মিষ্টি কুমড়ো পাতার বড়া রেসিপি

in hive-120823 •  last month 

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন ।আজকে নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।

IMG20240927133741.jpg

আমরা ছোট থেকে বড় সকলেই ভাতের সাথে বড়া খেতে ভালোবাসি। তেলেভাজা জিনিস খেতে সকলেই খুব পছন্দ করে। তবে আমি খুব একটা তেলেভাজা জিনিস খায় না। একদমই খায় না বলা ভুল হবে। মাঝে মাঝে লোভ সামলাতে পারি না তখন খেয়ে নিই। আমাদের বাড়ির সকলেই মোটামুটি তেলেভাজা জিনিস খেতে পছন্দ করে। তবে প্রত্যেকদিন যদি নিত্য নতুন তেলেভাজা হয় তাহলে তো আরো ভালো। আমি অনেক ধরনেরই বড়া খেয়েছি। তবে আমি কখনো কোন পাতা দিয়ে বড়া করে খাওয়া হয়নি। এই প্রথমবার আমি মিষ্টি কুমড়ার পাতা দিয়ে বড়া ভেঁজে ছিলাম।

link

সব সময় মিষ্টির কুমড়ো পাতা পাওয়া যায় না। আমি অনেক কষ্টেই মিষ্টি কুমড়োর পাতাগুলো জোগাড় করেছিলাম। কারণ সেদিন মিষ্টি কুমড়ো পাতার বড়া খেতে খুব ইচ্ছে করছিল। অন্যান্য কুমড়ো পাতা বড়া আমি কোনদিন ট্রাই করিনি। তবে শুনেছি চাল কুমড়োর পাতা দিয়ে বড়া করলে নাকি তিতো লাগে। এরকম বড়া খেলে শরীরের পক্ষেও অনেক উপকারী ।কারণ বলার সাথে সাথে আমাদের শাক খাওয়া ও হচ্ছে। আর মুসুরির ডালে তো অনেক রকম প্রোটিন রয়েছে। এরকম পড়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালই হবে। চলুন তাহলে শুরু করি মিষ্টি কুমড়ো পাতার বড়া রেসিপি।

উপকরণ
নংসামগ্রীপরিমাণ
মুসুরির ডাল১ কাপ
আদা১০ গ্ৰাম
কাঁচা লঙ্কা১০ টা
রসুনের কোয়া৬ টা
লবণ১ চামচ
হলুদহাফ চামচ
মিষ্টি কুমড়োর পাতা৬ টা
সাদা তেলপরিমাণ মতো

IMG_20241030_215321.jpg

প্রথম ধাপ

প্রথমেই আমি একটা পাত্র নিয়েছি। এরপর এক কাপ মুসুরির ডাল পরিমাণ মতো জল দিয়ে খানিকক্ষণ ভিজিয়ে রেখেছিলাম।

IMG_20241030_215509.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

খানিকক্ষণ পর ভালোভাবে ভিজে যাওয়ার পর ডাল ভালোভাবে দু থেকে তিনবার জলে ধুয়ে রেখে দিয়েছি। একই সাথে মিষ্টি কুমড়োর পাতা গুলো ভালো করে ধুয়ে জল ঝরানোর জন্য রেখে দিয়েছি। ভালোভাবে জল না ঝড়লে ডাল বাটা কুমড়োর পাতার গায়ে লাগবে না।

IMG_20241030_215616.jpg

তৃতীয় ধাপ

এরপর মুসুরির ডাল মিক্সার এর ভিতরে দিয়েছি। ডাল দেওয়ার পর আমি পরিমাণ মতো আদা দিয়েছি। এরপরে কাঁচা লঙ্কা ,রসুন ,সামান্য পরিমাণে জল দিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডারে ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে।

IMG_20241030_215730.jpg

চতুর্থ ধাপ

ভালোভাবে পেস্ট করে নেবার পর। একটা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে। ঢেলে নেওয়ার পর পরিমাণ মতো লবণ, হলুদ দিয়ে ভালো করে হাত দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।

IMG_20241030_182336.jpg

IMG_20241030_182353.jpg

পঞ্চম ধাপ

ভালোভাবে মিশিয়ে নেবার পর একটা কুমড়োর পাতা নিয়ে পাতার পাতার সারা অংশে ডাল বাটা হাতের সাহায্যে লাগিয়ে নিতে হবে।

IMG_20241030_182418.jpg

IMG_20241030_182158.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

এক পিঠে লাগানো হয়ে গেলে কুমড়োর পাতাটা আবার ভাঁজ করে নিতে হবে। ভাঁজ করে নেয়ার পর সেই অংশটা তে ও ডাল বাটা লাগাতে হবে। এই ভাবেই প্রত্যেকটা ভাঁজ করে নিয়ে ডাল বাটা লাগিয়ে যেতে হবে। ভিডিও লিংক দেওয়া আছে ।আপনারা চাইলে আরো ভালো করে দেখে নিতে পারেন ।কিভাবে প্রত্যেকটা ভাঁজে ভাঁজে ডাল বাটা লাগাতে হবে।

