আমার ঈদ প্রস্তুতি

in hive-120823 •  6 months ago 

কেমন আছেন বন্ধুরা? আল্লাহ্‌র অশেষ মেহেরবানীতে আমি সুস্থ্য এবং ভালো আছি। সুস্থ্যতা আল্লাহ্‌ তা’লার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামত পেয়ে আমি অনেক খুশি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে “আমার ঈদ প্রস্তুতি” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-

Brown Watercolor Eid Al-Adha Greetings Facebook Post.jpg
Edit by canva

লেখার শুরুতেই সবাইকে পবিত্র ঈদুল আযহার অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মুবারক।

গত তিনদিন ধরে আমাদের এদিকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা যেহেতু উত্তরাঞ্চলের মানুষ সেহেতু প্রতিবার আমাদের বন্যার মোকাবেলা করতে হয়। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে চারদিক পানিতে তলিয়ে যায়।

আর এই পানি তথা বন্যার সাথে সংগ্রাম করে আমাদের টিকে থাকতে হয়। যাইহোক খুশির সংবাদ হলো এখন পর্যন্ত বন্যার প্রভাব তেমন দেখা যায়নি। নদী বেষ্টিত কিছু এলাকা প্লাবিত হলেও আমরা এখনো সুরক্ষিত আছি।

তবে বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের ফলে বিদ্যুৎ হীন এবং নেটওয়ার্কহীন থাকতে হচ্ছে। আজ বিকেলের দিক মোটামুটি সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে।

আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আযহা। মুসলমান ধর্মালম্বীদের একটি বড় উৎসব। ঈদুল আযহার আরেকটি নাম হলো কুরবানির ঈদ। কুরবানি মানে ত্যাগ।

এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসলমান গণ আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে পশু কুরবানির করে থাকে এবং সাথে সাথে মনের মাঝে মিশে থাকা সকল হিংসা, বিদ্বেষ, পাপ এবং যাবতীয় খারাপ কাজকেও কুরবানি করে থাকে।

কুরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহ্‌ তা’লার নিকট হতে তাকওয়া অর্জন।

যাইহোক কুরবানির এই ঈদকে ঘিরেও আমার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সাময়িক কিছু প্রস্তুতি নিয়েও রেখেছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো কুরবানির জন্য পশু ক্রয় করা। এবার আমরা ভাগে কুরবানি দেয়ার জন্য নিয়ত করেছি।

IMG-20240614-WA0004.jpg

(Image taken from WhatsApp)

অর্থ্যাৎ সাত জন মিলে একটি পশু কুরবানি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত পরশু মুরুব্বিরা সহ আমার এক বড় ভাই গিয়েছিলো স্থানীয় হাটে গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আমাদের বাজেটের সাথে কোন পছন্দশই গরু তাঁরা মেলাতে পারেননি।

গতকাল নাকি একজনের বাসায় গিয়ে একটি গরু দেখে এসেছে এবং গরুটি মুরুব্বিদের বেশ পছন্দ হয়েছে। আমাদের বাজেটের মধ্যে ছিলো গরুটি।

তাই সেখানে গরুর মালিককে কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে গরুটি তাদের বাড়িতেই রেখে এসেছে। যেহেতু বৃষ্টি বাদলের দিন তাই বাড়িতে এনে রাখার মত পরিবেশ সত্যি নেই।

ঈদের দিন সকালে গিয়ে আমরা কয়েকজন মিলে গরুটি নিয়ে আসবো বলে মনস্থির করেছি।

গত দুদিন অফিসের কাজেও বেশ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছিলো। এমনিতেই ঈদ তাই গ্রাহকের চাপ অত্যাধিক ছিলো। সাথে আবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট কাজের পরিমান আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলো। সব মিলিয়ে বেশ প্রেশানিতেই ছিলাম।

যাইহোক এর মাঝেও স্ত্রী আর সন্তানের কথা ভুলিনি। বাবা মাকে পনেরো দিন আগেই টাকা দিয়ে দিয়েছি কেনাকাটার জন্য। বাকি ছিলো স্ত্রী সন্তান।

গত চারদিন আগে আমার স্ত্রী মাকে নিয়ে মার্কেটে গিয়ে আমার এবং তাদের জন্য কেনাকাটা করেছিলো। আমার দায়িত্ব ছিলো শুধু এগুলো দর্জিকে দিয়ে সেলাই করানোর।

20240615_225317.jpg

গতকাল রাতে দর্জি আংকেলের কাছে গিয়ে দেখতে পেলাম আমার সবগুলো কাপড় তিনি কমপ্লিট করে রেখেছেন। আমি দেখে মহা খুশি। নতুন কাপড় সত্যি মন ভালো করে দেয়।

20240615_225713.jpg

সবথেকে ভালো লাগার বিষয়টি ছিলো দর্জি আংকেল আমার ছেলের জন্য একটি ফতুয়া তৈরি করে দিয়েছেন। আমার পাঞ্জাবির কাপড় থেকে যতটুকু কাপড় বেছেছিলো তিনি ঐ কাপড়টুকু দিয়ে দারুন একটি ফতুয়া তৈরি করে দিয়েছেন।

20240615_225847.jpg

এটি দেখে আমি আরো খুশি হয়েছি। যাইহোক এরপর আংকেলকে তাঁর মজুরি বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় এসে স্ত্রীকে সব কাপড় দেখালাম। মীম বাবুর ফতুয়া দেখে সবথেকে বেশি খুশি হয়েছিলো।

কারণ বাপ ছেলে মিলে ঈদের দিন ম্যচিং করে কাপড় পরবো। আমার ছেলের সাথে এবার আমার প্রথম ঈদ। তাই এই ঈদকে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি আমি।

সবথেকে মজার বিষয় হলো আমার ছেলে এবার নয় সেট কাপড় উপহার হিসেবে পেয়েছে। এখন ওর মা বিরাট টেনশনে রয়েছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা ঈদের দিন ছেলেকে পরাবে।

আমি বলেছি নয় সেট জামা সময় অন্তর অন্তর পরাবা যাতে কারোর মন খারাপ না হয়।

আমি এবারে শুধু পাঞ্জাবি আর পায়জামা নিয়েছি। তেমন কিছু কেনাকাটা করিনি। যেহতু বৃষ্টি আর কিছুদিনের মধ্যে বন্যা হওয়ার আশংখা রয়েছে তাই বিশেষ কিছু নেই নি।

20240615_230404.jpg

মীমের জন্য থ্রি-পিছ দুইটি, আর বাবুর জন্য দুই সেট জামা নিয়েছিলাম। বাড়ির জন্য কিছু সদাই আগে থেকেই করে রেখেছি। মশলা জাতীয় পণ্যগুলো আজ থেকে দশ বারো দিন আগেই ক্রয় করে রেখেছি।

কেননা কুরবানির ঈদে মশলার দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। গত শুক্রবার কিছু কাঁচা বাজার, মাছ আর মুরগি কিনেছিলাম। পোলাও এর চাল এখনো কেনা হয়নি, আজ রাতে কিনে নেবো।

যেহেতু বৃষ্টি তাই মাঠে নামাজ আদায়ের কোন ব্যবস্থা নেই তাই মসজিদেই নামাজ আদায় করতে হবে। তাই পরিকল্পনায় কিছুটা ভিন্নতা এনেছি।

বন্ধুরা এই হলো আমার এবারের কুরবানি ঈদের প্রস্তুতি। আল্লাহ্‌ যেন আমার মনের সব আশা পূরণ করেন, আমিন।

আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সকলে। আল্লাহ্‌হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

TEAM 7

Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.

Curated by : @sduttaskitchen

Thank you mam for support me.

Loading...

সাতজন মিলে একটি পশু কোরবানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার পাশাপাশি নতুন পাঞ্জাবি ছেলের জন্য নতুন ফতোয়া বাপ-বেটাই একই রকম পাঞ্জাবি পরে ঈদের মাঠে যাবেন বেশ ভালো লাগলো আপনার কোরবানি ঈদের।প্রস্তুতি আর্টিকেলটা পড়ে।

ঈদ মোবারক। ❣️❣️❣️

উত্তরাঞ্চলের মানুষকে প্রতিবছরই বন্যার সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয় এটা জানি আর এটা
ভেবে আল্লাহকে ধন্যবাদ দেই যে, তিনি আমাদেরকে অনেক ভালো রেখেছেন। সরকার যদি তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়িত করে তাহলে হয়তো আপনারা এই দূর্দশার হাত থেকে মুক্তি পাবেন।

আপনি এবার কোরবানি দিবেন জেনে খুশি হলাম।এবার কোরবানির পশুর দাম অনেক বেশি।
বাচচারা ঈদের অনেক ড্রেস গিফট পায়।আসলে ঈদ ওদেরই।নতুন জামা আসলেই মন ভালো করে দেয়।
ম্যাচিং ড্রেস পরে বাবা -ছেলের প্রথম ঈদ পরিবারের সবার সাথে অনেক অনেক ভালো কাটুক এই দোয়া করি।

ঈদ আপনাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সব থেকে বড় ধর্মানুষ্ঠান। আপনাকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঈদের আনন্দকে মলিন করে দেয় কিন্তু সবাই চায় নিজ নিজ পরিবারের সাথে সুন্দর সময় কাটাতে। বিদ্যুৎ না থাকলে এখন যেন সকল কাজই অচল হয়ে পড়ে। ভালো থাকুন সবাইকে নিয়ে।

কোরবানি মানে ত্যাগ। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কোরবানি দিয়ে থাকেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আপনাদের বাজেটের সাথে মিল রেখে কোরবানির পশু পেয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আল্লাহ আপনার কোরবানি কবুল করুক।আপনার দর্জি কিন্তু দারুণ একটি কাজ করেছে। আপনার পাঞ্জাবির বেঁচে যাওয়া কাপড় দিয়ে আপনার ছেলের জন্য ফতুয়া তৈরি করে দিয়েছে। বাপ বেটা একই কাপড় পড়বেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

আসলে ভাই গরু খোজাখুজির অনেক ঝামেলা।যারা খুজেনাই কখনোই বুঝবেনা এর সম্পর্কে। আপনারা ৭ জন মিলে একটা গরু কুরবানি করবেন।আশা করছি খুব সুন্দরভাবে কুরবানি সম্পন্ন করতে পারবেন।আপনি বাসার মানুষের জন্য বেশ কিছু পোশাক আশাক কিনেছেন।বিশেষ করে মিমের জন্য 2 টা থ্রি পিচ।ধন্যবাদ জানাই আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।

ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য আগে থেকেই সবকিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। সত্যি কথা বলতে বাপ বেটা ম্যাচিং করে জামা পড়ে ঈদে যাবেন। সেটা সত্যিই অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং আপনার স্ত্রী খুশি হয়েছে কতটা আমি জানিনা। তবে আমার বেশ ভালই লেগেছে। মোটামুটি নিজের স্ত্রীর জন্য জামা কাপড় নিয়ে এসেছেন। এবং গরু আগের দিন নিয়ে আসার একটা প্ল্যান করেছেন। ধন্যবাদ ঈদের আগের দিনের মুহূর্ত আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।