নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজ আবারও চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আজ আপনাদের সাথে আমার একটি পছন্দের রেসিপি শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের সকলের খুব ভালো লাগবে।
এতদিন আপনাদের সাথে বিভিন্ন রকম রান্নার রেসিপি শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কোনদিনই আপনাদের সাথে কোন পানীয় তৈরীর রেসিপি শেয়ার করিনি। তাই আজ আপনাদের সাথে একটি জনপ্রিয় পানীয় তৈরির রেসিপি শেয়ার করব। পানীয়টির নাম হল -- 'ঠান্ডাই'।
ঠান্ডাই হল একটি ঠান্ডা পানীয় যা হোলি উৎসবের সময় পান করা হয়। এই ঠান্ডা পানীয় ভারতের উত্তরাঞ্চলে অর্থাৎ পাঞ্জাব, হরিয়ানা,উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ইত্যাদি রাজ্যগুলিতে খুবই বিখ্যাত। দোকানে তৈরি ঠান্ডাই এর চেয়েও বাড়িতে সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি করলে এই ঠান্ডাই অনেক বেশি সুগন্ধী ও সুস্বাদু হয়।
হোলির দিন সকাল থেকেই যেহেতু আমরা ব্যস্ত ছিলাম তাই হোলির আগের দিন রাতে আমার শাশুড়ি মা আর আমার হবু বর মিলে এই ঠান্ডাই বানিয়ে রেখেছিল। আর সেই সাথে অল্প অল্প করে কিছু ফটো তুলে রেখেছিল। ওরা জানে আমি এই প্লাটফর্মে লেখালেখি করি তাই আপনাদের সাথে রেসিপিটি যাতে শেয়ার করতে পারি তাই কিছু ফটো আমাকে না জানিয়ে তুলে রেখেছিল। আর সেই সাথে এভাবে রেসিপিটি বানিয়েছিল তার বিস্তারিত বর্ণনা আমাকে করেছিল।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমরা কিভাবে আমি আজকে রেসিপি টা বানিয়েছিলাম----
নং | সামগ্রী | পরিমাণ | |
---|---|---|---|
১ | দুধ | ২ লিটার | |
২ | মাখা সন্দেশ | ৪০০ গ্রাম | |
৩ | এলাচ | চারটে | |
৪ | কাজুবাদাম | ১০০ গ্রাম | |
৫ | কাঠ বাদাম | ২০০ গ্রাম মতো | |
৬ | কিসমিস | ১০০ গ্রাম | |
৭ | কনডেন্সড মিল্ক | ১ টিউব | |
৮ | পোস্ত | ১০০ গ্রাম |
এই পানীয় বানাতে অনেকে পেস্তাবাদামও দিয়ে থাকেন তবে ঐ দিন আমরা পেস্তাবাদাম ব্যবহার করিনি। আমরা চাইলে কিছু পরিমাণ পেস্তা বাদাম ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আমি কিন্তু এই রেসিপিটি তৈরি করতে কোন রকম চিনি ব্যবহার করিনি। যেহেতু দুধ জাল দেওয়ার ফলে খানিকটা মিষ্টি ভাব আসে আর তার পাশাপাশি তার মধ্যে মাখা সন্দেশ ও কনডেন্স মিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে তাই আলাদা করে আর চিনি দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।আপনারা আপনাদের স্বাদ অনুযায়ী চিনি ব্যবহার করতে পারেন।
ধাপ ১ :
প্রথমেই ওভেনে একটি প্যান বসিয়ে প্যান গরম হয়ে এলে তাতে কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম গুলো দিয়ে দেব তারপর সেগুলোকে হালকা ভেজে নেব।
ধাপ ২:
এরপর সেগুলোকে মিক্সার এর মধ্যে দিয়ে দেবো এবং তার সাথে অ্যাড করব পরিমাণ মতো পোস্ত। এরপর এই সমস্ত কিছুগুলো মিক্সার ঘুরিয়ে মিক্স করে একটা পাউডার তৈরি করে নেব।
ধাপ ৩ :
এরপর ওভেনে দুধের হাঁড়িটা চাপিয়ে দেব। তার মধ্যে ৬-৭ টা গোটা এলাচ দিয়ে দেব। তারপর হালকা আঁচে দুধ টাকে ১২-১৫ মিনিট মতো ফুটিয়ে নেব। তারপরে দুধটা একটু ঘন হয়ে আসবে।
ধাপ ৪ :
এরপর ওই ফুটন্ত দুধ থেকে একটা বাটির মধ্যে কিছু পরিমাণ দুধ তুলে নেব। তারপর তার মধ্যে কনডেন্স মিল্ক আর মাখা সন্দেশ টা দিয়ে ভালোভাবে দুধের সাথে মিশিয়ে নেব। সরাসরি হাঁড়ির দুধের মধ্যে দিলে এই উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশবে না তাই আলাদাভাবে দুধ তুলে নিয়ে উপকরণ গুলো ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
ধাপ ৫ :
এরপর লো ফ্লেমে রেখেই ওই হাঁড়ির দুধের মধ্যে তৈরি করে রাখা বাদামের পাউডার টা অল্প অল্প করে দেব আর মিশিয়ে নেব।
ধাপ ৬ :
এরপর বাদাম পাউডার ভালোভাবে দুধের সাথে মিশে এলে তারমধ্যে কনডেন্স মিল্ক ও মাখা সন্দেশ মিক্সড করে রাখা দুধটা আসতে আসতে হাঁড়ির দুধের সাথে মিশিয়ে নেব।
ধাপ ৭:
এরপর গ্যাস বন্ধ করে দুধটাকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দেব। তারপর যখন দুধটা পুরোপুরি ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন হাঁড়িটাকে ফ্রিজের মধ্যে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দেবো। তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে আমাদের বিখ্যাত পানীয় ঠান্ডাই।
এরপর যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন একটা মাটির ভাঁড়ের মধ্যে পরিবেশন করবো আর উপর থেকে দিয়ে দেবো কুচিকুচি করে কেটে রাখা কাঠবাদাম ও কিসমিস।
আমি এর আগে কখনো ঠান্ডাই টেস্ট করিনি তাই এই পানীয় সম্পর্কে আমার খুব একটা ভালো ধারণা ছিল না। তবে প্রথমবার এত ভালো টেস্ট পেয়েছি যে প্রতিবছর হোলির দিন আমরা এই পানীয় অবশ্যই বানাবো বলে ঠিক করেছি। এতসব উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয় যে এক গ্লাস খেলেই একজনের পেট ভরে যাবে। আপনারও অবশ্যই একবার ট্রাই করতে পারেন। আশা করছি সকলের খুব ভালো লাগবে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আমাদের ঠান্ডাই তৈরির রেসিপি আপনাদের কেমন লাগলো সে কথা জানাতে ভুলবেন না। আগামীকাল আবার অন্য কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
হোলির দিন অনেকে অনেক রকম পানীয় জিনিস খেয়ে থাকে। কিন্তু হোলির দিন আমি সেভাবে কোনদিনই কোন কিছু খেয়ে উঠতে পারিনি। আসলে সেভাবে কোনদিন হোলি খেলায় হয়নি। তবে তুমি ঠান্ডা পানিও জিনিসটি ছবিসহ প্রত্যেকটা উপকরণ সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে তুলে ধরেছে। তবে মনে হচ্ছে এই পানি ও টা বানানো খুবই সহজ। পরেরবার আমরাও চেষ্টা করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অবশ্যই ট্রাই কর। খুবই সুস্বাদু হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit