেয়ে সে অনেক খুশি। আমি এই দৃশ্যটি দেখে একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পারলাম।
যারা অল্পতে খুশি হয় তারাই প্রকৃতিক মানুষ! অল্পতে সন্তুষ্ট সবাই হতে পারে না।
এটা আল্লাহতালার একটা বিশাল বড় নেয়ামত, যা সবাইকে আল্লাহ দেয় না। বাচ্চা এবং বাচ্চার মায়ের অন্তরে আজকে খুশির ছোঁয়া দেখতে পেয়ে। মনে অনেক তৃপ্তি পেয়েছি, একটা আনন্দ নিজের ভিতরে খুঁজে পেয়েছি। যা টাকা দিয়েও সম্ভব নয়! কেন যেন, মন বলছিলো; আজকে একটি ভালো কাজ দুই,ভাই,বোন মিলে করতে পারলাম।
প্রায় অনেকদিন পর রাকিবের সাথে হঠাৎ দেখা হল! রাকিব আমাকে বলছে চল তুই আর আমি মার্কেটে যাই, একটা ওয়ারড্রপ কিনবে আর একটা ড্রেসিং টেবিল কিনবে! আগে একটু রাকিবের সম্পর্কে বলে নেই, রাকিব একটি দরিদ্র ফ্যামিলি থেকে বড় হয়েছে! কিন্তু সে আমার অনেক কাছের একটি বন্ধু। পাঁচ, সাত বছর আগে তাঁর বাবা মারা গিয়েছে, তার মা আর তার স্ত্রী এখন তারা তিনজন মিলেই সুখের সংসার।
রাকিব অনেক স্ট্রাগল করে এই পর্যন্ত এসেছে! পরে দুই বন্ধু মিলে একটা মার্কেটে গেলাম, রাকিবের চোখে আনন্দের খুশি দেখে অনেক ভালোই লাগলো! আমাকে বলছে তার বউয়ের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল, একটা ড্রেসিং টেবিল আর একটা ওয়ারড্রপ কিনবে। তাদের স্বপ্নটা এখন বাস্তবে রূপান্তরিত হচ্ছে! প্রায় অনেকটা দিন এতগুলো টাকা তাঁরা স্বামী-স্ত্রী কাজ করে জমিয়েছে।
রাকিবের মুখ থেকে এই কথা শুনে, নিজের ভেতর অনেক আনন্দে উপভোগ করছি! এবং নিজের ভিতর একটু কষ্টও অনুভব হচ্ছিল, হাজার হলেও, তো, আমি মানুষ। ইনশাল্লাহ, আমাকেও আল্লাহতালা আমার স্বপ্ন পূরণ করার, তৌফিক দান করবে এক দিন! এসব চিন্তা করে রাকিবের আনন্দে মাঝে আমিও অংশগ্রহণ করলাম খুশিতে, পরে রাকিব ড্রেসিং টেবিল ও ওয়ারড্রপ বাসায় নিয়ে গেল, আর আমিও চলে আসলাম নিজের বাসায়!
আমার যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে, তাহলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন! ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit