গল্পের নাম। নৃশংস প্রতিশোধ।। পর্ব (১)

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)

আসসালমু আলাইকুম প্রিয় পাঠ্য ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
--আজকে আপনাদের মাঝে একটি গল্প লিখেছি।

  • গল্পটি থ্রিলার মুভির মত।
    অনেকটা লম্বা টাইপের, তাই পর্ব পর্ব ভাবে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো।

একটা ম্যাসেজের এর শব্দ পেলাম চেক করতেই হতভম্ব হয়ে গেলাম এতে আমার ভিডিও ছিলো যেখানে আমি খুন করছি । আর একটা ভয়েস ছিলো যাতে বলা হয়েছে ,
স্পাই এর মতো আমার জীবন নষ্ট করে দেবে। আমাকে দিয়ে প্রতিনিয়ত অন্যায় আর পাপ করাবে।

killer-4862601_640.jpgsource
এর পর থেকেই আমি মানুষ থেকে অমানুষ এ পরিনত হয়েছি।
-- তার পর কী হলো??
-- এর পরের ঘটনা লোমহর্ষক। আমি পাগলের মতো হয়ে গেছিলাম, ড্রাগের প্রতি আসক্ত হয়ে পরেছিলাম। আসলে আমি বাধ্য হয়ে ছিলাম। আমি নিজ হাতে হত্যা করেছিলাম আমার আপন মানুষদের। এই কথা গুলো বলতে আমি অনুশোচনা বোধ করছি না । কারন আমি এখনো বুঝতে পারছি না আমি মানুষ নাকি হৃদয় হীন কোনো রোবট। আমি নিজেকে কন্ট্রোল এবং বিশ্বাস করতে পারিনা।
-- সজোরে থাপ্পর দিয়ে) তুই কি বলতে চাচ্ছিস ?? তোর বানানো কথা বিশ্বাস করতে হবে?? তোর লিডার কে বল।
--মুচকি হাসি দিয়ে,মুখ থেকে রক্ত ঝড়ছে) লিডার কে যদি জানতে পারতাম ওকে জানে খুন করতাম।
---ডিটেক্টিভ পরশ বললো) পরের ঘটনা কী??
-- আমাকে প্রতিদিন ব্লাক মেইল করা হতো নানান ভাবে। আমি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলাম এই জীবনে। আমি মরতে ভয় পাই। তাই আমাকে দিয়ে প্রতিনিয়ত অন্যায় কাজ করাতো। আমি নিজের হাতে নিষ্পাপ শিশুদের খুন করতে বাধ্য হয়েছি। একদিন আমাকে একটা টাস্ক দেয়া হয়। একজন ইন্সপেক্টর এর কলিজা কেটে নিয়ে আসার তবেই আমি মুক্তি পাবো। আমাকে মুক্তির আশ্বাস দিয়েছিলো । আমি ইন্সপেক্টর রায়হান এর কলিজা চিরে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু মুক্তি আমাকে দেয়া হয়নি। বরং সেই ভিডিও রেকর্ড করে আমাকে আবারো খারাপ কাজ করতে বাধ্য করা হয়।

killer-4773702_640.jpgsource
-- তবে সেই সিরিয়াল কিলার তুই?? সেই স্কুল ছাত্রী কেও কী তুই খুন করেছিস??
-- হা হা হা,
-- নির্লজ্জের মতো আবার হাসছিস ( এই বলে আবার সজোরে থাপ্পর মারল) ওকে বেঁধে পেটাতে থাকো‌।

৭-১২-২২
ব্রেকিং নিউজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রায়হান ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী এর লাশ উদ্ধার।
খুব নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পলাশ টিভি টা অফ করেই , ঘটনা স্থলে চলে গেলো হাতে গ্লাভস পরে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো , লাশ এর চোখ খুব ভয়ংকর ভাবে তুলে ফেলা হয়েছে। রায়হান এর ফোন ডিটেইলস এবং সি সি টিভি ফুটেজ পরশ কে চেক করতে দিয়ে সে চলে গেলো মিটিংয়ে মূলত এই হঠাৎ ৩ জনের খুন হওয়ার বিষয়ে সে খুবই চিন্তিত।
এর মধ্যে উপর মহল থেকে বার বার হুমকি দিচ্ছে পলাশ কে। খেয়ে না খেয়ে সে লেগে আছে আসল কালপিট কে ধরার জন্য । একজন কে ধরতে পারলেও । আরেকজন কে সেটা এখনো বোঝাই যাচ্ছে না। কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সব প্রমান লোপাট করে দিয়েছে কিলার।
মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে পলাশের।
সে দ্রুত মিটিং শেষ করে আবার ফিরে গেলো লকাবে।
গিয়ে আমাকে আবার প্রশ্ন করলো, । ততক্ষণে আমার অবস্থা খারাপ মুখ থেকে অনবরত রক্ত পরছে। মুখে গরম ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিয়েছে আমার। কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারছি না কীভাবে এখানে এলাম । আর কেই বা আমি , আমার মাথা ঝিমঝিম করছে। অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে চেয়ারে হাত পা বাধা অবস্থায় আবিষ্কার করলাম। চিৎকার দিতেই কন্ঠস্বর এর আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। চিৎকার দিয়ে বলতে লাগলাম এ কী?? আপনারা কেনো একটা মেয়েকে এভাবে বেঁধে রেখেছেন। আপনাদের লজ্জা করে না আপনারা আমার মতো একটা নিরীহ মেয়েকে এভাবে বেঁধে রেখেছেন।
-- পলাশ হতভম্ব হয়ে গেলো। হঠাৎ কী করে এর ক্যারেক্টার চেইন্জ হতে পারে। মেয়েটা তো এতো দিন নিজেকে ছেলে বলে দাবি করেছে। সিট,,, এখন কীভাবে বুঝতে পারবো আসল কালপিট কে । এর পিছনে কার হাত রয়েছে। পরশ, যে করেই হোক তারা তারি একে এর আগের ক্যারেক্টারে ফিরাও। নয়তো আমাদের সব পরিকল্পনা শেষ।

