আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের কাছে নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
২৭ শে জৈষ্ঠ্য ছিল আমার বড়ো মামার জন্মদিন। আমার পোস্ট আপনারা যারা নিয়মিত পরেন তারা প্রত্যেকেই জানেন। আমি ছোট থেকে মামার বাড়িতে মানুষ হয়েছি। মামারা আমাকে খুব ভালোবাসে। মামাদের বাড়ির প্রত্যেকটা অনুষ্ঠান কিংবা যে কোন কাজেই আমাকে নিমন্তন্ন করে। কিছুদিন আগে বড়ো আমার জন্মদিন ছিল তা আপনারা সকলেই জানেন। আর জন্মদিন মানেই আমার দিদা ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
আমার মা কিংবা ছোট মামা,মেজ মামা কারোরই জন্মতারিখ দিদার মনে নেই। কিন্তু জন্ম মাসেই প্রত্যেককে পায়েস রান্না করে দেয়। শুধু বড় মামার জন্ম তারিখটা দিদার মনে আছে। প্রত্যেক বছরই যখনি জৈষ্ঠ্য মাস পরে ।তখন থেকেই দিদা আমাকে বারবার বলতে থাকে যে ২৭ তারিখটা আসলে আমাকে মনে করিয়ে দিস। কারণ দিদার বয়স হয়েছে তাই মনে রাখতে পারে না। এখন দিদা অসুস্থ তাই অনেক সবকিছু মনে রাখতে পারে না। কিন্তু তারিখটা যেই মনে করিয়ে দেওয়া হয়। বড়ো ছেলের জন্মদিন বলে কথা। মা কি আর বসে থাকতে পারে। আয়োজন ঠিকই করে তার সামর্থ্য মতো।
প্রত্যেক বছরই বিয়ের পর থেকে মামার জন্মদিনের দিন আমি একাই খেতে যাই। আমার বর বাড়িতে থাকে না।কিন্তু এবার যেহেতু সোমবার পড়েছিল। তাই রবিবারে আমার বর বাড়ি এসেছিল। তাই ওকেও বলেছিল যাওয়ার জন্য। বড়ো মামা জোর করেই বলল সোমবারে আমাদের বাড়িতে খেয়ে তারপরে কাজে যাবে। যাইহোক মামার কথা মত ও রাজি হয়েছিল। কিন্তু এখন দিনের বেলায় সূর্যের যা তাপ বাইরে বেরোনো যায় না। মানুষ ঘরে বসেই এমনি গরমে হাঁসফাঁস করে। তার ওপর দুপুরবেলায় খাওয়া দাওয়া।
আমরা দুজনেই দুপুরবেলায় গেলাম মামার বাড়ি খেতে। দিদা তো বারবার ফোন করছে তাড়াতাড়ি আসবার জন্য।যাবার পরে মামী বলল মামাকে খেতে দেওয়ার জন্য। মামি পৌরসভায় একটা কাজ করে। কাজ থেকে ফিরে এসে হুটো পাটা করে রান্না করেছে। মামীর কথামতো আমি মামাকে সাজিয়ে খেতে দিলাম। দিদা যেহেতু অসুস্থ তাই নিজের হাতে শুধু পায়েস টা রান্না করেছিল। দিদা মামাকে ধান, দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করল ।তারপর মামা খাওয়া শুরু করল । আমি তো মামাকে একটা গেঞ্জি উপহার দিলাম । আমার দেওয়া গেঞ্জিটা পড়ে মামা জন্মদিন পালন করলো। কারণ আমি যেটাই দেই না কেন মামার খুব পছন্দ হয়। মামার খাওয়ার পর আমি, দিদা, মামি বুনু, আমার বর মশাই সবাই আস্তে আস্তে খেয়ে নিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষে শশুর আর জামাই মিলে খেলার গল্প শুরু করে দিল। আগের দিন ছিল ইন্ডিয়া আর পাকিস্তানের খেলা। আমার মামি, বুনু সবাই ইন্ডিয়াকে সমর্থন করে। আর মামা পাকিস্তানকে। তাই মামা যখন দেখেছে ইন্ডিয়া জিতে যাচ্ছে ।পাকিস্তান হেরে যাচ্ছে ।তখন মামা ঘুমিয়ে পড়েছিল ।সেই গল্পই পরের দিন দুপুরে জামাইয়ের সাথে করছিল। মামি তো দেখলাম বেশ মজাই পেয়েছে ইন্ডিয়া জিতেছে বলে।
আমার বর তো খাওয়া দাওয়া করে বিকেল বেলায় চলে গেল ।ওর কাজের জায়গায়। আর আমাকে বলে গেল মামার জন্য একটা কেক নিয়ে এসো সন্ধ্যা বেলায়। আমি মামার বাড়ি ফিরে আসতেই ।ঈশা বলল চলো বৌদি একটু হেঁটে আসি। ওর মাঝে মাঝে মনে পড়ে হাঁটতে যাওয়ার কথা ।যাইহোক আমিও ভাবলাম হাটা ও হবে। আমার একটা কেক আনাও হবে। বিকেলে প্রচন্ড গরম পড়েছিল। মনে হচ্ছিল হাত-পা জ্বলে যাচ্ছে এত গরম। সারাদিন গরমে অসুস্থ বোধ করছিলাম ।কেক কিনতে বেরিয়ে দেখলাম আকাশে হালকা বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
ভাবলাম ভালোই হবে। বৃষ্টি হবে। আবার ভাবলাম অনেক সময় বিদ্যুৎ চমকানোর পরেও বৃষ্টি আসে না ।অনেকটা হাঁটার পর কেক কিনে বাড়ি ফিরলাম। তখনই হালকা হালকা হাওয়া দেওয়া শুরু করেছে। বাড়ি থেকে মামার বাড়ি যাওয়ার সময়ে প্রচন্ড মেঘ ডাকছে। আর হালকা ঝড় উঠেছে। মামার বাড়ি যাওয়া মাত্র কারেন্ট চলে গেল। ভাবলাম হয়তো আর কারেন্ট আসবে না ।কেক কাটাও হবে না। খানিকক্ষণ পর কারেন্ট আসলো। আমরা তাড়াতাড়ি করে কেকটা কেটে নিলাম। কারণ যদি আবার কারেন্ট চলে যায়। কেকটা দেখে বড় মামা খুব খুশি হয়েছিল। কারণ বড় হওয়ার পর থেকে আমি বড় আমার জন্য একটা করে জন্মদিনে কেক নিয়ে যায়। কারণ ছোট থেকে বড়ো মামাই আমাকে ভীষণ ভালোবাসতো। সব মামাদের থেকে। তবে এখনো একই রকম ভালোবাসে। আমাকে এত ভালবাসে দেখে আমার বোনরা মাঝে মাঝে খুব রেগে যায়।
সেদিন বাইরে এত জোরে জোরে মেঘ ডাকছিল ।আর বাজ পড়ছিল। সত্যিই খুব ভয় লাগছিল। সারাদিনে গরমের পর মানুষ একটু সস্তি পেয়েছিল। বাইরে তাকিয়ে দেখলাম এত জোরে মেঘ ডাকছিল। যে বাইরেটা দেখে মনে হচ্ছিল এখনো দিনের বেলা। সেদিন ঝড়, বৃষ্টির পরে আর বাড়ি ফিরে আসিনি ।কারণ বাড়িতে কারেন্ট আসলেও আমাদের ওখানে রাস্তা লাইট গুলো জ্বলছিল না। খুব অন্ধকার হয়েছিল রাস্তাটা ।তাই দিদা ,মামা বাড়ি আসতে বারন করলো। আমিও বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দিলাম। আমি আজ বাড়ি ফিরব না । তবে সেদিন গরমের মধ্যে ও একটু মজা করে কাটিয়েছিলাম দিনটি।আজ এই পর্যন্তই থাক ।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। পরের দিন আবার নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব।
প্রথমেই আপনার মামাকে জানাই শুভ জন্মদিন। অনেক আনন্দের সাথে মামার জন্মদিন পালন করেছেন।বয়স বাড়ার সাথে সাথে যদিও জন্মদিন নিয়ে চিন্তা আর কারোরই থাকে না। কিন্তু কাছের মানুষজন যখন তা উদযাপন করে তখন খুব ভালো লাগা কাজ করে। আপনার মামাকে উপহার দেওয়া গ্যাঞ্জিটা অনেক সুন্দর হয়েছে। তার মঙ্গল এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন অনেক আনন্দের সাথে মামার জন্মদিন পালন করেছিলাম। বয়স বাড়ার সাথে সাথে নিজেদের জন্মদিন ভুলে গেলেও ছোটরা তখন মনে করিয়ে দেয়। পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমে আপনার মামার জন্য শুভকামনা রইল। সৃষ্টিকর্তা তাকে সব সময় ভালো রাখবেন এবং তিনি দীর্ঘজীবী হোক এই কামনা করি।
যাইহোক আপনার দিদার অনেক বয়স হয়েছে তার পক্ষে এখন সব কথা মনে রাখা সম্ভব নয় এটা আমরা অনুভব করতে পারি। আসলে মানুষের যখন বয়স হয়ে যায় তখন সেই মানুষ সব কিছু মনে রাখতে পারে না। আপনার ছোট মামার এবং আপনার মায়ের জন্ম তারিখ মনে না থাকলেও আপনার বড় মামার জন্ম তারিখ আপনার দিদার মনে আছে। হয়তোবা পরিবারের বড় ছেলে বলে তার এই দিনের কথা স্মরণে আছে।
যাইহোক মা সন্তানের জন্য আয়োজন করবে এবং সবাইকে দাওয়াত করবে এটাই স্বাভাবিক মায়ের সাধ্যমত সন্তানদের খুশি করার চেষ্টা সব সময় করে যান প্রতিটা বাবা-মা আপনার দিদা ও ঠিক সেই কাজটি করেছেন।
এতো সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো এবং সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আপনাকে জানাই ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন পরিবারের বড় ছেলে বলেই হয়তো জন্মদিনটা দিদা মনে রেখেছেন। আমার পোস্টটিতে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই আপনার মামাকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন। আপনার মামার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার বিগত পোস্টে পড়েছি আপনার দিদা যেকোনো কারো জন্মদিনের মাসে পায়েস রান্না করে খাওয়ান।
আপনার ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে বেশ ভালোভাবেই জন্মদিন উদযাপন করেছেন
সুন্দর মুহূর্ত নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit