সম্প্রতি দেখা তিনটি মুভি

মুভিটির সবচেয়ে অসাধারণ দিক ছিল এর গল্পের গভীরতা এবং কাহিনির গতিময়তা। প্রতিটি দৃশ্যই এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যেন পুরো কাস্ট দর্শকদের সামনে গল্পটি নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। এটি কোনো সাধারণ জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্চার মুভি নয়; বরং এতে অনেক আবেগময় মুহূর্ত এবং থ্রিলের মিশ্রণ রয়েছে। একটি কল্পকাহিনির সাথে মায়া সভ্যতার সংস্কৃতির অনন্য এক সংমিশ্রণ, যা মুভিটিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে। প্রথমার্ধে মায়া সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক দেখানো হয়েছে যা বেশ চিন্তিত করে তুলতে পারে, আর দ্বিতীয়ার্ধে থ্রিল এবং অ্যাকশনের দারুণ সংমিশ্রণে রোমাঞ্চিত করেছে। এছাড়া, মনোমুগ্ধকর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকটি এমনভাবে যুক্ত হয়েছে যেন গুজবাম্প সৃষ্টি করে।

মুভির মূল চরিত্র রুডি ইয়ংব্লাড এর অভিনয় জাস্ট টপনচ এই মুভিতে। তার পারফরম্যান্স পুরো মুভির মধ্যে অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছে, আর অন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাজও ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মুভির সিনেমাটোগ্রাফি এবং জঙ্গলের লোকেশনগুলো যেন চোখের জন্য এক অপূর্ব ভিজ্যুয়াল ট্রিট। মুভিটি এমন একটি চমকপ্রদ মুহূর্তে শেষ হয়েছে যেখানে স্বাভাবিকভাবেই মনে হয়েছে দ্বিতীয় পর্ব আসবে। তবে দুঃখজনকভাবে ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এর দ্বিতীয় কিস্তির কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। যদি এখনো না দেখে থাকেন, তবে এটি অবশ্যই আপনার দেখা উচিত।

ব্যক্তিগত রেটিং : ১০/১০

আইএমডিবি রেটিং : ৭.৮/১০

মুভিটি দেখার পর আপনার মনে এমন এক প্রশ্ন জাগবে: অপরিচিত কাউকে বিশেষ করে অজানা মেয়েদের বাড়িতে আশ্রয় দিলে কতটা ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে? এই মুভিতে তাই একটি হাসিখুশি পরিবার কীভাবে মুহূর্তেই বিশৃঙ্খলার মধ্যে ডুবে যেতে পারে তার রোমহর্ষক চিত্রায়ণ করা হয়েছে। বাড়ির সম্পদ ধ্বংস করা এবং একজন পুরুষের ওপর মানসিক নির্যাতনের কাহিনী এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, মুভিটি শেষ করার পরও আপনার মন খারাপ থাকবে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিয়ানু রিভস। যদিও কয়েকটি দৃশ্যে তার মুখের অভিব্যক্তি আমার কাছে অতটা ভালো লাগেনি তবে অন্যান্য দৃশ্যগুলোতে তার এক্সপ্রেশন ছিল বেশ চমকপ্রদ।

ব্যক্তিগত রেটিং : ৩.৫/১০

আইএমডিবি রেটিং : ৪.৯/১০

নায়িকা নাদ্রিজা সাফার জীবন একসময় পার্টি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ড্রিংকস, আর বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। নিজ ধর্ম থেকে অনেক দূরে থাকা নাদ্রিজার জীবনে এক দূর্ঘটনা এমন এক পরিবর্তন নিয়ে আসে যা তাকে আল্লাহর পথে নিয়ে আসে। এই পথে চলতে গিয়ে তার পরিচয় ঘটে আমিরের সাথে, যে আল্লাহর নামেই দিন শুরু করে এবং ধর্মকে জীবনের প্রধান অবলম্বন মনে করে। তাদের দুজনের সম্পর্ক ধীরে ধীরে জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করে। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই ইন্দোনেশিয়ান মুভিটি অত্যন্ত সাদামাটা অথচ হৃদয়গ্রাহী। সাধারণত আমি ইন্দোনেশিয়ান হরর মুভি দেখি, তবে এই প্রথম একটি স্পিরিচুয়াল রোমান্টিক মুভি দেখলাম যা সত্যিই মনে দাগ কেটেছে।

ব্যক্তিগত রেটিং : ৮/১০

আইএমডিবি রেটিং : ৬.৮/১০