প্রথমবার মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখা

in hive-120823 •  3 days ago 
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি ।আজকে আবারও চলে এসেছি আগের পোস্টটির পরবর্তী পর্ব নিয়ে। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

আগের পোস্টে আপনাদের জানিয়ে ছিলাম বহু বছর পর আমি বন্ধুর সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। মাল্টিপ্লেক্স- এর অ্যাম্বিয়েন্স কেমন ছিল, সিনেমা টা কেমন লাগলো এবং সিনেমা দেখার পর আমরা আর কোথায় গেলাম সেই সব নিয়েই আজ গল্প করবো।

আমাদের শো টাইম ছিল ৩.১৫ তে। আমরা ২.৪০ নাগাদই পৌঁছে যায়। তারপর হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকায় আমরা স্মার্ট বাজার ঘুরে ফিরে দেখতে থাকি। সেই সময় বেশ কিছু গ্রসারি আইটেম পছন্দ হয়। তবে তখন আর কেনা হয়নি কারণ সেই সব জিনিসপত্র নিয়ে আমরা ভিতরে ঢুকতে পারতাম না। আমাদের বাইরে কাউন্টারে রেখে যেতে হতো। তাই আমরা ঠিক করলাম সিনেমা দেখে বেড়িয়ে কিছু গ্রসারি আইটেম কিনবো। এই কমপ্লেক্সের ভিতরেই আরো অনেক সপ্ ছিল , যেমন- Pantaloons, Blushless, Easybazaar ইত্যাদি।

1000095426.jpg

1000095427.jpg

সিনেমা দেখে বেড়িয়ে বাইরে থেকে তোলা ছবি

গ্রসারি আইটেম দেখতে দেখতেই আমাদের ৩.১০ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমরা শো দেখার জন্য চেকিং সম্পন্ন করে নির্দিষ্ট সিটে গিয়ে বসে পড়ি। আমাদের সিট নম্বর ছিল Platinum D-5, D-6। প্রথমে সিট খুঁজে পেতে অসুবিধা হলেও যারা গাইড করেন তারা আমাদের নির্দিষ্ট সিটে বসিয়ে দেন।

1000095438.jpg

সিনেমার জন্য অনলাইনে টিকিট বুকিং

ভিতরের পরিবেশ টা সত্যিই অসাধারণ। এত বছর সিনেমা দেখতে না যাওয়ার ফল স্বরূপ মনে মনে একটু ভয় পাচ্ছিলাম এটা ভেবে যে ভিতরে আমার সাফোকেশন হবে না তো। কিন্তু ভিতরে যাওয়ার পর আমার সব ভয় কেটে গিয়েছিল। আরাম করে সিটে বসে সিনেমা উপভোগ করতে লাগলাম ।

1000095416.jpg

1000095419.jpg

ভিতরের সুন্দর পরিবেশ

1000095413.jpg

1000095411.jpg

এবার আসা যাক সিনেমা টা কেমন লাগলো সেই বিষয়ে। সিনেমার প্রডিউসার অভিনেতা শোহম। এই সিনেমার মেইন টপিক হল আমরা অনেকেই অন্ধের মতো জ্যোতিষীদের ভরসা করে থাকি। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলি। কিন্তু সেটা পুরোটাই আমাদের বিশ্বাসের ওপর ভর করে আমরা করে থাকি। সত্যিই আমার অসাধারণ লেগেছে সিনেমাটা। প্রত্যেকটা চরিত্রের এত সুন্দর অভিনয় সিনেমাটা কে আরও সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে মহাগুরু মিথুন চক্রবর্তী -র অভিনয় সিনেমাতে রূপ -রস-গন্ধ এনে দিয়েছে। তাছাড়া রজতাভ, শাশ্বত, দেবশ্রী---- এনাদের অভিনয়ও অসাধারণ ছিল। অনেক বছর পর অভিনেত্রী দেবশ্রী কে অন স্ক্রিন দেখে খুব ভালো লাগলো। আর বাকি সিনেমার গল্প জানতে হলে আপনাদের অবশ্যই সিনেমাটা দেখতে হবে। তাই সিনেমা সম্পর্কে আর বিশেষ কিছু বললাম না।

২ ঘন্টা ১৫ মিনিট যে কখন কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। দেখতে দেখতে সিনেমা শেষ হলো। আমরা সিনেমা হল থেকে বেড়িয়ে গেলাম। এর পর আমরা আবারও চলে গেলাম গ্রসারি আইটেম কেনার জন্য গ্রাউন্ড ফ্লোরে। তারপর বেশ কিছু জিনিস কেনা হলো। অনেক কিছুই এখানে অফারে ছিল।

1000095421.jpg

গ্রসারি আইটেম কেনার সময়

এত বড়ো কমপ্লেক্সের ভিতরে ঘুরতে ঘুরতে আমার যেন ভুলভুলাইয়ার মতো মনে হচ্ছিল। কোথা দিয়ে ঢুকছি আর কোথা দিয়ে বেড়োচ্ছি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। যাই হোক, কেনা কাটার পর্ব শেষ করে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম ভুঁড়ি ভোজের উদ্দেশ্যে। বেশ অনেকটা সময়ই পেটে কিছু পড়েনি তাই দুজনেরই খিদে পেয়ে গিয়েছিল। সুতরাং সময় অপচয় না করে আমরা পৌঁছে গেলাম কৃষ্ণনগরের প্রসিদ্ধ রেস্টুরেন্ট 'মাদার্স হাট' -এ। এই রেস্টুরেন্ট এর অনেক গল্প আছে , সেটা না হয় পরবর্তী কোনো পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

1000095430.jpg

আলোক সজ্জিত মাদার্স হাটের একটি অংশ

আমরা ভিতরে ঢুকে নির্দিষ্ট জায়গায় বসলাম। তারপর কিছু খাবার অর্ডার করলাম‌। আমরা স্টার্টার দিয়েই শুরু করলাম। স্টার্টারে নিয়ে নিয়েছিলাম ফিস ফ্রাই। এখানকার ফিস ফ্রাইটা আমার অসাধারণ লাগে। তাই বেশিরভাগ সময়ই এখানে খেতে এলে স্টার্টারে কোনো আইটেম নিলে আমরা ফিশ ফ্রাইটাকেই আগে প্রেফার করি।

1000095433.jpg

ফিশ ফ্রাই

তারপর আমরা নিয়েছিলাম একটা স্যুপ(manchow soup)।এটা আমি প্রথমবার ট্রাই করেছিলাম আমার জাস্ট অসাধারণ লেগেছে। আমার বন্ধুই আমাকে এটা ট্রাই করতে বলেছিল কারণ এটা ওর ভীষণ ভালো লাগে। আমি প্রথমে একটু না -না করছিলাম কিন্তু ট্রাই করার পর আমি সত্যিই এই স্যুপ টার ফ্যান হয়ে গেছি।

1000095432.jpg

Manchow Soup

তারপর আমরা নিয়ে নিয়েছিলাম বাটার নান ও এগ্ চিকেন পাঞ্জাবি তরকা। এই দুটো কম্বিনেশন পার্সোনালি আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর এখানকার খাবারের কোয়ালিটি এবং কোয়ান্টিটি দুটোই খুবই ভালো হয়। তাই বাইরে খেতে বেরোলেই আমরা এই রেস্টুরেন্টটাকেই প্রেফার করি। দুজনেরই ভীষণ ঠান্ডা লেগেছিল তাই আর কোনো কোল্ড ড্রিঙ্কস নিইনি।

1000095407.jpg

আমাদের ভুঁড়ি ভোজ

এরপর শেষ পাতে আমরা নিয়ে নিয়েছিলাম ডেজার্ট হিসেবে আম দই। এখানকার আম দই আমার ভীষণ টেস্টি লাগে। শেষ পাতে মিষ্টি জিনিস খেতে কার না ভালো লাগে। আমার তো খুব ভালো লাগে। তাই মিষ্টি দই দিয়ে মুখ মিষ্টি করে আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম।

1000095409.jpg

টেস্টি আম দই

এই ভাবেই আমরা দিনটাকে সুন্দরভাবে কাটালাম। আজকে এখানেই শেষ করছি। আশা করছি আপনাদের সকলের খুব ভালো লাগবে। কালকে আবার অন্য কোন গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। সকলে ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

তোমার মত আমিও ইজি বাইতে শপিং করতে যেতে ভালোবাসি ।কিন্তু সিনেমা দেখতে আমার একদমই পছন্দ হয় না। ইশা আমাকে বহুবার রিকোয়েস্ট করেছে ।সিনেমা দেখতে যাবার জন্য। কিন্তু আমার সিনেমা দেখতে ভালো লাগে না। যাই হোক সিনেমা দেখে তুমি আবার মাদারস হাটে খেতে গিয়েছিলে ।তবে খেতে আমি খুব পছন্দ করি। তাতে আবার মাদারস হাটে। যাই হোক তোমার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো।

আমিও সিনেমা দেখতে তেমন ভালোবাসি না তবে নতুন নতুন জায়গা explore করতে বেশ ভালো লাগে তাই গিয়েছিলাম।

cc01ab456aeaff68ede60ae0d6128461.jpg

cc01ab456aeaff68ede60ae0d6128461.jpg