-- জী স্যার বলে মাথা নাড়ল পরশ।

  • দেখুন আপনারা আমার সাথে ভালো করছেন না। আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ । আমি আমার পরিবারের কাছে ফিরতে চাই আমাকে মেরে ফেলবেন না। আমার বাবা মা চিন্তা করছেন।

-- পরশ হতভম্ব হয়ে গেলো । কী বলে এই মেয়ে সে তো নিজেই তার বাবা মা কে খুন করেছে,২ বছর আগে । তবে তার কী কিছুই মনে নেই। না কী সব কিছু অভিনয়।
পরশ আবার সজোরে থাপ্পর দিলো আমাকে আমি আবার অজ্ঞান হয়ে গেলাম । চোখ খুলতেই নিজেকে বিছানার উপরে পেলাম কেউ একজন মুখোশ পরে আমার পাশে এসে বসলো , আমার হাত পা বেঁধে দিলো। আমি ভয়ে কুঁকড়ে উঠলাম। মনে নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তবে সেই কিলার কী পরশ?? আমি চিৎকার করে বললাম আমি জানি তুমি পরশ । তুমিই সিরিয়াল কিলার আমাকে কেনো বেঁধে রেখেছো?? আমাকে ছেড়ে দাও সত্যি বলছি আমি কখনোই কিছু করিনি, কারো সাথে অন্যায় করিনি।
তখন মুখোশধারী টিভি টা অন করে দিলো । টিভি তে দেখা যাচ্ছে মুখোশধারী লোকটা একের পর এক খুন করে যাচ্ছে । আমি আতংকিত হয়ে গেলাম । যখন টিভির সেই মুখোশধারী কিলার মুখোশ উন্মোচন করলো তখন দেখলাম সেই কিলার আমি নিজেই । আমার মাথা ঘুরছে এটা কীভাবে সম্ভব যদি ওটা আমি হই আর বর্তমানের এটাও আমি থাকি তাহলে আমার সামনে কে?? না কী আমার মতো দেখতে অন্য কেউ। যে সবার আড়ালে একের পর এক খুন করে যাচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।
ভাবতে লাগলাম যে করেই হোক আমার এখান থেকে পালাতে হবে , যে কোনো উপায়ে পালাতে হবে ‌ । আপাতত আমার হাত পা বাধা নেই। অনেক কষ্টে উঠে দাঁড়ালাম , লোকটার হাতে একটা ইনজেকশন । হয়তো এটাতে ড্রাগ আছে। হাতের কাছে একটা লোহার রড পেলাম , পিছন থেকে গিয়েই লোকটার মাথায় সজোরে আঘাত করলাম । মাথা থেকে রক্ত ঝড়ছে । মুখোশ খুলে আমি অবাক হয়ে গেলাম , এটা ইন্সপেক্টর পলাশ। তবে পরশ কোথায় । হয়তো ওকেও এখানেই কোথাও আটকে রাখা হয়েছে । খুঁজতে শুরু করলাম ,বন্ধ একটা রুম দেখে সেখানে প্রবেশ করলাম ।
রুমে গিয়ে আমি যা দেখলাম তাতে রীতিমত চমকে উঠলাম এটা কীভাবে সম্ভব , ফ্যামিলি ফটোতে আমার মা বাবা সহ ইন্সপেক্টর পলাশের ছবি কীভাবে আসলো??
আর এখানে বিয়ের ফটোতে কী করে আমার সাথে ইন্সপেক্টর পলাশ ?? তার মানে এই মাত্র আমি নিজের হাতে নিজের হাজবেন্ড কে খুন করেছি । ওহ নো।

আজ এই পর্যন্তই, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল এর দ্বিতীয় পর্ব আপলোড হবে ইনশাআল্লাহ।

ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, এই বলে নিচ্ছি।
আসসালামু আলাইকুম ❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দারুন হয়েছে আপনার গল্পটা।পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

লেখাটা যদি আপনার নিজের হয় তাহলে সত্যি আপনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি, তবে একজায়গায় আপনি লোমহর্ষক লিখেছেন, যেটা আমার মনে হয় রোমহর্ষক হবে!
সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ করলাম আপনার গল্পো।

Loading...

এক কথায় অসাধারণ, আমি এমনিতেই রহস্য গল্পের পোকা, তার উপরে আপনার এই লেখা বাড়তি পাওনা। কাজেই অনুরোধ রইলো ভবিষ্যতেও লেখা ভাগ করে নেবার।