IMG_20241030_220025.jpg

সপ্তম ধাপ

এইভাবে সম্পূর্ণ পাতার অংশটা ডাল বাটা লাগানো হয়ে গেলে। আমি গ্যাস অন করে কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলেই সামান্য পরিমাণে তেল দিতে হবে। বেশি তেল দিলে হবে না। তেল গরম হলে একটা একটা করে মিষ্টি কুমড়োর পাতার গুলো কড়াইয়ের তেলে দিয়ে দিতে হবে। এরপরে প্রায় কুড়ি থেকে তিরিশ মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

IMG_20241030_182539.jpg

অষ্টম ধাপ

৩০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে আবার মিষ্টি কুমড়া পাতার বড়াটা উল্টে দিতে হবে। যেহেতু কুমড়ো পাতার বড়াটা অনেকটাই মোটা সাইজের হয় তাই হতে একটু সময় লাগে। গ্যাস সবসময় মিডিয়াম ফ্লেমে রাখতে হবে।

IMG_20241030_155654.jpg

নবম ধাপ

আবারো কুড়ি থেকে ত্রিশ মিনিট পর ঢাকনা খুলে বড়া গুলো আস্তে আস্তে তুলে নিতে হবে।

IMG20240927133747.jpg

তৈরি

এই ভাবেই তৈরি হয়ে যাবে মিষ্টি কুমড়োর পাতার বড়া।

খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। এভাবেই আপনারা বাড়িতে বড়া তৈরি করে নিজেরাও খেতে পারেন এবং বাড়ির অন্যদের কেউ খাওয়াতে পারেন। এরকম বড়া তৈরি করতে বিশেষ কোনো উপাদান লাগে না। আবার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তৈরি করা যায়। আমাদের বাড়ি সকলেরই তো খুব পছন্দ হয়েছিল ।এই রকম মুচমুচে বড়া খেতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। দেখতেও কিন্তু অসাধারণ হয়েছিল। দুপুরবেলায় গরম ভাতের সাথে এইরকম মুচমুচে বড়া ভাজা খেতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। আমি আমার পরিমাণ মতো বড়া ভেঁজে ছিলাম। আপনারা আপনাদের পরিমাণ মতো বাঁচতে পারেন। যদি আপনারা বেশি বড় ভাবেন তাহলে সবকিছু দিয়ে উপাদান আরো বেড়ে যাবে।


আজ এখানেই শেষ করছি ।আশা করছি সকলে খুব ভালো লাগবে। আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

বাঃ! দারুণ লাগলো তো রেসিপি টা। ভীষণ লোভনীয় আর মজাদার রেসিপি। এমনিতেই ভাজাভুজি জিনিস খেতে আমি খুব ভালোবাসি। আর মুসুর ডালের বড়া খেতে তো ভীষণ ভালো লাগে। তাই বাড়িতে মাঝে মাঝেই মুসুর ডালের বড়া ভাজা হয়। আর ভাজার কিছুক্ষণ এর মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়, এতটাই প্রিয় আমার।

তোমার এই রেসিপিটা খুবই ইউনিক লাগলো। এইভাবে কখনো বাড়িতে রান্না হয়নি। আমি মোবাইলে অনেক ভিডিও দেখেছি যেখানে ডালের পেস্ট, নুন , লঙ্কার গুঁড়ো, হলুদ দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে কচুপাতার ওপরে ভালো ভাবে লাগিয়ে কচুপাতা গুলোকে ভাপিয়ে নেওয়া হয় এবং তারপর সেগুলোকে গোল গোল করে কেটে ভেজে নেওয়া হয় এবং তারপর সেইগুলা দিয়ে তরকারি বানায়। সেই রেসিপি দেখে বাড়িতে একবার ট্রাই করেছিলাম। তবে তোমার এই রেসিপিটা কখনো বাড়িতে রান্না হয়নি বা অন্য কারোর বাড়িতেও খাইনি। খুব ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে এক্ষুনি খেয়ে নিই।

আর তুমি এত ডিটেইলস এ ভিডিও+ ছবি দিয়েছো যে বাড়িতে বানাতে কোনো সমস্যার হবে না।

তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা রেসিপি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।

আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

একদমই নতুন একটা রেসিপি শিখলাম,, বেশ ভালো লেগেছে আমার নতুন কিছু শিখতে পেরে ডালের বড়া খেয়েছি বহুবার তবে কুমড়া পাতায় যে এভাবে ডালের বড়া তৈরি করা যায় সেটা কিন্তু আমার জানা ছিল না।

খুবই সহজ এবং অল্প সময়ের মধ্যে আপনি এই রেসিপিটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, আমি কখনো বড়া ভাতের সাথে খেয়ে দেখিনি তবে অবশ্যই এই রেসিপিটা একদিন তৈরি করে গরম ভাতের সাথে টেস্ট করে দেখব।।।

আমার রেসিপিটি আপনাদের ভালো লেগেছে এটা জেনে খুব ভালো লাগলো।