নিজের স্বামীর মোবাইলে এমন মেসেজ গুলো দেখে চোখ জোড়া বড় হয়ে গেল সায়মার। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। একের পর এক মেসেজ দেখার পর তার চোখের কোনে নিজের অজান্তেই পানি চলে আসলো। মনে হচ্ছে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু সে কিছুই বলতে পারছে না। তার মনে হচ্ছে তার স্বামীর প্রতি তার এতদিনের ভালবাসা এক মিনিটে কাছের মত ভেঙ্গে গেল নি মিশেই।
হঠাৎ করেই সে দরজা বন্ধ করার শব্দ শুনতে পেল। সে দেখল তার স্বামী দরজা বন্ধ করে রুমের দিকে এগিয়ে আসছে। তার মনে অনেকটা ভয় হল তাড়াতাড়ি করে মোবাইলটা বিছানার মধ্যে রেখে দিল, কারণ সে চায় না তার স্বামী যেন বুঝতে না পারে তার স্বামীর এসব বিষয়ে তার সবকিছু জানা আছে। সে এমন ভাব করলো মনে হয় সে কিছুই জানে না, চুপচাপ শান্ত মেজাজ নিয়ে বিছানায় গোছাতে লাগলো।
বিয়ের পর থেকে সায়মার স্বামী সব সময় ফ্রেশ হয়ে এসে পেছন থেকে সায়মা কে জড়িয়ে ধরত, কিন্তু সময়ের সাথে সবকিছুই বদলে গেছে, বদলে গেছে ভালোবাসা। চুপ করে বিছানার জাড় দিচ্ছিল। আর দেখো তার স্বামী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে, তার গাঁয়ে কোন শার্ট নেই। উন্মুক্ত শরীর সায়মার সামনে, হঠাৎ করেই তার সে প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে গেল।
আয়ান একদিন তার দলবল নিয়ে সায়মাদের বাড়ির সামনে এসে, অনেক জোরে সায়মার নাম ধরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো। সায়মা ব্যালকনিতে গিয়ে দেখতে পেল কোন একটা অচেনা ছেলে তার নাম ধরে চিৎকার চেঁচামেচি করছে। এটা দেখে সে অনেক বেশি অবাক হয়ে গেল। তাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো আপনি এত চেঁচামেচি করছেন কেন।
তখন আয়ান বলল আপনি একটু সায়মা কে ডেকে দিন।সে অনেক বেশি অবাক হয়ে গেল সে নিজেই তো সায়মা আবার সায়মার কে কোত্থেকে ডাকবে। এরপর আয়ান চেঁচিয়ে বলল আপনাকে বললাম সায়মা কে ডেকে দিতে। তখন সায়মা রেগে গিয়ে বলল আমি এই কলোনিতে আমি এক মাএ ব্যক্তি যার নাম সায়মা বলুন কি বলতে হবে। তখন আয়ান অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেল, কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। তার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কি যেন বলতে লাগলো।
এরপর সে সায়মা কে বলল সরি একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে। যার কারণে এই সমস্যাটা হয়েছে এটা বলেই সে তার বন্ধুদেরকে নিয়ে ওখান থেকে পালিয়ে গেল। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার তার সাথে সায়মার দেখা হয়েছে, কিন্তু যতবারই দেখা হয়েছে ততবার আর নিজের মুখ লুকিয়ে নিয়েছে। ওই কথাগুলো মনে করে সায়মা নিজের অতীতে হারিয়ে গেল। এরপরে তার মুখের মধ্যে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো।
ঘরের যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করে সে যখন বাহিরে যাবে, হঠাৎ করেই তার চোখ আয়ান এর উন্মুক্ত পিঠের উপর পড়ল এবং সে দেখল তার পিঠের মধ্যে একটা দাগ দেখা যাচ্ছে। সায়মা বুঝতে পারল না এটা কিসের দাগ। তাই একটু এগিয়ে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল এখানে কি হয়েছে এটা কিসের দাগ।
আয়ান অনেকটা বিরক্ত কন্ঠে বলল কোথায় কি হয়েছে? হয়তোবা কোথাও লেগে গেছে তাই এমনটা হয়েছে।
সায়মা তখন বলল এমনটা তো মনে হচ্ছে না! মনে হচ্ছে কেউ অনেকটা আলতো করে তোমার পিঠে এই দাগ টা দিয়েছে।
আয়ান অনেকটা রেগে গেল সায়মা কে বলল আমার প্রত্যেকটা কাজের হিসাব আমি তোমাকে কেন দিব। তোমার কাছে হিসাব দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি আর কখনো আমার সাথে এমন করবে না।
সালমা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল আয়ান আমি তোমার কাছে অসহ্য কর একটা মানুষ হয়ে গেছে তাই না। অনেকদিন ধরেই দেখছি তুমি রাতে অনেকটা লেট করে বাড়ি ফেরো। বেশ কয়েকদিন যাবত তো তুমি বেপাত্তা হয়ে গেছো। তোমার কোন খোঁজ পাইনি, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করি। রাতের পর রাত বসে থাকি এটা তোমার কাছে অসহ্য মনে হয়।
গল্পটা কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। যদি আপনাদের কাছে ভালো লাগে তাহলেই পরবর্তী পর্ব লিখব। সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
একটি মানুষ বিশ্বাস অর্জন করতে পারে কিন্তু অনেক সময় লেগে যায়। কিন্তু সেই বিশ্বাস ভাঙতে সময় লাগে না এক মিনিটও। যেকোনো সম্পর্কের মধ্যেও বিশ্বাস না থাকলে কোন কিছু হয় না। এবং সততা না থাকলে হয় না। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস এবং সততা খুবই প্রয়োজন আছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্য যে ভালোবাসা থাকে সেই ভালোবাসা যদি কিছুদিন পরে পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে সংসারেও অশান্তি চলে আসে। এবং একটি মেয়ে কখনো তার নিজের স্বামীর মোবাইলে অন্য মেয়ের এসএমএস সহ্য করতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। আপনার লেখা গল্পটি পড়তে পড়তে অনেক কিছু বুঝতে পারলাম এবং এখান থেকে গল্পের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম যাই হোক সুন্দর লেখা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit