![]() |
---|
Hello Friends,
এখন প্রায় মধ্যরাত, আমার আবার একটু গভীর রাত না হলে লিখতে মন বসে না। এটা কে আপনারা বলতে পারেন খারাপ অভ্যাস আবার কেউ বলতে পারেন ভালো।
তবে আমি এভাবেই অভ্যস্ত। প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে আমি মনোনিবেশ অর্থাৎ সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি। আর সেক্ষেত্রে আমি এই মধ্যরাতের সময়টা নির্বাচন করতে বেশি পছন্দ করি।
একটু কুশল বিনিময় করে নিই আপনাদের সাথে। আশা করি আপনাদের আজকের দিনটি বেশ ভালো কেটেছে। আমি আসলে আজ আমার একটি স্মরণীয় রাত সম্পর্কে উপস্থাপন করতে চলেছি। তাহলে চলুন দেখে আসি আসলে ওই রাতে কি ঘটেছিল:-
প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে অযস্র স্মরণীয় ঘটনা। কিছু ঘটনা সারা জীবন মনের ভিতর একটা কষ্টের অনুভূতি সৃষ্টি করে। আবার কিছু ঘটনা আনন্দের উদ্বেগ ঘটায়।
|
---|
![]() |
---|
বিশ্ববাসীর সকলেরই জানা যে "আম্ফান ঝড়" কতটা ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়েছিল। যেহেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে অর্থাৎ উপকূলীয় অঞ্চলে আমার বাড়ি তাই আমি সহ আমার পরিবার এবং আমার এলাকা এই "আম্ফান ঝড়ের" ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছিল।
আর যে ঝড়গুলো আমি দেখেছি সেগুলো প্রায় মধ্যরাতের দিকে বেশি আঘাত হানে। যার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে সন্ধ্যার পূর্বেই আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়।
তবে আমরা সাধারণত বাড়ি থেকে বের হই না। এমনিই সর্তকতা অবলম্বন করার চেষ্টা করি। আমার মা-বাবা, ও ঠাকুরমারা বলেন, ঝড়ের সময় নাকি ঘর ছাড়তে হয় না।
কমপক্ষে বছরে একবার হলেও এই দুর্যোগের শিকার হতে হয় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের। তাই দেখা যায় অন্যান্য দেশ বা শহরের মানুষের তুলনায় আমরা একটু সংগ্রামী প্রকৃতির। এক কথায় যেটাকে বলে সাহসী প্রকৃতির।
আমার খুব ভালো করে মনে আছে যে যখন ঝড় বেশ প্রবল বেগে শুরু হয়েছে তখন আমি, আমার বড় কাকু ও বাবা আমার কাকুর ঘরের বারান্দায় খাটের উপর বসে ছিলাম।
মোবাইলে ঝড়ের গতিবেগ পর্যবেক্ষণ করছিলাম। আর এটা দেখেই একটু স্বস্তি হয় কারণ দেখি সেখানে সুন্দরবন ভেদ করে ভেতরে ঢুকতে পারছে না। আবার ভয় লাগে যে এখন এই অবস্থা আর যদি সুন্দরবন না থাকতো তাহলে কি হতে পারতো এখানে।
এক একটা দমকা হাওয়া মনে হচ্ছিল ঘর সহ আমাদেরকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। এভাবেই প্রায় দুই থেকে তিন ঘন্টা চলেছিল। এরই মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ শুনতে পেলাম।
একটু মনের ভেতরটা কেমন জানি করে উঠলো। তারপর আমার মোবাইলে একটা কল আসলো। আমার এক বন্ধু আমাকে কল করে বলছে যে আমাদের সহপাঠী এক বন্ধু মারা গিয়েছে।
আর এটার কারণ ও বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল হঠাৎ কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ার জন্য সময়মতো মেডিকেলে পৌঁছাতে পারেনি। কাকু ও বাবার সাথে বিষয়টা শেয়ার করলাম।
পাড়ার ছেলে এবং বাল্যকালের বন্ধু। অনেক স্মৃতি রয়েছে বিদ্যালয়ের মুহূর্তগুলো। এলাকাতে কোন মেলা হলে বা কনসার্ট হলে ওই বন্ধুর সাথে ঘুরতে যেতাম আমরা। কারণ ওর ই দুইটা বোন পড়তো আমার সাথে আর এটার জন্য সব সময় আমরা একসঙ্গে থাকতাম।
অকাল মৃত্যুটা যেন মেনে নিতে পারলাম না ওই মুহূর্তে আমরা কেউ। ঝড়টা একটু কমে গেলেই সহপাঠীর বাড়িতে পৌছালাম মাঝরাতে। গিয়ে দেখি আমার সহপাঠী অর্থাৎ বন্ধুর মা বাবা খুব কান্নাকাটি করছে।
|
---|
এই ঘটনার পর আমার একটা কথাই মনে গেঁথে রয়েছে যে " মৃত্যুর জন্যই বোধহয় আমাদের জন্ম।"
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে কোন মুহূর্তে আসতে পারে। আর জন্য আমাদেরকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করা কোনভাবেই সম্ভব না।
যদি আমরা সচেতনতা অবলম্বন করি এবং পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখি তাহলে দেখা যাবে ক্ষতির পরিমাণটা অনেক কম হবে। আমাদের প্রিয়জনকে আর এভাবে হারাতে হবে না।
|
---|
![]() |
---|
- প্রথমত আমাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে হবে।অল্প অল্প অসুস্থতা একসময় বড় আকার ধারণ করে। এমনকি আমার বন্ধুর মতো অকাল মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই কোন অসুস্থতা বা কি ছোট করে না দেখে প্রাথমিক পর্যায়ে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিবছর আসবে যে কোন সময় এটাই স্বাভাবিক। তাই মোটামুটি আবহাওয়ার বার্তা লক্ষ্য করে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া উচিত। এটা যারা বিশ্বাস করে উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে তাদের জন্য বেশি কার্যকরী।
ঘরের পাশে কোন বড় গাছ থাকাটা এই ঝড়ের মুহূর্তে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে ঘরের পাশে কোন বড় গাছ না রাখাটাই ভালো।
গৃহপালিত পশু এবং যারা বৃদ্ধ রয়েছে বাড়িতে তাদেরকে সবার পূর্বে আপনি নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পৌঁছে দিতে হবে।
এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার অভিযান চালানো যেতে পারে। ঝড়ের ভয়াবহতা মানুষকে উপলব্ধি করাতে হবে ঝালের পূর্বে। মেয়ে মানুষ সচেতনতা অবলম্বন করবে এবং প্রত্যেকে নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করবে।
- আর সব থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কমানোর ফলপ্রসূ কাজ হচ্ছে বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা। বৃক্ষ কম থাকার কারণে পরিবেশের ভারসাম্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। অন্য মাঝেমধ্যেই প্রকৃতি ক্ষিপ্রগতিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
বলতে বলতে অনেক কথা বলে ফেলেছি। আজ আমি আমার লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করব। যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে আমার লেখাটি, আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেন না।
ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক।তবে এমন ঘটনার শিকার হয়তো আরো অনেকেই হয়েছে, যারা ঝড়ের কারণে সময় মতো চিকিৎসা পায়নি বলে,মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। আসলে প্রকৃতি অনেক বেশি শক্তিশালী। তার সাথে লড়াই করার ক্ষমতা সত্যিই আমাদের নেই।
আপনার এই কথাটার সাথে আমিও একদম সহমত পোষণ করি। কিন্তু আমাদের মতন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সকল বাবা-মায়েরা ভাবে, একটু সহ্য করলেই বোধ হয় সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আর সেই কারণে, তাদের শরীর খারাপ হলেও সব সময় সহ্য করার চেষ্টা করো। যার কারণে রোগ কম থাকার সময় চিকিৎসা হয় না, যখন চিকিৎসা করতে যাওয়া হয় তখন ভিতরে ভিতরে বড় আকার ধারণ করে।
এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, যে সকল উপায় আমাদের অবলম্বন করা উচিত, সেগুলোকে সুন্দরভাবে লেখার মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই আমরা পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছি। আমাদেরকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। সেটা যে কোন মুহূর্তেই হবে, হয়তোবা কারো দুই দিন আগে, আবার কারো দুইদিন পরে।
আসলে ঘূর্ণিঝড় আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছুই নিয়ে যায়। আবার কারো জীবন থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই কেড়ে নিয়ে চলে যায়। এটা প্রত্যেক বছরই হয়ে থাকে, প্রত্যেক বছর আমরা এর শিকার হই।
আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো। তবে শেষে যে লেখাটি লিখেছেন ওটা পড়ে অনেকটা হাসি পেল. অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা খারাপ অভ্যাস নয়, এটাই গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমাদের আকাবির, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও লিখক, হযরত আবু তাহের মিসবাহ সাহেব। তিনি বলেন কবিতা আবৃত্তি, প্রবন্ধ বা গুরুত্বপূর্ণ লিখকদের লেখা, সব সময় চেষ্টা করি গভীর রজনীতে। তখন লেখার ক্ষেত্রে মনোযোগ আসে বেশি৷ চারদিকে সবাই থাকবে ঘুমিয়ে, থাকবে না কোন মানুষের মুখের আওয়াজ, থাকবে না কোন কোলাহল। সেই নিস্তব্ধ সময়ে যেন মাথায় আসে অসংখ্য শব্দের ভান্ডার। ফলে লিখেও তৃপ্তি পাওয়া যায়।
আপনার মা বাবা ও ঠাকুরমার এই কথাটা সঠিক বলেছেন। কারন আমাদের সৃষ্টি কর্তার একটা হুকুম আছে, যে যদি কখনো নিজ দেশে বা নিজ এলাকায় কোন মহামারী বা দুর্যোগ আসে তাহলে স্বীয় স্থান থেকে নড়াচড়া না করো৷ কেননা তোমার কপালে যদি ক্ষতি থেকেও থাকে, যেখানেই থাকোনা কেন, ক্ষতি তোমার পিছু ছাড়বে না।
যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে এরকম ঝড়ের কবলে কখনো পরিনি তো তাই হয়তো জানা নেই, এর অভিজ্ঞতা। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রাকৃতিক দূর্যোগগুলোর সাথে তো আর মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তবে এসময়গুলোতে সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
আপনি নিচে যে পয়েন্টগুলো উপস্থাপন করেছেন সেগুলো যদি বাস্তবায়ন হয় তবে এরকম দূর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit